০৮:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ২২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘অ্যাটাচমেন্টের নামে জনসেবা বঞ্চিত হচ্ছে জেলা-উপজেলা হাসপাতাল’

  • এডমিন
  • আপডেট সময়ঃ ০৬:০৫:৪৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫
  • 6

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডি) এস এ এ সাফি ফেসবুকের এক পোস্টে ‘অ্যাটাচমেন্ট ও ডেপুটেশন’ প্রথাকে স্বাস্থ্যসেবার জন্য বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, যেখানে থাকার ইচ্ছা নেই, সেখানে পদ ধরে রেখে অন্যত্র অ্যাটাচমেন্টে থেকে বেতনভাতা নেওয়া জনগণের সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সাফি তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, কোভিড মহামারিকালে জরুরি প্রয়োজনের তাগিদে ৪৭০ জন এনেসথেসিস্টকে নিয়ম ভেঙে সরাসরি ৬ষ্ঠ গ্রেডে জুনিয়র কনসালটেন্ট করা হয়েছিল। অথচ সম্প্রতি ৬০০-রও বেশি স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ চিকিৎসক সহকারী অধ্যাপক হিসেবে প্রমোশন পেলেও এখনও অধিকাংশ জেলা সদর হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা মাতৃত্বসেবা চালু করা যায়নি।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, দেশে এত গাইনি বিশেষজ্ঞ থাকা সত্ত্বেও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে সেবা চালু হচ্ছে না কেন?

তার পর্যবেক্ষণ মতে, বেশিরভাগ নারী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরিবারের সদস্য বা আত্মীয়স্বজন প্রভাবশালী হওয়ায় তারা রাজধানী বা বিভাগীয় শহরে থাকতে আগ্রহী এবং ‘এটাচমেন্ট’ বা ‘ডেপুটেশন’-এর মাধ্যমে তারা সেখানে থেকেই সেবা দেন।

সাফি আরও লেখেন, যখন একজন বিশেষজ্ঞ বরুড়া উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সে পদায়িত হয়ে এটাচমেন্টে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে যান, তখন বরুড়াবাসী তাদের প্রাপ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হন। কিন্তু ওই চিকিৎসক বেতনভাতা নেন বরুড়ার পদ থেকেই।

তিনি এটিকে মানবিকতা ও সুবিবেচনার পরিপন্থী আখ্যা দিয়ে বলেন, যেখানে পোস্টিং নিতে চান, সেখানে পদ নিয়েই যান। এতে জনসেবার অর্থ অপচয় হবে না, বরং জবাবদিহিতা বাড়বে।

স্বাস্থ্যখাতের ভেতরের বাস্তবতা তুলে ধরে তিনি বলেন, এনেসথেসিস্টদের সংখ্যা তুলনামূলক কম হলেও তারা জেলা পর্যায়ে অন্তত অবস্থান করেন। কিন্তু উপজেলাগুলোর ওটিতে (অপারেশন থিয়েটার) কাঠামোগত ঘাটতি থাকায় কার্যক্রম সীমিত থাকে।

পোস্টের শেষে সদ্য পদোন্নতি পাওয়া সহকারী ও সহযোগী অধ্যাপকদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি লেখেন, আমি চিকিৎসক হয়ে চিকিৎসকবিরোধী নই। আমি শুধু চাই, রাষ্ট্রের ব্যয়ে শিক্ষিত এই মেধাবী জনগোষ্ঠী যেন দরিদ্র জনগণের প্রতি নিজের দায়িত্ববোধকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়।

তার এই মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমে স্বাস্থ্যখাতের অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক বাস্তবতা নিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

এসইউজে/এমআইএইচএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।

ট্যাগঃ

‘অ্যাটাচমেন্টের নামে জনসেবা বঞ্চিত হচ্ছে জেলা-উপজেলা হাসপাতাল’

আপডেট সময়ঃ ০৬:০৫:৪৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডি) এস এ এ সাফি ফেসবুকের এক পোস্টে ‘অ্যাটাচমেন্ট ও ডেপুটেশন’ প্রথাকে স্বাস্থ্যসেবার জন্য বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, যেখানে থাকার ইচ্ছা নেই, সেখানে পদ ধরে রেখে অন্যত্র অ্যাটাচমেন্টে থেকে বেতনভাতা নেওয়া জনগণের সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সাফি তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, কোভিড মহামারিকালে জরুরি প্রয়োজনের তাগিদে ৪৭০ জন এনেসথেসিস্টকে নিয়ম ভেঙে সরাসরি ৬ষ্ঠ গ্রেডে জুনিয়র কনসালটেন্ট করা হয়েছিল। অথচ সম্প্রতি ৬০০-রও বেশি স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ চিকিৎসক সহকারী অধ্যাপক হিসেবে প্রমোশন পেলেও এখনও অধিকাংশ জেলা সদর হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা মাতৃত্বসেবা চালু করা যায়নি।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, দেশে এত গাইনি বিশেষজ্ঞ থাকা সত্ত্বেও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে সেবা চালু হচ্ছে না কেন?

তার পর্যবেক্ষণ মতে, বেশিরভাগ নারী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরিবারের সদস্য বা আত্মীয়স্বজন প্রভাবশালী হওয়ায় তারা রাজধানী বা বিভাগীয় শহরে থাকতে আগ্রহী এবং ‘এটাচমেন্ট’ বা ‘ডেপুটেশন’-এর মাধ্যমে তারা সেখানে থেকেই সেবা দেন।

সাফি আরও লেখেন, যখন একজন বিশেষজ্ঞ বরুড়া উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সে পদায়িত হয়ে এটাচমেন্টে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে যান, তখন বরুড়াবাসী তাদের প্রাপ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হন। কিন্তু ওই চিকিৎসক বেতনভাতা নেন বরুড়ার পদ থেকেই।

তিনি এটিকে মানবিকতা ও সুবিবেচনার পরিপন্থী আখ্যা দিয়ে বলেন, যেখানে পোস্টিং নিতে চান, সেখানে পদ নিয়েই যান। এতে জনসেবার অর্থ অপচয় হবে না, বরং জবাবদিহিতা বাড়বে।

স্বাস্থ্যখাতের ভেতরের বাস্তবতা তুলে ধরে তিনি বলেন, এনেসথেসিস্টদের সংখ্যা তুলনামূলক কম হলেও তারা জেলা পর্যায়ে অন্তত অবস্থান করেন। কিন্তু উপজেলাগুলোর ওটিতে (অপারেশন থিয়েটার) কাঠামোগত ঘাটতি থাকায় কার্যক্রম সীমিত থাকে।

পোস্টের শেষে সদ্য পদোন্নতি পাওয়া সহকারী ও সহযোগী অধ্যাপকদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি লেখেন, আমি চিকিৎসক হয়ে চিকিৎসকবিরোধী নই। আমি শুধু চাই, রাষ্ট্রের ব্যয়ে শিক্ষিত এই মেধাবী জনগোষ্ঠী যেন দরিদ্র জনগণের প্রতি নিজের দায়িত্ববোধকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়।

তার এই মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমে স্বাস্থ্যখাতের অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক বাস্তবতা নিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

এসইউজে/এমআইএইচএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।