০৫:২৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুমারখালীতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আ’লীগ-বিএনপির সংঘর্ষ

  • এডমিন
  • আপডেট সময়ঃ ১২:০৩:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫
  • 2

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে দুজন আহত হয়েছেন। এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার কয়া ইউনিয়নের কালোয়া বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে বিএনপির দুই কর্মী আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আহতরা হলেন, কয়ার কালোয়া গ্রামের জয়নাব শেখের ছেলে জিয়ার শেখ (৫০) ও মৃত আছাই শেখের ছেলে বিপুল শেখ (৩০)। তাদের মুখে ও মাথায় একাধিক সেলাই দিয়েছেন চিকিৎসক। তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কালোয়া বাজারে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জমারত সরদার ওরফে এগলা গ্রুপের সঙ্গে ও ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রাশিদুল ইসলাম মেম্বার গ্রুপের বিরোধ চলছিল। শনিবার সকালে বিএনপি নেতা রাশিদুল গ্রুপের লোকজন কালোয়া বাজারে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এতে বিএনপির দুই কর্মী আহত হন।

দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পুরুষ ওয়ার্ডের ৩ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন আহত জিয়ার ও বিপুল। তাদের মুখে ও মাথায় ব্যান্ডেস বাঁধা।

এ সময় বিপুল শেখ বলেন, মাসখানেক হলো আওয়ামী লীগ নেতা জমারত আমাদের কালোয়া বাজারে যেতে দিচ্ছে না। শুক্রবার কালোয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে আমাদের ছেলেরা খেলা করছিল। সেসময় জমারত হুমকি দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।

শনিবার সকালে আমরা বাজারের পরিস্থিতি দেখতে গেলে জমারতের নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন ইটপাটকেল মারা শুরু করে। এতে আমরা দুজন আহত হয়েছি।

আহত জিয়ার বলেন, আমরা বিএনপি করি বলে আওয়ামী লীগের লোকজন হামলা ও ভাঙচুর করেছে। থানায় মামলা করব।

বিকেলে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে কালোয়া গ্রামজুড়ে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বেশকিছু ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে ভাঙচুরের ক্ষত।

এ সময় অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ নেতা জমারত সরদার বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি করলেও বর্তমানে বিএনপি নেতা বকুল মেম্বারের সঙ্গে আছি। সকালে আরেক বিএনপি নেতা রাশিদুল মেম্বর গুলি করতে করতে তার লোকজন নিয়ে এলাকায় ঢুকে বেশ কিছু বাড়িতে ভাঙচুর এবং গরু, ছাগল ও স্বর্ণালংকার লুটপাট করেছে।

অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপি নেতা রাশিদুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা জমারত সরদার বিএনপির একাংশের সঙ্গে মিশে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। কয়েক মাস ধরে মাঝেমধ্যে এমন ঘটনা ঘটাচ্ছে। থানায় এর আগেও মামলা করা হয়েছে। আবারও মামলা করব।

থানার উপ-পরিদর্শক প্রকাশ চন্দ্র বলেন, পূর্বশত্রুতার জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন। কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে দুটা গরু উদ্ধার করে প্রকৃত মালিককে ফেরত দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার জিয়াউর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে দুই পক্ষের বিরোধ চলে আসছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আল-মামুন সাগর/আরএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।

ট্যাগঃ

শত কোটি টাকার সম্পত্তি আত্মসাতে জড়িত থাকার অভিযোগে ২ ব্যক্তি আটক

কুমারখালীতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আ’লীগ-বিএনপির সংঘর্ষ

আপডেট সময়ঃ ১২:০৩:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে দুজন আহত হয়েছেন। এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার কয়া ইউনিয়নের কালোয়া বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে বিএনপির দুই কর্মী আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আহতরা হলেন, কয়ার কালোয়া গ্রামের জয়নাব শেখের ছেলে জিয়ার শেখ (৫০) ও মৃত আছাই শেখের ছেলে বিপুল শেখ (৩০)। তাদের মুখে ও মাথায় একাধিক সেলাই দিয়েছেন চিকিৎসক। তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কালোয়া বাজারে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জমারত সরদার ওরফে এগলা গ্রুপের সঙ্গে ও ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রাশিদুল ইসলাম মেম্বার গ্রুপের বিরোধ চলছিল। শনিবার সকালে বিএনপি নেতা রাশিদুল গ্রুপের লোকজন কালোয়া বাজারে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এতে বিএনপির দুই কর্মী আহত হন।

দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পুরুষ ওয়ার্ডের ৩ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন আহত জিয়ার ও বিপুল। তাদের মুখে ও মাথায় ব্যান্ডেস বাঁধা।

এ সময় বিপুল শেখ বলেন, মাসখানেক হলো আওয়ামী লীগ নেতা জমারত আমাদের কালোয়া বাজারে যেতে দিচ্ছে না। শুক্রবার কালোয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে আমাদের ছেলেরা খেলা করছিল। সেসময় জমারত হুমকি দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।

শনিবার সকালে আমরা বাজারের পরিস্থিতি দেখতে গেলে জমারতের নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন ইটপাটকেল মারা শুরু করে। এতে আমরা দুজন আহত হয়েছি।

আহত জিয়ার বলেন, আমরা বিএনপি করি বলে আওয়ামী লীগের লোকজন হামলা ও ভাঙচুর করেছে। থানায় মামলা করব।

বিকেলে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে কালোয়া গ্রামজুড়ে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বেশকিছু ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে ভাঙচুরের ক্ষত।

এ সময় অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ নেতা জমারত সরদার বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি করলেও বর্তমানে বিএনপি নেতা বকুল মেম্বারের সঙ্গে আছি। সকালে আরেক বিএনপি নেতা রাশিদুল মেম্বর গুলি করতে করতে তার লোকজন নিয়ে এলাকায় ঢুকে বেশ কিছু বাড়িতে ভাঙচুর এবং গরু, ছাগল ও স্বর্ণালংকার লুটপাট করেছে।

অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপি নেতা রাশিদুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা জমারত সরদার বিএনপির একাংশের সঙ্গে মিশে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। কয়েক মাস ধরে মাঝেমধ্যে এমন ঘটনা ঘটাচ্ছে। থানায় এর আগেও মামলা করা হয়েছে। আবারও মামলা করব।

থানার উপ-পরিদর্শক প্রকাশ চন্দ্র বলেন, পূর্বশত্রুতার জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন। কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে দুটা গরু উদ্ধার করে প্রকৃত মালিককে ফেরত দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার জিয়াউর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে দুই পক্ষের বিরোধ চলে আসছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আল-মামুন সাগর/আরএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।