১২:১২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাইবান্ধায় ব্যবসায়ীর ঘর থেকে ১৩৩ বস্তা টিএসপি সার উদ্ধার

  • এডমিন
  • আপডেট সময়ঃ ০৬:২০:৩৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫
  • 2

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বাদশা মিয়া (৫৫) নামে এক খুচরা সার ব্যবসায়ীর ঘর থেকে ১৩৩ বস্তা টিএসপি সার উদ্ধার করেছে উপজেলা প্রশাসন।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকালে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাশিদুল কবির বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।

সোমবার (২৮ জুলাই) রাতে উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের পাশের পিনুর মোড় এলাকা থেকে এসব সার জব্দ করা হয়। বাদশা মিয়া ওই ইউনিয়নের হুড়াভায়াখাঁ গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জসিম উদ্দিন অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাশিদুল কবির, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ও সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশের সদস্যরা সঙ্গে ছিলেন।

প্রশাসনের দেওয়া তথ্য মতে, বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি এবং অধিক দামে বিক্রির উদ্দেশ্যে বাদশা মিয়ার দোকানে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ টিএসপি সার মজুত করা হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে সেগুলো জব্দ করেন। জানা যায়, উদ্ধার হওয়া সারগুলো বিসিআইসি ডিলার ননি গোপাল সরকার ও মৃত প্রদীপ সরকারের জন্য বরাদ্দকৃত। তারা এসব সার বাদশা মিয়ার দোকানে অবৈধভাবে বিক্রির উদ্দেশ্যে মজুত করেন।

গাইবান্ধায় ব্যবসায়ীর ঘর থেকে ১৩৩ বস্তা টিএসপি সার উদ্ধার

স্থানীয় একাধিক সূত্রের দাবি, সারগুলো পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মজুত করা হয়েছিল ও তা কালোবাজারে বিক্রি করার জন্যই রাখা হয়েছিল। তারা অভিযোগ করেন, ডিলার ননি গোপাল ও প্রদীপ কুমার দীর্ঘদিন ধরে সরকারি বরাদ্দের সার নির্ধারিত গোডাউনে না রেখে বিভিন্ন খুচরা বিক্রেতার মাধ্যমে গোপনে বাজারজাত করে আসছেন। এতে উপজেলা কৃষি অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সহযোগিতাও রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

গাইবান্ধা জেলা বাফার ইনচার্জ মো. হারুনুর রশিদ বলেন, উদ্ধার হওয়া সারগুলো ডিলার ননি গোপাল সরকার উত্তোলন করেন। সার পরিবহনকারী ট্রাকের নম্বর ছিল ঢাকা মেট্রো-ন ১৯-৫৯৮৫।

ডিলার ননি গোপালের ছেলে রিপন এ বিষয়ে বলেন, প্রদীপ চন্দ্রের বরাদ্দকৃত সার আমি তার ম্যানেজার জয়ন্ত বাবুকে বুঝিয়ে দিয়েছি। বাদশা মিয়ার ঘরে কীভাবে গেল, তা জয়ন্ত বাবুই ভালো বলতে পারবেন।

মৃত প্রদীপ সরকারের ম্যানেজার জয়ন্ত বাবু বলেন, সারগুলো বিক্রি করা হয়নি। গোডাউনে জায়গার অভাবে পাশের ইউনিয়নের খুচরা ব্যবসায়ী বাদশা মিয়ার ঘরে সাময়িকভাবে রাখা হয়েছিল।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাশিদুল কবির বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে আমি ঘটনাস্থলে যাই এবং সারগুলো জব্দ করি। বর্তমানে সারগুলো আমার জিম্মায় রয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৩৩ বস্তা টিএসপি সার উদ্ধার করি। তবে ঘরটি তালাবদ্ধ থাকায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। জব্দকৃত সার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার জিম্মায় রাখা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, সারগুলো বিসিআইসি ডিলার ননি গোপাল ও প্রদীপ সরকারের বরাদ্দকৃত। তাদের গোডাউন সোনারায় ইউনিয়নের ছাইতানতোলা বাজার ও রামজীবন ইউনিয়নের ডোমের হাট বাজারে অবস্থিত। দহবন্দে এই সার কীভাবে এলো, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আনোয়ার আল শামীম/এমএন/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।

ট্যাগঃ

গাইবান্ধায় ব্যবসায়ীর ঘর থেকে ১৩৩ বস্তা টিএসপি সার উদ্ধার

আপডেট সময়ঃ ০৬:২০:৩৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বাদশা মিয়া (৫৫) নামে এক খুচরা সার ব্যবসায়ীর ঘর থেকে ১৩৩ বস্তা টিএসপি সার উদ্ধার করেছে উপজেলা প্রশাসন।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকালে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাশিদুল কবির বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।

সোমবার (২৮ জুলাই) রাতে উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের পাশের পিনুর মোড় এলাকা থেকে এসব সার জব্দ করা হয়। বাদশা মিয়া ওই ইউনিয়নের হুড়াভায়াখাঁ গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জসিম উদ্দিন অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাশিদুল কবির, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ও সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশের সদস্যরা সঙ্গে ছিলেন।

প্রশাসনের দেওয়া তথ্য মতে, বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি এবং অধিক দামে বিক্রির উদ্দেশ্যে বাদশা মিয়ার দোকানে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ টিএসপি সার মজুত করা হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে সেগুলো জব্দ করেন। জানা যায়, উদ্ধার হওয়া সারগুলো বিসিআইসি ডিলার ননি গোপাল সরকার ও মৃত প্রদীপ সরকারের জন্য বরাদ্দকৃত। তারা এসব সার বাদশা মিয়ার দোকানে অবৈধভাবে বিক্রির উদ্দেশ্যে মজুত করেন।

গাইবান্ধায় ব্যবসায়ীর ঘর থেকে ১৩৩ বস্তা টিএসপি সার উদ্ধার

স্থানীয় একাধিক সূত্রের দাবি, সারগুলো পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মজুত করা হয়েছিল ও তা কালোবাজারে বিক্রি করার জন্যই রাখা হয়েছিল। তারা অভিযোগ করেন, ডিলার ননি গোপাল ও প্রদীপ কুমার দীর্ঘদিন ধরে সরকারি বরাদ্দের সার নির্ধারিত গোডাউনে না রেখে বিভিন্ন খুচরা বিক্রেতার মাধ্যমে গোপনে বাজারজাত করে আসছেন। এতে উপজেলা কৃষি অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সহযোগিতাও রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

গাইবান্ধা জেলা বাফার ইনচার্জ মো. হারুনুর রশিদ বলেন, উদ্ধার হওয়া সারগুলো ডিলার ননি গোপাল সরকার উত্তোলন করেন। সার পরিবহনকারী ট্রাকের নম্বর ছিল ঢাকা মেট্রো-ন ১৯-৫৯৮৫।

ডিলার ননি গোপালের ছেলে রিপন এ বিষয়ে বলেন, প্রদীপ চন্দ্রের বরাদ্দকৃত সার আমি তার ম্যানেজার জয়ন্ত বাবুকে বুঝিয়ে দিয়েছি। বাদশা মিয়ার ঘরে কীভাবে গেল, তা জয়ন্ত বাবুই ভালো বলতে পারবেন।

মৃত প্রদীপ সরকারের ম্যানেজার জয়ন্ত বাবু বলেন, সারগুলো বিক্রি করা হয়নি। গোডাউনে জায়গার অভাবে পাশের ইউনিয়নের খুচরা ব্যবসায়ী বাদশা মিয়ার ঘরে সাময়িকভাবে রাখা হয়েছিল।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাশিদুল কবির বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে আমি ঘটনাস্থলে যাই এবং সারগুলো জব্দ করি। বর্তমানে সারগুলো আমার জিম্মায় রয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৩৩ বস্তা টিএসপি সার উদ্ধার করি। তবে ঘরটি তালাবদ্ধ থাকায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। জব্দকৃত সার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার জিম্মায় রাখা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, সারগুলো বিসিআইসি ডিলার ননি গোপাল ও প্রদীপ সরকারের বরাদ্দকৃত। তাদের গোডাউন সোনারায় ইউনিয়নের ছাইতানতোলা বাজার ও রামজীবন ইউনিয়নের ডোমের হাট বাজারে অবস্থিত। দহবন্দে এই সার কীভাবে এলো, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আনোয়ার আল শামীম/এমএন/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।