০৩:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ২২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গুচ্ছগ্রামে বেশির ঘরেরই নেই অস্তিত্ব, সন্ধ্যায় বসে মাদকের আসর

  • এডমিন
  • আপডেট সময়ঃ ১২:০৭:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
  • 10

ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষের মাথা গোঁজার জন্য গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নের চন্ডিপুরের গুচ্ছগ্রামে ১১০ ঘর নির্মাণ করেছিল বিগত সরকার। বর্তমানে সেখানে বেশির ভাগ ঘরের কোনো অস্তিত্ব নেই। এছাড়া সন্ধ্যা হলেই বসে মাদকের আসর।

সম্প্রতি সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, চন্ডিপুর গ্রামে ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষের মাথা গোঁজার জন্য গুচ্ছগ্রামের যে ১১০টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছিল তার মধ্যে ৭৬টিতে রয়েছে শুধু খুঁটি। যেসব ব্যক্তির নামে বরাদ্দ হয়েছিল, তাদের কেউই থাকে না এখানে। বাকি ঘরগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি দীর্ঘদিন ধরে তালাবদ্ধ। ফলে সেখানে আখড়া গেড়েছেন মাদকসেবীরা। এছাড়া রাত নামলেই এসব ঘরে বসে জুয়ার আসর।

বিনামূল্যে এসব ঘর উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের। ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে করতোয়া নদীর বালু চরে এসব ঘর নির্মাণ করা হয়। এতে ১১০টি ঘর এবং বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য ৩১টি টিউবয়েল স্থাপন করা হয়। যার মূল লক্ষ্য ছিল ভূমিহীন ও গৃহহীন দরিদ্র জনগোষ্টির মধ্যে সরকারি খাস জমি বিতরণ এবং তাদের উৎপাদনমুখী কর্মকাণ্ডে সহায়তা করা। এ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে প্রশিক্ষণ ও স্বল্প মুনাফায় ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই করেননি উপজেলা প্রশাসন।

স্থানীয় কামাল হোসেন বলেন, গুচ্ছগ্রামের এই ঘর গুলোর নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। কেউ এখানে থাকে না। রাতে সন্ত্রাসী, মাদকসেবী, জুয়াড়িরা নিয়মিত আসা-যাওয়া করে। নানা লোকের সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা এখানে বসে অপকর্মের ছক আঁকেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, কিছু ঘর খালি রয়েছে দীর্ঘদিন। গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পে অধিকাংশ ঘরেই প্রকৃত মালিকরা থাকেন না। দিনে তালা থাকে। সন্ধ্যা নামলেই এখানে মাদকসেবীদের আনাগনা দেখা যায়। তাদের কারণে এলাকায় ছিনতাই বাড়ছে। এছাড়া রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের আসা-যাওয়া করায় কেউ প্রতিবাদের সাহসও পান না।

গোবিন্দগঞ্জ নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক এমএ মতিন মোল্লার বলেন, ঘর দেওয়ার আগে যাচাই-বাছাই করা হয়নি। প্রকৃত ভূমিহীনদের না দিয়ে প্রভাবশালীদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আবার দলীয় নেতাকর্মীদের কাছের লোক বা স্বজনরাও পেয়েছেন।

গোবিন্দগঞ্জ সহকারি কমিশনার (ভূমি) তামশিদ ইরান খান বলেন, শুনেছি গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের ঘরে অনেকেই থাকেন না। আবার অনেক ঘরে তালা ঝোলানো। সরেজমিনে যেসব ঘরে তালা ঝুলতে দেখা যাবে সেসব ঘরের বরাদ্দ বাতিল করা হবে।

আনোয়ার আল শামীম/এএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।

ট্যাগঃ

গুচ্ছগ্রামে বেশির ঘরেরই নেই অস্তিত্ব, সন্ধ্যায় বসে মাদকের আসর

আপডেট সময়ঃ ১২:০৭:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫

ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষের মাথা গোঁজার জন্য গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নের চন্ডিপুরের গুচ্ছগ্রামে ১১০ ঘর নির্মাণ করেছিল বিগত সরকার। বর্তমানে সেখানে বেশির ভাগ ঘরের কোনো অস্তিত্ব নেই। এছাড়া সন্ধ্যা হলেই বসে মাদকের আসর।

সম্প্রতি সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, চন্ডিপুর গ্রামে ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষের মাথা গোঁজার জন্য গুচ্ছগ্রামের যে ১১০টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছিল তার মধ্যে ৭৬টিতে রয়েছে শুধু খুঁটি। যেসব ব্যক্তির নামে বরাদ্দ হয়েছিল, তাদের কেউই থাকে না এখানে। বাকি ঘরগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি দীর্ঘদিন ধরে তালাবদ্ধ। ফলে সেখানে আখড়া গেড়েছেন মাদকসেবীরা। এছাড়া রাত নামলেই এসব ঘরে বসে জুয়ার আসর।

বিনামূল্যে এসব ঘর উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের। ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে করতোয়া নদীর বালু চরে এসব ঘর নির্মাণ করা হয়। এতে ১১০টি ঘর এবং বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য ৩১টি টিউবয়েল স্থাপন করা হয়। যার মূল লক্ষ্য ছিল ভূমিহীন ও গৃহহীন দরিদ্র জনগোষ্টির মধ্যে সরকারি খাস জমি বিতরণ এবং তাদের উৎপাদনমুখী কর্মকাণ্ডে সহায়তা করা। এ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে প্রশিক্ষণ ও স্বল্প মুনাফায় ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই করেননি উপজেলা প্রশাসন।

স্থানীয় কামাল হোসেন বলেন, গুচ্ছগ্রামের এই ঘর গুলোর নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। কেউ এখানে থাকে না। রাতে সন্ত্রাসী, মাদকসেবী, জুয়াড়িরা নিয়মিত আসা-যাওয়া করে। নানা লোকের সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা এখানে বসে অপকর্মের ছক আঁকেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, কিছু ঘর খালি রয়েছে দীর্ঘদিন। গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পে অধিকাংশ ঘরেই প্রকৃত মালিকরা থাকেন না। দিনে তালা থাকে। সন্ধ্যা নামলেই এখানে মাদকসেবীদের আনাগনা দেখা যায়। তাদের কারণে এলাকায় ছিনতাই বাড়ছে। এছাড়া রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের আসা-যাওয়া করায় কেউ প্রতিবাদের সাহসও পান না।

গোবিন্দগঞ্জ নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক এমএ মতিন মোল্লার বলেন, ঘর দেওয়ার আগে যাচাই-বাছাই করা হয়নি। প্রকৃত ভূমিহীনদের না দিয়ে প্রভাবশালীদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আবার দলীয় নেতাকর্মীদের কাছের লোক বা স্বজনরাও পেয়েছেন।

গোবিন্দগঞ্জ সহকারি কমিশনার (ভূমি) তামশিদ ইরান খান বলেন, শুনেছি গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের ঘরে অনেকেই থাকেন না। আবার অনেক ঘরে তালা ঝোলানো। সরেজমিনে যেসব ঘরে তালা ঝুলতে দেখা যাবে সেসব ঘরের বরাদ্দ বাতিল করা হবে।

আনোয়ার আল শামীম/এএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।