০২:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঘর ভেঙে চাপা পড়ার শঙ্কায় ঘুম আসে না বৃদ্ধা সাফিয়ার

  • এডমিন
  • আপডেট সময়ঃ ০৬:০১:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫
  • 1

জরাজীর্ণ-নড়বড়ে টিনের ঘর মাথায় ভেঙে পড়তে পারে যেকোনো সময়। রোদ-বৃষ্টিতে পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ। এভাবেই দিন কাটছে স্বামীহারা বৃদ্ধা সাফিয়া খাতুনের (৬৫)। অসুস্থ সন্তান নিয়ে দুঃখের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছেন তিনি।

কুমিল্লার মুরাদনগরের নবীপুর পূর্ব ইউনিয়নের বাখরনগর গ্রামের বিধবা বৃদ্ধা সাফিয়া খাতুনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় এ চিত্র।

জানা যায়, ২০ বছর আগে স্বামী হারিয়েছেন সাফিয়া খাতুন। এর পর থেকে দুই ছেলে ও তিন মেয়েকে নিয়ে শুরু হয় তার জীবন সংগ্রাম। এরই মধ্যে দুরারোগ্য রোগে মারা যান বড় ছেলে। ছোট ছেলেটিও দুই বার স্ট্রোক করে বর্তমানে শয্যাশায়ী। তিনি পরিবার নিয়ে থাকেন চট্টগ্রামে। তিন মেয়েকে বিয়ে দিলেও ছোট মেয়েকে ফেলে তার স্বামী চলে গেছে। বর্তমানে ছোট মেয়েকে নিয়ে জরার্জীণ ঘরে দুঃখের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছেন সাফিয়া খাতুন।

সরেজমিন দেখা যায়, জরাজীর্ণ একটি ঘর। রোদ উঠলেই ভাঙা টিনের চাল দিয়ে সূর্যের আলো প্রবেশ করে ঘরে। বৃষ্টি হলে বাইরে পানি পড়ার আগে ঢুকে পড়ে ঘরে। ঝড় তুফানে নড়বড়ে টিনের ঘরটি যে কোনো সময় ভেঙে যেতে পারে। ঝড় বৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে সাফিয়া প্রতিনিয়ত প্রার্থনা করতে থাকেন। এ ছাড়াও অভাব অনটনের কারণে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন সাফিয়ার পরিবারের সদস্যরা। তাদের এ দুঃখ দেখার কেউ নেই।

ঘর ভেঙে চাপা পড়ার শঙ্কায় ঘুম আসে না বৃদ্ধা সাফিয়ার

বৃদ্ধা সাফিয়া খাতুন বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে জীবন যুদ্ধ শুরু হয়েছে। এখনো করছি। কোনো মতে চারপাশ থেকে বাঁশের ঠেস দিয়ে জরার্জীণ ঘরের মধ্যে বসবাস করছি। রোদ-বৃষ্টি পিঠের ওপর দিয়ে যাচ্ছে। একদিকে ক্ষুধার যন্ত্রণা, অন্যদিকে ঘর ভেঙে চাপা পড়ার আশঙ্কায় ঘুম আসে না। প্রতিনিয়ত নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করি, রোদ-বৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে। ঘর নির্মাণে সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

বাখরনগর গ্রামের জুয়েল মিয়া বলেন, সাফিয়া খাতুন দীর্ঘদিন ধরে খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। তিনি বর্তমানে যে ঘরে বসবাস করছেন সেখানে কোনো পশুও থাকবে না। এরকম জরাজীর্ণ একটি ঘরে মানুষ বসবাস করে, অন্তত আমি দেখিনি।

আনাছ মিয়া নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, সাফিয়ার স্বামী নাই, তার বড় ছেলেটাও মারা গেছে। বর্তমানে ছেলে-মেয়ে নিয়ে অনেক কষ্টে আছেন। সমাজের বিত্তমানরা যদি এগিয়ে আসেন, তাকে একটি বসতঘর উপহার দেওয়া কোনো বিষয় না। এজন্য তিনি সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুর রহমান বলেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ও চেয়ারম্যানের মাধ্যমে আবেদন করলে তাকে সরকারিভাবে সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করবো।

জাহিদ পাটোয়ারী/এমএন/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।

ট্যাগঃ
জনপ্রিয় খবর

ঘর ভেঙে চাপা পড়ার শঙ্কায় ঘুম আসে না বৃদ্ধা সাফিয়ার

আপডেট সময়ঃ ০৬:০১:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫

জরাজীর্ণ-নড়বড়ে টিনের ঘর মাথায় ভেঙে পড়তে পারে যেকোনো সময়। রোদ-বৃষ্টিতে পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ। এভাবেই দিন কাটছে স্বামীহারা বৃদ্ধা সাফিয়া খাতুনের (৬৫)। অসুস্থ সন্তান নিয়ে দুঃখের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছেন তিনি।

কুমিল্লার মুরাদনগরের নবীপুর পূর্ব ইউনিয়নের বাখরনগর গ্রামের বিধবা বৃদ্ধা সাফিয়া খাতুনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় এ চিত্র।

জানা যায়, ২০ বছর আগে স্বামী হারিয়েছেন সাফিয়া খাতুন। এর পর থেকে দুই ছেলে ও তিন মেয়েকে নিয়ে শুরু হয় তার জীবন সংগ্রাম। এরই মধ্যে দুরারোগ্য রোগে মারা যান বড় ছেলে। ছোট ছেলেটিও দুই বার স্ট্রোক করে বর্তমানে শয্যাশায়ী। তিনি পরিবার নিয়ে থাকেন চট্টগ্রামে। তিন মেয়েকে বিয়ে দিলেও ছোট মেয়েকে ফেলে তার স্বামী চলে গেছে। বর্তমানে ছোট মেয়েকে নিয়ে জরার্জীণ ঘরে দুঃখের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছেন সাফিয়া খাতুন।

সরেজমিন দেখা যায়, জরাজীর্ণ একটি ঘর। রোদ উঠলেই ভাঙা টিনের চাল দিয়ে সূর্যের আলো প্রবেশ করে ঘরে। বৃষ্টি হলে বাইরে পানি পড়ার আগে ঢুকে পড়ে ঘরে। ঝড় তুফানে নড়বড়ে টিনের ঘরটি যে কোনো সময় ভেঙে যেতে পারে। ঝড় বৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে সাফিয়া প্রতিনিয়ত প্রার্থনা করতে থাকেন। এ ছাড়াও অভাব অনটনের কারণে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন সাফিয়ার পরিবারের সদস্যরা। তাদের এ দুঃখ দেখার কেউ নেই।

ঘর ভেঙে চাপা পড়ার শঙ্কায় ঘুম আসে না বৃদ্ধা সাফিয়ার

বৃদ্ধা সাফিয়া খাতুন বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে জীবন যুদ্ধ শুরু হয়েছে। এখনো করছি। কোনো মতে চারপাশ থেকে বাঁশের ঠেস দিয়ে জরার্জীণ ঘরের মধ্যে বসবাস করছি। রোদ-বৃষ্টি পিঠের ওপর দিয়ে যাচ্ছে। একদিকে ক্ষুধার যন্ত্রণা, অন্যদিকে ঘর ভেঙে চাপা পড়ার আশঙ্কায় ঘুম আসে না। প্রতিনিয়ত নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করি, রোদ-বৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে। ঘর নির্মাণে সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

বাখরনগর গ্রামের জুয়েল মিয়া বলেন, সাফিয়া খাতুন দীর্ঘদিন ধরে খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। তিনি বর্তমানে যে ঘরে বসবাস করছেন সেখানে কোনো পশুও থাকবে না। এরকম জরাজীর্ণ একটি ঘরে মানুষ বসবাস করে, অন্তত আমি দেখিনি।

আনাছ মিয়া নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, সাফিয়ার স্বামী নাই, তার বড় ছেলেটাও মারা গেছে। বর্তমানে ছেলে-মেয়ে নিয়ে অনেক কষ্টে আছেন। সমাজের বিত্তমানরা যদি এগিয়ে আসেন, তাকে একটি বসতঘর উপহার দেওয়া কোনো বিষয় না। এজন্য তিনি সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুর রহমান বলেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ও চেয়ারম্যানের মাধ্যমে আবেদন করলে তাকে সরকারিভাবে সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করবো।

জাহিদ পাটোয়ারী/এমএন/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।