জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হন চাঁদপুরের ৩১ তরুণ। এদের কেউ শহীদ হন নিজ জেলায়, কেউ ঢাকায়, কেউবা নারায়ণগঞ্জে। অভ্যুত্থানের বছর পূর্ণ হলেও পরিবারগুলোতে আজও চলে শোকের মাতম।
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে পুলিশের গুলিতে নিহত হন শাহাদাত হোসেন। তার মা শিরতাজ বেগম এখনো ছেলের শেষ স্মৃতি ছবি দেখেন আর কান্নায় ভেঙে পড়েন। ছেলেহারা শোকে যেন পাগলপ্রায়।
শিরতাজ বেগম বলেন, ‘আমার একটাই সন্তান ছিল, সেও বিদায় নিয়েছে। এই ছেলেকে নিয়ে ফরিদগঞ্জে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতাম। মানুষের বাড়িতে কাজ করে তাকে বড় করেছি। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আমার ছেলে থানার সামনে শহীদ হয়। আমার ছেলেকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে। আমি এই হত্যার বিচার চাই। স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিচার চাই।’
ঢাকায় শহীদ হন আবুল হোসেন। কান্না করতে করতে তার স্ত্রী নাছিমা আক্তার বলেন, ‘আমাদের পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি ছিলেন আমার স্বামী। তিনি আমাদের অবলম্বন ছিলেন। তাকে হারিয়ে আজ আমরা একদম অসহায়। একটি সন্তান নিয়ে এখন চলার মতো অবস্থা আমাদের নেই। আমার স্বামীর কী অপরাধ ছিল? আমি হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।’
১৯ জুলাই কোটা আন্দোলন চলাকালীন ঢাকার উত্তরায় বাড়ির বারান্দায় পুলিশের গুলিতে শহীদ হয় নাইমা সুলতানা। তার মা আইনুন নাহার বলেন, ‘চাঁদপুরে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে প্রথম শহীদ আমার মেয়ে। কারও সন্তান এভাবে বাসায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাবে, এটা কারও প্রত্যাশা নয়। আমি আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে শহীদ পরিবারে আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। কিছু পরিবার বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকেও সহায়তা পেয়েছে। ক্যাটাগরি ভিত্তিতে আহতদেরকেও সহায়তা প্রদান চলমান।
শরীফুল ইসলাম/এসআর/এএসএম