০৪:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনে শ্রীলঙ্কা-মালদ্বীপের চেয়েও পিছিয়ে বাংলাদেশ

  • এডমিন
  • আপডেট সময়ঃ ০৬:০৮:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫
  • 11

বাংলাদেশে বর্তমানে জন্ম নিবন্ধনের হার ৫০ শতাংশ। আর মৃত্যু নিবন্ধনের হার ৪৭ শতাংশ। অথচ বৈশ্বিক গড় যথাক্রমে ৭৭ ও ৭৪ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ যেমন—মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা ইতিমধ্যেই প্রায় সর্বজনীন জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন নিশ্চিত করেছে। সেখানে বাংলাদেশ এখনও অনেক পিছিয়ে।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস উপলক্ষে ‘বাংলাদেশে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন: অগ্রগতি, প্রতিবন্ধকতা ও করণীয়’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এসব বিষয় জানানো হয়। গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) সহযোগিতায় প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এ ওয়েবিনারের আয়োজন করে।

ওয়েবিনারে বিশেষজ্ঞরা বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও ভোটাধিকারের মতো মৌলিক নাগরিক অধিকার সুরক্ষার পাশাপাশি উন্নয়ন পরিকল্পনা, জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা, বাজেট বণ্টন এবং সুশাসনে কাঙ্খিত পরিবর্তন নিশ্চিত করার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন। সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে শতভাগ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলেও মূলত বেশকিছু আইনি দুর্বলতা এই লক্ষ্য পূরণে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন, ২০০৪ দ্রুত সংশোধন করে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানকে আইনগতভাবে নিবন্ধনের দায়িত্ব দেওয়া হলে এ অগ্রগতি ত্বরান্বিত হবে। এতে স্বাস্থ্যসেবার আওতায় জন্ম নেওয়া প্রায় ৬৭ শতাংশ শিশু স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধনের আওতায় আসবে।

পাশাপাশি মৃত্যু নিবন্ধন নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে উত্তরাধিকার, সামাজিক নিরাপত্তা ও নারীর অধিকার সুরক্ষা করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে জন্ম ও মৃত্যুর ৪৫ দিনের মধ্যে নিবন্ধন সনদের ভুল সংশোধনের আবেদনের ফি মওকুফ ও নিবন্ধন তথ্য ব্যবহার করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মাধ্যমে ‘ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকস’ প্রস্তুত বাধ্যতামূলক করতে হবে।

ওয়েবিনারে জিএইচএআই বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস বলেন, আইন সংস্কারের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধনের দায়িত্ব দিলে ২০৩০ সালের মধ্যে সবাইকে নিবন্ধনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। এটি এসডিজির ১৬.৯ লক্ষ্যমাত্রা, জন্ম নিবন্ধনসহ সবার জন্য বৈধ পরিচয়পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে অর্জনে সহায়ক হবে।

ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিসের কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর নজরুল ইসলাম বলেন, আইন সংশোধনের পাশাপাশি বিদ্যমান আইনের কার্যকর বাস্তবায়নে নিবন্ধন বিষয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, জনবল ঘাটতি দূরীকরণ, প্রযুক্তিগত সমস্যার সমাধান, প্রক্রিয়াগত জটিলতা হ্রাস এবং সংশ্লিষ্ট সব খাতকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ডেপুটি এডিটর সাজ্জাদুর রহমান। এছাড়া বিভিন্ন প্রিন্ট, টেলিভিশন ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করেন।

এএএইচ/এমএমকে

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।

ট্যাগঃ

জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনে শ্রীলঙ্কা-মালদ্বীপের চেয়েও পিছিয়ে বাংলাদেশ

আপডেট সময়ঃ ০৬:০৮:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫

বাংলাদেশে বর্তমানে জন্ম নিবন্ধনের হার ৫০ শতাংশ। আর মৃত্যু নিবন্ধনের হার ৪৭ শতাংশ। অথচ বৈশ্বিক গড় যথাক্রমে ৭৭ ও ৭৪ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ যেমন—মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা ইতিমধ্যেই প্রায় সর্বজনীন জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন নিশ্চিত করেছে। সেখানে বাংলাদেশ এখনও অনেক পিছিয়ে।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস উপলক্ষে ‘বাংলাদেশে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন: অগ্রগতি, প্রতিবন্ধকতা ও করণীয়’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এসব বিষয় জানানো হয়। গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) সহযোগিতায় প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এ ওয়েবিনারের আয়োজন করে।

ওয়েবিনারে বিশেষজ্ঞরা বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও ভোটাধিকারের মতো মৌলিক নাগরিক অধিকার সুরক্ষার পাশাপাশি উন্নয়ন পরিকল্পনা, জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা, বাজেট বণ্টন এবং সুশাসনে কাঙ্খিত পরিবর্তন নিশ্চিত করার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন। সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে শতভাগ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলেও মূলত বেশকিছু আইনি দুর্বলতা এই লক্ষ্য পূরণে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন, ২০০৪ দ্রুত সংশোধন করে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানকে আইনগতভাবে নিবন্ধনের দায়িত্ব দেওয়া হলে এ অগ্রগতি ত্বরান্বিত হবে। এতে স্বাস্থ্যসেবার আওতায় জন্ম নেওয়া প্রায় ৬৭ শতাংশ শিশু স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধনের আওতায় আসবে।

পাশাপাশি মৃত্যু নিবন্ধন নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে উত্তরাধিকার, সামাজিক নিরাপত্তা ও নারীর অধিকার সুরক্ষা করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে জন্ম ও মৃত্যুর ৪৫ দিনের মধ্যে নিবন্ধন সনদের ভুল সংশোধনের আবেদনের ফি মওকুফ ও নিবন্ধন তথ্য ব্যবহার করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মাধ্যমে ‘ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকস’ প্রস্তুত বাধ্যতামূলক করতে হবে।

ওয়েবিনারে জিএইচএআই বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস বলেন, আইন সংস্কারের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধনের দায়িত্ব দিলে ২০৩০ সালের মধ্যে সবাইকে নিবন্ধনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। এটি এসডিজির ১৬.৯ লক্ষ্যমাত্রা, জন্ম নিবন্ধনসহ সবার জন্য বৈধ পরিচয়পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে অর্জনে সহায়ক হবে।

ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিসের কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর নজরুল ইসলাম বলেন, আইন সংশোধনের পাশাপাশি বিদ্যমান আইনের কার্যকর বাস্তবায়নে নিবন্ধন বিষয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, জনবল ঘাটতি দূরীকরণ, প্রযুক্তিগত সমস্যার সমাধান, প্রক্রিয়াগত জটিলতা হ্রাস এবং সংশ্লিষ্ট সব খাতকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ডেপুটি এডিটর সাজ্জাদুর রহমান। এছাড়া বিভিন্ন প্রিন্ট, টেলিভিশন ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করেন।

এএএইচ/এমএমকে

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।