০৮:২৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জামায়াতের প্রার্থী নায়েবে আমির, বিএনপিতে এগিয়ে শরিফ-তারেক

  • এডমিন
  • আপডেট সময়ঃ ১২:১২:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫
  • 2

দুই উপজেলা তানোর ও গোদাগাড়ী মিলে রাজশাহী-১ আসন। আসনটি শুরু থেকেই বিএনপির হাতে থাকলেও গত কয়েকবারের নির্বাচনে তা দখলে নেয় আওয়ামী লীগ। যদিও গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নির্বাচনে ফেরা কঠিন। স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে খ্যাত জাতীয় পার্টিরও ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। তাই মাঠে এখন সক্রিয় গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলোই।

এরই মধ্যে বিএনপির পক্ষ থেকে প্রার্থী ঘোষণা না হলেও রাজশাহী-১ আসনে আলোচনায় এসেছে দলটির একাধিক শক্ত প্রার্থীর নাম। তারা মাঠেও বেশ তৎপরতা দেখাচ্ছেন। অন্যদিকে এ আসনে সরব জামায়াতও। আসনটিতে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও এই আসনের সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমানকে দলটির পক্ষ থেকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। এরই মধ্যে মাঠে কাজ শুরু করেছেন তারা। বলা চলে এ আসনে জামায়াতই হবে বিএনপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী।

এদিকে জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নির্ধারণের ফলে বিএনপি নেতাকর্মীরা বেশ চাঙা। তারা এখন ভোটের তারিখ জানার অপেক্ষায় দিন গুনছেন। দলটির কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত ছড়িয়েছে নির্বাচনী হাওয়া। রাজশাহীর ছয়টি আসনেই রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে। বিএনপি ও জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নির্বাচনী মাঠ গোছাতে শুরু করেছেন।

আমি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রেসিডেন্ট গার্ড ছিলাম। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সামরিক সচিব ছিলাম। বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে আমাকে মাঠের রাজনীতিতে তৎপর হতে বলা হয়েছে। আমি হয়েছি। সাধারণ মানুষের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। তারা ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে। গত ১৫ বছর তারা ভোট দিতে পারেনি। এবার তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবে।

জানা গেছে, রাজনৈতিক বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগদানের পাশাপাশি তারা অংশ নিচ্ছেন সামাজিক কর্মকাণ্ডে। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও অতিথি হচ্ছেন। এলাকার মানুষের সমর্থন চাইছেন। দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষের সঙ্গে বিভিন্ন উপায়ে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন তারা। ব্যানার-পোস্টার সাঁটিয়ে চাইছেন দোয়া। আপাতত বিএনপি এবং জামায়াতের দখলেই রয়েছে মাঠ। এনসিপির কমিটি না থাকায় রাজনৈতিক তৎপরতাও চোখে পড়ার মতো নেই।

রাজশাহী-১ আসনে মোট ৪ লাখ ৬২ হাজার ২৪২। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৩০ হাজার ৫১০ ও নারী ভোটার ২ লাখ ৩১ হাজার ৭২৯। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার তিনজন। এই আসনের নতুন ভোটার ৭ হাজার ৫৪২। এ আসনে সবচেয়ে বেশি ভোটার চরের বাসিন্দা ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর। মূলত তাদের ভোটেই জয়-পরাজয় নিশ্চিত হবে।

এ আসনে আগাম নির্বাচনী তৎপরতা শুরু করেছেন বিএনপির সম্ভাব্য চার প্রার্থী। জামায়াতের একক প্রার্থীও জোর সাংগঠনিক তৎপরতা চালাচ্ছেন। পাশাপাশি জামায়াতের নেতাকর্মীরা সাংগঠনিক কৌশলের অংশ হিসেবে মসজিদ-মাদরাসায়ও নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। দোয়া মাহফিলও করছেন। এসব অনুষ্ঠানে তারা ইসলামি শাসনব্যবস্থার নানাদিক তুলে ধরে বক্তব্য দিচ্ছেন। সমর্থন চাইছেন এলাকাবাসীর। এ আসনে জাতীয় পার্টির এক প্রার্থীও মাঠের নেতাকর্মীদের সংগঠিত করার চেষ্টা করছেন।

বিএনপির অন্যতম মনোনয়নপ্রত্যাশী অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল শরিফ উদ্দিন। তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ও সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী প্রয়াত ব্যারিস্টার আমিনুল হকের ছোট ভাই। শরিফ এখন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার (২০০১-২০০৬) সামরিক সচিব ছিলেন। এলাকায় ব্যাপক সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেছেন তিনি। গত ১৫ বছর বিএনপির যেসব নেতাকর্মী হামলা মামলায় নিষ্ক্রিয় ও বিপর্যস্ত ছিলেন তাদের সংগঠিত করছেন। গোদাগাড়ী ও তানোরের তৃণমূল পর্যায়ে দলীয় কমিটিগুলো পুনর্গঠন করছেন। এলাকায় এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গেও যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। শরিফ উদ্দিনের নিজের এলাকা গোদাগাড়ী।

জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে ব্যাপক দলীয় ও সাংগঠনিক তৎপরতা শুরু করেছেন দলের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। তার বাড়ি গোদাগাড়ী পৌর এলাকার মহিষালবাড়িতে। ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে তিনি এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে আরও কয়েকটি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হলেও জয়ের মুখ দেখতে পাননি। এবার মুজিবুর রহমান যেমন সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন, তেমনি দলের নেতারাও ব্যাপক তৎপর।

শরিফ উদ্দিন ছাড়াও বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে মাঠে নেমেছেন সুপ্রিম কোর্ট জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক ও গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন, বিএনপি নেতা সুলতানুল ইসলাম তারেক ও জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি সাজেদুর রহমান মার্কনি। নির্বাচনী এলাকায় ঈদ পুনর্মিলনীসহ নানান অনুষ্ঠানের আয়োজনও করছেন তারা। তবে এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল শরিফ উদ্দিন ও বিএনপি নেতা সুলতানুল ইসলাম তারেক।

আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে শরিফ উদ্দিন বলেন, এ আসনটি মূলত ছিল আমার ভাইয়ের। তার হাত ধরেই এ আসনের উন্নয়ন হয়েছে। তার রেখে যাওয়া কাজ করতে চাই। এ আসনে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ কী করেছে সেটি সবাই জানে। আমি এ আসনটির উন্নয়ন করতে চাই।

তিনি বলেন, আমি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রেসিডেন্ট গার্ড ছিলাম। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সামরিক সচিব ছিলাম। বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে আমাকে মাঠের রাজনীতিতে তৎপর হতে বলা হয়েছে। আমি হয়েছি। সাধারণ মানুষের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। তারা ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে। গত ১৫ বছর তারা ভোট দিতে পারেনি। এবার তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবে।

যারা মাঠে আছে তারা প্রতিষ্ঠিত দল। আমাদের এখনো দল গোছানো হয়নি। প্রার্থী তৈরি করাও বড় কাজ। আমরা আগে দল গোছাবো এরপর রাজশাহীর ছয়টি আসনেই একক প্রার্থী দেবো। সে লক্ষ্যে এনসিপির কাজ চলছে।

বিএনপি নেতা সুলতানুল ইসলাম তারেক বলেন, আমার অবস্থান কেমন সেটা আপনারাই খোঁজ নিলেই বুঝতে পারবেন। তারেক রহমানের সবচেয়ে বড় কথা হলো ক্লিন ইমেজের মানুষ। যারা বিপদে দলের সঙ্গে ছিল। চাঁদাবাজি অন্যায়ের সঙ্গে ছিল না। সার্বিকভাবে তারাই এগিয়ে। সে হিসেবে আমি আশাবাদী।

তিনি বলেন, আমার বিভিন্ন সভা-সমাবেশ বেশ সাড়া ফেলছে। মানুষ কাছে আসছে। আমিও মানুষের পাশে ছিলাম। আপদে-বিপদে দলের নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম। হামলা-মামলায় আইনি সহায়তা করেছি। এ কারণে জেলেও গেছি। যখনই সুযোগ পেয়েছি এলাকার উন্নয়ন করেছি, আরও করবো। আমি নিতে আসিনি, দিতে এসছি। সবাই মিলে আমাকে সুযোগ দিলে আমি সুস্থ, শিক্ষিত, মাদকমুক্ত ও বেকারমুক্ত সমাজ গঠন করবো। শিল্পকে কীভাবে আরও উন্নত করতে পারি সে বিষয়ে ভাববো। রাজশাহীতে শিল্পায়ন হবে, কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে তুলবো।

এদিকে, জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে ব্যাপক দলীয় ও সাংগঠনিক তৎপরতা শুরু করেছেন দলের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। তার বাড়ি গোদাগাড়ী পৌর এলাকার মহিষালবাড়িতে। ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে তিনি এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে আরও কয়েকটি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হলেও জয়ের মুখ দেখতে পাননি। এবার মুজিবুর রহমান যেমন সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন, তেমনি দলের নেতারাও ব্যাপক তৎপর। তারা মসজিদে মসজিদে গিয়ে জামায়াতের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে ইসলামি সমাজ ও রাষ্ট্র কায়েমের কথা বলছেন।

এদিকে এনসিপি রাজশাহী অঞ্চলের সমন্বয়ক ইমরান ইমন বলেন, যারা মাঠে আছে তারা প্রতিষ্ঠিত দল। আমাদের এখনো দল গোছানো হয়নি। প্রার্থী তৈরি করাও বড় কাজ। আমরা আগে দল গোছাবো এরপর রাজশাহীর ছয়টি আসনেই একক প্রার্থী দেবো। সে লক্ষ্যে এনসিপির কাজ চলছে।

এসএইচ/এসএইচএস/এমএফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।

ট্যাগঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সিএনজি মালিক-শ্রমিকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার

জামায়াতের প্রার্থী নায়েবে আমির, বিএনপিতে এগিয়ে শরিফ-তারেক

আপডেট সময়ঃ ১২:১২:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

দুই উপজেলা তানোর ও গোদাগাড়ী মিলে রাজশাহী-১ আসন। আসনটি শুরু থেকেই বিএনপির হাতে থাকলেও গত কয়েকবারের নির্বাচনে তা দখলে নেয় আওয়ামী লীগ। যদিও গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নির্বাচনে ফেরা কঠিন। স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে খ্যাত জাতীয় পার্টিরও ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। তাই মাঠে এখন সক্রিয় গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলোই।

এরই মধ্যে বিএনপির পক্ষ থেকে প্রার্থী ঘোষণা না হলেও রাজশাহী-১ আসনে আলোচনায় এসেছে দলটির একাধিক শক্ত প্রার্থীর নাম। তারা মাঠেও বেশ তৎপরতা দেখাচ্ছেন। অন্যদিকে এ আসনে সরব জামায়াতও। আসনটিতে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও এই আসনের সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমানকে দলটির পক্ষ থেকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। এরই মধ্যে মাঠে কাজ শুরু করেছেন তারা। বলা চলে এ আসনে জামায়াতই হবে বিএনপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী।

এদিকে জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নির্ধারণের ফলে বিএনপি নেতাকর্মীরা বেশ চাঙা। তারা এখন ভোটের তারিখ জানার অপেক্ষায় দিন গুনছেন। দলটির কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত ছড়িয়েছে নির্বাচনী হাওয়া। রাজশাহীর ছয়টি আসনেই রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে। বিএনপি ও জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নির্বাচনী মাঠ গোছাতে শুরু করেছেন।

আমি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রেসিডেন্ট গার্ড ছিলাম। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সামরিক সচিব ছিলাম। বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে আমাকে মাঠের রাজনীতিতে তৎপর হতে বলা হয়েছে। আমি হয়েছি। সাধারণ মানুষের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। তারা ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে। গত ১৫ বছর তারা ভোট দিতে পারেনি। এবার তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবে।

জানা গেছে, রাজনৈতিক বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগদানের পাশাপাশি তারা অংশ নিচ্ছেন সামাজিক কর্মকাণ্ডে। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও অতিথি হচ্ছেন। এলাকার মানুষের সমর্থন চাইছেন। দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষের সঙ্গে বিভিন্ন উপায়ে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন তারা। ব্যানার-পোস্টার সাঁটিয়ে চাইছেন দোয়া। আপাতত বিএনপি এবং জামায়াতের দখলেই রয়েছে মাঠ। এনসিপির কমিটি না থাকায় রাজনৈতিক তৎপরতাও চোখে পড়ার মতো নেই।

রাজশাহী-১ আসনে মোট ৪ লাখ ৬২ হাজার ২৪২। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৩০ হাজার ৫১০ ও নারী ভোটার ২ লাখ ৩১ হাজার ৭২৯। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার তিনজন। এই আসনের নতুন ভোটার ৭ হাজার ৫৪২। এ আসনে সবচেয়ে বেশি ভোটার চরের বাসিন্দা ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর। মূলত তাদের ভোটেই জয়-পরাজয় নিশ্চিত হবে।

এ আসনে আগাম নির্বাচনী তৎপরতা শুরু করেছেন বিএনপির সম্ভাব্য চার প্রার্থী। জামায়াতের একক প্রার্থীও জোর সাংগঠনিক তৎপরতা চালাচ্ছেন। পাশাপাশি জামায়াতের নেতাকর্মীরা সাংগঠনিক কৌশলের অংশ হিসেবে মসজিদ-মাদরাসায়ও নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। দোয়া মাহফিলও করছেন। এসব অনুষ্ঠানে তারা ইসলামি শাসনব্যবস্থার নানাদিক তুলে ধরে বক্তব্য দিচ্ছেন। সমর্থন চাইছেন এলাকাবাসীর। এ আসনে জাতীয় পার্টির এক প্রার্থীও মাঠের নেতাকর্মীদের সংগঠিত করার চেষ্টা করছেন।

বিএনপির অন্যতম মনোনয়নপ্রত্যাশী অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল শরিফ উদ্দিন। তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ও সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী প্রয়াত ব্যারিস্টার আমিনুল হকের ছোট ভাই। শরিফ এখন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার (২০০১-২০০৬) সামরিক সচিব ছিলেন। এলাকায় ব্যাপক সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেছেন তিনি। গত ১৫ বছর বিএনপির যেসব নেতাকর্মী হামলা মামলায় নিষ্ক্রিয় ও বিপর্যস্ত ছিলেন তাদের সংগঠিত করছেন। গোদাগাড়ী ও তানোরের তৃণমূল পর্যায়ে দলীয় কমিটিগুলো পুনর্গঠন করছেন। এলাকায় এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গেও যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। শরিফ উদ্দিনের নিজের এলাকা গোদাগাড়ী।

জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে ব্যাপক দলীয় ও সাংগঠনিক তৎপরতা শুরু করেছেন দলের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। তার বাড়ি গোদাগাড়ী পৌর এলাকার মহিষালবাড়িতে। ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে তিনি এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে আরও কয়েকটি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হলেও জয়ের মুখ দেখতে পাননি। এবার মুজিবুর রহমান যেমন সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন, তেমনি দলের নেতারাও ব্যাপক তৎপর।

শরিফ উদ্দিন ছাড়াও বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে মাঠে নেমেছেন সুপ্রিম কোর্ট জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক ও গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন, বিএনপি নেতা সুলতানুল ইসলাম তারেক ও জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি সাজেদুর রহমান মার্কনি। নির্বাচনী এলাকায় ঈদ পুনর্মিলনীসহ নানান অনুষ্ঠানের আয়োজনও করছেন তারা। তবে এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল শরিফ উদ্দিন ও বিএনপি নেতা সুলতানুল ইসলাম তারেক।

আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে শরিফ উদ্দিন বলেন, এ আসনটি মূলত ছিল আমার ভাইয়ের। তার হাত ধরেই এ আসনের উন্নয়ন হয়েছে। তার রেখে যাওয়া কাজ করতে চাই। এ আসনে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ কী করেছে সেটি সবাই জানে। আমি এ আসনটির উন্নয়ন করতে চাই।

তিনি বলেন, আমি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রেসিডেন্ট গার্ড ছিলাম। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সামরিক সচিব ছিলাম। বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে আমাকে মাঠের রাজনীতিতে তৎপর হতে বলা হয়েছে। আমি হয়েছি। সাধারণ মানুষের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। তারা ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে। গত ১৫ বছর তারা ভোট দিতে পারেনি। এবার তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবে।

যারা মাঠে আছে তারা প্রতিষ্ঠিত দল। আমাদের এখনো দল গোছানো হয়নি। প্রার্থী তৈরি করাও বড় কাজ। আমরা আগে দল গোছাবো এরপর রাজশাহীর ছয়টি আসনেই একক প্রার্থী দেবো। সে লক্ষ্যে এনসিপির কাজ চলছে।

বিএনপি নেতা সুলতানুল ইসলাম তারেক বলেন, আমার অবস্থান কেমন সেটা আপনারাই খোঁজ নিলেই বুঝতে পারবেন। তারেক রহমানের সবচেয়ে বড় কথা হলো ক্লিন ইমেজের মানুষ। যারা বিপদে দলের সঙ্গে ছিল। চাঁদাবাজি অন্যায়ের সঙ্গে ছিল না। সার্বিকভাবে তারাই এগিয়ে। সে হিসেবে আমি আশাবাদী।

তিনি বলেন, আমার বিভিন্ন সভা-সমাবেশ বেশ সাড়া ফেলছে। মানুষ কাছে আসছে। আমিও মানুষের পাশে ছিলাম। আপদে-বিপদে দলের নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম। হামলা-মামলায় আইনি সহায়তা করেছি। এ কারণে জেলেও গেছি। যখনই সুযোগ পেয়েছি এলাকার উন্নয়ন করেছি, আরও করবো। আমি নিতে আসিনি, দিতে এসছি। সবাই মিলে আমাকে সুযোগ দিলে আমি সুস্থ, শিক্ষিত, মাদকমুক্ত ও বেকারমুক্ত সমাজ গঠন করবো। শিল্পকে কীভাবে আরও উন্নত করতে পারি সে বিষয়ে ভাববো। রাজশাহীতে শিল্পায়ন হবে, কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে তুলবো।

এদিকে, জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে ব্যাপক দলীয় ও সাংগঠনিক তৎপরতা শুরু করেছেন দলের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। তার বাড়ি গোদাগাড়ী পৌর এলাকার মহিষালবাড়িতে। ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে তিনি এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে আরও কয়েকটি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হলেও জয়ের মুখ দেখতে পাননি। এবার মুজিবুর রহমান যেমন সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন, তেমনি দলের নেতারাও ব্যাপক তৎপর। তারা মসজিদে মসজিদে গিয়ে জামায়াতের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে ইসলামি সমাজ ও রাষ্ট্র কায়েমের কথা বলছেন।

এদিকে এনসিপি রাজশাহী অঞ্চলের সমন্বয়ক ইমরান ইমন বলেন, যারা মাঠে আছে তারা প্রতিষ্ঠিত দল। আমাদের এখনো দল গোছানো হয়নি। প্রার্থী তৈরি করাও বড় কাজ। আমরা আগে দল গোছাবো এরপর রাজশাহীর ছয়টি আসনেই একক প্রার্থী দেবো। সে লক্ষ্যে এনসিপির কাজ চলছে।

এসএইচ/এসএইচএস/এমএফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।