বার্ডস আই ম্যাস মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন পিএলসি এবং এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান গান বাংলা স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলের নিয়ন্ত্রণ অস্ত্রের মুখে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত কৌশিক হোসেন তাপস ও তার স্ত্রী ফারজানা মুন্নিসহ অন্য আসামিদের চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনে দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. হারুনুর রশিদ ঢাকা মহানগর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত ২১ সেপ্টেম্বর এ প্রতিবেদন জমা দেন। তবে বিষয়টি সম্প্রতি সামনে এসেছে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন রবি শংকর মৈত্রী, এম. আমানুল্লাহ খান (চঞ্চল খান) ও সৈয়দ নাবিল আশরাফ ফয়সাল।
মামলার ঘটনার স্থান ও সময় নির্ধারণে কোনো প্রমাণ মিলেনি। অভিযোগকারীর দেওয়া তথ্য ও অভিযোগগুলো পর্যালোচনার পর প্রমাণিত হয়, এগুলো রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য নিয়ে দাখিল করা হয়েছিল। এর ফলে অভিযুক্তরা দায়মুক্ত হন এবং মামলাটি ‘তথ্যগত ভুল’ হিসেবে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান থানার চূড়ান্ত প্রতিবেদনে নথিভুক্ত করা হয়েছে।- তদন্ত প্রতিবেদন
পুলিশের তদন্ত অনুযায়ী, অভিযোগকারী সৈয়দ সামস উদ্দিন আহমেদ ২০১১ সালে বার্ডস আই ম্যাস মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন প্রতিষ্ঠা এবং সাত হাজার শেয়ার ধারণ করেন। পরে তিনি স্বেচ্ছায় তার শেয়ার আরেক শেয়ারহোল্ডার আমানুল্লাহ খানের কাছে হস্তান্তর করেন। এরপর তার কাছ থেকে প্রধান অভিযুক্ত কৌশিক তাপস ও দ্বিতীয় অভিযুক্ত ফারজানা মুন্নি ৮০ হাজার শেয়ার কিনে চ্যানেলের মালিকানা লাভ করেন। তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে যে অভিযোগকারীকে জোরপূর্বক শেয়ার হস্তান্তর করানো হয়নি এবং তাকে অস্ত্রের মুখে হুমকি ও অপহরণের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, মামলার ঘটনার স্থান ও সময় নির্ধারণে কোনো প্রমাণ মিলেনি। অভিযোগকারীর দেওয়া তথ্য ও অভিযোগগুলো পর্যালোচনার পর প্রমাণিত হয়, এগুলো রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য নিয়ে দাখিল করা হয়েছিল। এর ফলে অভিযুক্তরা দায়মুক্ত হন এবং মামলাটি ‘তথ্যগত ভুল’ হিসেবে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান থানার চূড়ান্ত প্রতিবেদনে নথিভুক্ত করা হয়েছে।
বর্তমানে বার্ডস আই ম্যাস মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন পরিচালনায় কৌশিক তাপস ৭০ শতাংশ, ফারজানা মুন্নি ২৪ শতাংশ, রবি শংকর পাঁচ শতাংশ ও সৈয়দ ফারুক আহমেদ নামের একজন এক শতাংশ শেয়ারের মালিক।
মামলার অভিযোগ
অভিযোগকারী সামস উদ্দিন জানান, তিনি বার্ডস আই ম্যাস মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন প্রতিষ্ঠা করেন এবং এতে রবি শংকর ও আমানুল্লাহ খান শেয়ারহোল্ডার হন। পরে কৌশিক তাপস ও ফারজানা মুন্নি শেয়ার কেনেন। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে সামস উদ্দিন এবং তার পরিচিতজন ও সহযোগী মো. বদরুদ্দোজা সাগরকে বসুন্ধারা এলাকায় আমানুল্লাহ খানের বাসায় ডেকে নিয়ে অস্ত্রের মুখে হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেওয়া হয়। এভাবে তার শেয়ার ও প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রণ অন্যদের কাছে হস্তান্তর করানো হয়।
আরও পড়ুন
গান বাংলা টিভির চেয়ারম্যান তাপস কারামুক্ত
হত্যাচেষ্টা মামলায় শমী কায়সার-তাপস তিন দিনের রিমান্ডে
আদালত গ্রেফতার দেখালেন, গান বাংলার তাপস বললেন ‘ধন্যবাদ’
পুলিশের তদন্ত
সামস উদ্দিন ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ অভিযোগ দেওয়ার পর বিচারক তা আমলে নিয়ে নিয়মিত মামলা করতে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন। তিনি মামলা করে তদন্তভার এসআই হারুনুর রশিদের কাছে হস্তান্তর করেন। পরে তদন্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১১ সালের ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত স্থানগুলো বর্তমানে বিদ্যমান নেই অথবা বাদী সঠিকভাবে শনাক্ত করতে পারেননি। মামলার আলামত জব্দের চেষ্টা করা হলেও কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। সেই সঙ্গে বাদীর বক্তব্য অনুযায়ী বিভিন্ন কাগজপত্র পর্যালোচনা এবং সংশ্লিষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ জাগো নিউজকে বলেন, অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে তদন্ত এবং প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়।
এমডিএএ/একিউএফ
এডমিন 















