স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি) খোন্দকার মো. মাহবুবুর রহমান বলেছেন, পাচার প্রতিরোধে পাচারপ্রবণ জেলাগুলোতে মানবপাচার ট্রাইব্যুনাল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
তিনি বলেন, বর্তমানে বিভাগীয় পর্যায়ে স্থাপিত সাতটি ট্রাইব্যুনালের পাশাপাশি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে সেখানে এই বিশেষ আদালত গড়ার পরিকল্পনা চলছে। এর মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া আরও দ্রুত, কার্যকর ও ভিকটিমদের কাছে সহজলভ্য হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বুধবার বিশ্ব মানবপাচারবিরোধী দিবস উপলক্ষে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ জাতিসংঘ অভিবাসন নেটওয়ার্কের কাউন্টার-ট্র্যাফিকিং ইন পারসনস টেকনিক্যাল ওয়ার্কিং গ্রুপ এর যৌথ উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন
তিনি বলেন, আমাদের মানবপাচারবিরোধী কার্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য হচ্ছে বিভাগীয় জেলাগুলোতে সাতটি মানবপাচার ট্রাইব্যুনালের প্রতিষ্ঠা। এই ট্রাইব্যুনালগুলো বিচার প্রক্রিয়া দ্রুততর করছে, অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনছে এবং এই ঘৃণ্য অপরাধ নির্মূলে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা একটি জাতীয় রেফারেল ব্যবস্থাও গঠনের প্রক্রিয়ায় রয়েছি, যেন ভুক্তভোগীরা পূর্ণাঙ্গ, ভিকটিম-কেন্দ্রিক সহায়তা ও পুনর্বাসন পেতে পারেন এবং টেকসইভাবে সমাজে ফিরে আসতে পারে।
অনুষ্ঠানে কোইকার ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর, সুজিন কং বলেন, মানবপাচার আমাদের সময়ের অন্যতম গুরুতর মানবাধিকার সংকট, যা মানুষের স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও মর্যাদা কেড়ে নেয়। কোইকা বাংলাদেশ ও আমাদের অংশীদারদের পাশে থেকে এমন একটি সমাজ গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যেখানে প্রত্যেকে স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে বাঁচতে পারে।
বাংলাদেশে জাতিসংঘের রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, আইওএম-এর চিফ অফ মিশন ল্যান্স বোনো বলেন, পাচার চক্র চিহ্নিত ও ধ্বংস করতে, তাদের অর্থের পথ বন্ধ করতে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, ভুক্তভোগীদের উদ্ধার, পুনর্বাসন ও সমাজে পুনঃঅন্তর্ভুক্ত করতে সরকার, আন্তর্জাতিক সংস্থা, সিভিল সোসাইটি, বেসরকারি খাত ও কমিউনিটি আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এবং সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন — যারা সকলেই পাচার চক্র ধ্বংস, সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার এবং ভুক্তভোগী ও বেঁচে ফেরা ব্যক্তিদের অধিকার রক্ষার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
আরএএস/এমআরএম