০৭:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিসিএসে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দীর্ঘসময় মনোযোগ ধরে রাখা

  • এডমিন
  • আপডেট সময়ঃ ১২:০০:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • 24

মো. রুকুনুজ্জামান ৪৪তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। তিনি মনে করেন, বিসিএসে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দীর্ঘসময় মনোযোগ ধরে রাখা। তার শৈশব কেটেছে শেরপুর জেলা সদরের তারাকান্দি গ্রামে। বাবা পেশায় ব্যবসায়ী এবং মা গৃহিণী। তিনি শেরপুরের নবারুণ পাবলিক স্কুল থেকে এসএসসি, ময়মনসিংহের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে পানি সম্পদ কৌশল বিষয়ে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন।

তার ক্যাডার হওয়ার গল্প, নতুনদের জন্য নির্দেশনা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ইসমাম হোসাইন—

জাগো নিউজ: ৪৪তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডার পেয়েছেন, অনুভূতি কেমন?
মো. রুকুনুজ্জামান: আমার জীবনের অবিস্মরণীয় আনন্দের মুহূর্ত। মনে হচ্ছিল দীর্ঘ এক দৌড় শেষে প্রাণভরে শ্বাস নেওয়ার সুযোগ এসেছে। আমার বিশ্বাস, পরিশ্রমীদের সৃষ্টিকর্তা কখনো নিরাশ করেন না। এ অর্জন শুধু আমার একার নয়; আমার পরিবার, শুভাকাঙ্ক্ষী ও যারা সব সময় পাশে থেকেছেন—সবার প্রাপ্তি।

জাগো নিউজ: বিসিএসের স্বপ্ন দেখেছিলেন কখন থেকে?
মো. রুকুনুজ্জামান: শুরুর দিকে বিসিএসের প্রতি আমার কোনো বিশেষ ঝোঁক ছিল না বরং একধরনের বিরূপ মনোভাব কাজ করতো। তবে বিশ্ববিদ্যালয় শেষ হওয়ার পর একবছর কেটে গেলে বুঝতে পারি—দেশসেবার সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম হলো বিসিএস। সেখান থেকেই শুরু হয় আমার পথচলা।

জাগো নিউজ: বিসিএস যাত্রার গল্প শুনতে চাই, প্রস্তুতি কীভাবে নিয়েছেন?
মো. রুকুনুজ্জামান: প্রস্তুতির শুরুতেই একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করেছিলাম। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ধরে পড়াশোনা করতাম। মূল বইয়ের পাশাপাশি নির্ভরযোগ্য গাইড, নোট এবং পত্রিকায় সমসাময়িক বিষয় পড়তাম। আগের বছরের প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ অনেক সাহায্য করেছে।

জাগো নিউজ: বিসিএস প্রস্তুতিতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী এবং কীভাবে মোকাবিলা করেছেন?
মো. রুকুনুজ্জামান: সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল দীর্ঘসময় মনোযোগ ধরে রাখা এবং ব্যর্থতা কাটিয়ে ওঠা। প্রথম তিনবার প্রিলিতে কৃতকার্য হতে পারিনি। প্রতিবার মনে হতো—হয়তো পারবো না। কিন্তু তখনই আত্মবিশ্বাস ধরে রেখেছি, ভেঙে পড়িনি। ধৈর্য ধরে প্রতিটি বিষয়ে আলাদা কৌশল নিয়েছি। অবশেষে ৪৪তম বিসিএসেই প্রথমবার প্রিলি পাস করি। তাতেই প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হই।

জাগো নিউজ: আড়াল থেকে কেউ অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন?
মো. রুকুনুজ্জামান: আমার পরিবারই আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। তাদের মানসিক সমর্থন, দোয়া এবং ভালোবাসাই আমাকে বারবার নতুন করে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করেছে।

জাগো নিউজ: নতুনরা বিসিএসের জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?
মো. রুকুনুজ্জামান: যারা বিসিএসের প্রস্তুতি নিতে শুরু করবেন, তাদের বলবো—শুরু থেকেই সঠিক গাইডলাইন মেনে পড়াশোনা করুন। নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করুন এবং নিয়মিত চর্চার অভ্যাস গড়ে তুলুন। ধৈর্য ও অধ্যবসায় ছাড়া সাফল্য সম্ভব নয়। সব কিছুর আগে নিজের প্রতি আস্থা রাখুন।

জাগো নিউজ: প্রশাসন ক্যাডারে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
মো. রুকুনুজ্জামান: আমি চাই মানুষের সবচেয়ে কাছাকাছি থাকতে। একজন প্রশাসক হিসেবে শুধু ফাইলপত্রে সীমাবদ্ধ না থেকে মাঠপর্যায়ে মানুষের সমস্যার সমাধান করতে চাই। আমার লক্ষ্য—জনবান্ধব, সৎ এবং জবাবদিহিমূলক প্রশাসনিক কর্মকর্তা হওয়া।

জাগো নিউজ: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
মো. রুকুনুজ্জামান: আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা স্পষ্ট—সততা, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেমকে মূল ভিত্তি করে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখা। প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে স্বচ্ছতা বজায় রাখা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া এবং মানুষের আস্থা অর্জন করাই হবে আমার কাজের মূল লক্ষ্য।

এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।

ট্যাগঃ
জনপ্রিয় খবর

ব্যবসায়ী আলী আসগর লবী ৫৬ কোটি টাকার সম্পদের মালিক

বিসিএসে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দীর্ঘসময় মনোযোগ ধরে রাখা

আপডেট সময়ঃ ১২:০০:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মো. রুকুনুজ্জামান ৪৪তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। তিনি মনে করেন, বিসিএসে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দীর্ঘসময় মনোযোগ ধরে রাখা। তার শৈশব কেটেছে শেরপুর জেলা সদরের তারাকান্দি গ্রামে। বাবা পেশায় ব্যবসায়ী এবং মা গৃহিণী। তিনি শেরপুরের নবারুণ পাবলিক স্কুল থেকে এসএসসি, ময়মনসিংহের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে পানি সম্পদ কৌশল বিষয়ে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন।

তার ক্যাডার হওয়ার গল্প, নতুনদের জন্য নির্দেশনা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ইসমাম হোসাইন—

জাগো নিউজ: ৪৪তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডার পেয়েছেন, অনুভূতি কেমন?
মো. রুকুনুজ্জামান: আমার জীবনের অবিস্মরণীয় আনন্দের মুহূর্ত। মনে হচ্ছিল দীর্ঘ এক দৌড় শেষে প্রাণভরে শ্বাস নেওয়ার সুযোগ এসেছে। আমার বিশ্বাস, পরিশ্রমীদের সৃষ্টিকর্তা কখনো নিরাশ করেন না। এ অর্জন শুধু আমার একার নয়; আমার পরিবার, শুভাকাঙ্ক্ষী ও যারা সব সময় পাশে থেকেছেন—সবার প্রাপ্তি।

জাগো নিউজ: বিসিএসের স্বপ্ন দেখেছিলেন কখন থেকে?
মো. রুকুনুজ্জামান: শুরুর দিকে বিসিএসের প্রতি আমার কোনো বিশেষ ঝোঁক ছিল না বরং একধরনের বিরূপ মনোভাব কাজ করতো। তবে বিশ্ববিদ্যালয় শেষ হওয়ার পর একবছর কেটে গেলে বুঝতে পারি—দেশসেবার সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম হলো বিসিএস। সেখান থেকেই শুরু হয় আমার পথচলা।

জাগো নিউজ: বিসিএস যাত্রার গল্প শুনতে চাই, প্রস্তুতি কীভাবে নিয়েছেন?
মো. রুকুনুজ্জামান: প্রস্তুতির শুরুতেই একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করেছিলাম। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ধরে পড়াশোনা করতাম। মূল বইয়ের পাশাপাশি নির্ভরযোগ্য গাইড, নোট এবং পত্রিকায় সমসাময়িক বিষয় পড়তাম। আগের বছরের প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ অনেক সাহায্য করেছে।

জাগো নিউজ: বিসিএস প্রস্তুতিতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী এবং কীভাবে মোকাবিলা করেছেন?
মো. রুকুনুজ্জামান: সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল দীর্ঘসময় মনোযোগ ধরে রাখা এবং ব্যর্থতা কাটিয়ে ওঠা। প্রথম তিনবার প্রিলিতে কৃতকার্য হতে পারিনি। প্রতিবার মনে হতো—হয়তো পারবো না। কিন্তু তখনই আত্মবিশ্বাস ধরে রেখেছি, ভেঙে পড়িনি। ধৈর্য ধরে প্রতিটি বিষয়ে আলাদা কৌশল নিয়েছি। অবশেষে ৪৪তম বিসিএসেই প্রথমবার প্রিলি পাস করি। তাতেই প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হই।

জাগো নিউজ: আড়াল থেকে কেউ অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন?
মো. রুকুনুজ্জামান: আমার পরিবারই আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। তাদের মানসিক সমর্থন, দোয়া এবং ভালোবাসাই আমাকে বারবার নতুন করে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করেছে।

জাগো নিউজ: নতুনরা বিসিএসের জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?
মো. রুকুনুজ্জামান: যারা বিসিএসের প্রস্তুতি নিতে শুরু করবেন, তাদের বলবো—শুরু থেকেই সঠিক গাইডলাইন মেনে পড়াশোনা করুন। নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করুন এবং নিয়মিত চর্চার অভ্যাস গড়ে তুলুন। ধৈর্য ও অধ্যবসায় ছাড়া সাফল্য সম্ভব নয়। সব কিছুর আগে নিজের প্রতি আস্থা রাখুন।

জাগো নিউজ: প্রশাসন ক্যাডারে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
মো. রুকুনুজ্জামান: আমি চাই মানুষের সবচেয়ে কাছাকাছি থাকতে। একজন প্রশাসক হিসেবে শুধু ফাইলপত্রে সীমাবদ্ধ না থেকে মাঠপর্যায়ে মানুষের সমস্যার সমাধান করতে চাই। আমার লক্ষ্য—জনবান্ধব, সৎ এবং জবাবদিহিমূলক প্রশাসনিক কর্মকর্তা হওয়া।

জাগো নিউজ: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
মো. রুকুনুজ্জামান: আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা স্পষ্ট—সততা, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেমকে মূল ভিত্তি করে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখা। প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে স্বচ্ছতা বজায় রাখা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া এবং মানুষের আস্থা অর্জন করাই হবে আমার কাজের মূল লক্ষ্য।

এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।