বিসিবি নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার অল্প কিছুক্ষণ পরই নব নির্বাচিত সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল চলে আসলেন হোটেল সোনারগাঁও প্যান প্যাসিফিকের দোতলার ‘পদ্মায়’ জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতে। একা নয়। নব নির্বাচিত সহ সভাপতি ফারুক আহমেদ এবং সাখাওয়াত হোসেনও ছিলেন সঙ্গে। পাশে দেখা গেল নব নির্বাচিত পরিচালক নাজমুল আবেদিন ফাহিম ও খালেদ মাসুদ পাইলটকেও।
মোটকথা বিজয়ী হওয়ার পর নিজেরা বসে সভাপতি ও সহ সভাপতি নির্বাচন করেই মিডিয়ার সাথে কথা বলতে সদলবলে চলে আসেন বিসিবির নতুন সভাপতি। তিনি এসেছিলেন ফারুক আহমেদের পরিবর্তে।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ফারুক আহমেদকে সরিয়ে বিসিবি প্রধান হিসেবে বুলবুলকে বেছে নেন। কাকতালীয়ভাবে সেই দুজন এখন বিসিবিতে। বুলবুল সভাপতি। আর খেলোয়াড়ী জীবনে তার সিনিয়র ও ক্যাপ্টেন ফারুক আহমেদ সহ-সভাপতি। আর বুলবুল সভাপতি। তাদের দু’জনকে একসাথে ৪ বছর কাজ করতে হবে। এটা কি তাদের একসঙ্গে চলায় ও নতুন পথে হাঁটায় কোন সমস্যার উদ্রেক ঘটাবে?
এ সময়োচিত প্রশ্নের জবাবে বুলবুল প্রথমেই জানিয়ে দিলেন, ‘আমরা অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে যাত্রা শুরু করেছি। তার প্রমাণ হলো সভাপতি হিসেবে আমার নাম প্রস্তাব করেন ফারুক ভাই। আর আমি ফারুক ভাইয়ের নাম প্রস্তাব করি সহ-সভাপতি হিসেবে। আমার বিশ্বাস আমরা একসঙ্গে চলতে ফিরতে কোনই সমস্যা হবে না। আমরা সবাই মিলে একসাথে ক্রিকেটকে একটা লক্ষ্যে পৌঁছাতে আপ্রাণ চেষ্টা করবো।’
বলে রাখা ভাল, ফারুক আহমেদ বোর্ড প্রধান হওয়ার পরই বিসিবি নির্বাচনে সভাপতি পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন; কিন্তু প্রাথমিকভাবে বুলবুলের মধ্যে সে লক্ষ্য ও অভিলাস চোখে পড়েনি। প্রথমে বোঝাই যায়নি যে বুলবুল বিসিবি প্রধান পদে নির্বাচন করতে পারেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি সভাপতি পদে নির্বাচন করলেন, জিতলেন এবং বিসিবির ২০তম সভাপতি হিসেবে নতুন যাত্রাও শুরু করলেন।
হঠাৎ এমন কি হলো যে বুলবুল এবার চার বছরের জন্য বোর্ড সভাপতি হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করলেন? সংবাদ সম্মেলনে উঠলো এ প্রশ্ন। বিসিবি নতুন সভাপতির রসবোধ মাখা জবাব, ‘ক্রিকেটের উন্নয়নের প্রেমে পড়ে গেছি। তাই থেকে যাবার সিদ্ধান্ত।’
তিনি আইসিসির ডেভেলপমেন্ট অফিসারের চাকরি ছেড়ে বিসিবিতে এসেছিলেন। ভাবা হচ্ছিল সেটা অল্প সময়ের জন্য; কিন্তু এখন তিনি আগামী ৪ বছরের জন্য বিসিবি প্রধান। বিসিবিতে সভাপতি পদে কোন বেতন, পারিশ্রমিক নেই। তাকে অনারারি হিসেবে কাজ করতে হবে। সেটা কিভাবে দেখছেন?
বুলবুলের জবাব, ‘ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্টের পদ সবসময় অনারারি (বিনা পারিশ্রমিকের) ছিল। সেটার কোনো ব্যতিক্রম এখনও হয়নি। সেই ব্যাপারে এখনও চিন্তা করিনি। ক্রিকেটটা একটা আমানত হিসেবে আমরা পেয়েছি। (আইসিসির) চাকরি আমি ছেড়ে এসেছি। তাই সেটা নিয়ে আর ভাবছি না। এখন ফোকাস শুধু বাংলাদেশ ক্রিকেট ও বাংলাদেশ ক্রিকেটকে সার্ভিস দেওয়া। এটা একটা জার্নির অংশ ধরে নিয়েছি। বাংলাদেশ ক্রিকেটের ডেভেলপমেন্টের প্রেমেও পড়ে গিয়েছি। স্বল্প মেয়াদের জন্য এসেছিলাম। সেটাই সবসময়ের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু যখন ট্রিপল সেঞ্চুরি প্রোগ্রামের মাধ্যমে ছোট ছোট কাজ শুরু করলাম এবং সাফল্যগুলো দেখতে পেলাম, সেই লোভটা আমি ছাড়তে পারিনি এবং সেই লক্ষ্যে আমার দেশকে আরও সার্ভ করার জন্য আমি রয়ে গেছি।’
বিসিবি নির্বাচনে যারা অংশ নেননি। বয়কট করে সরে গেছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই আছেন, যারা দেশের ক্রিকেটের সাথে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। তাদের ব্যাপারে কি ভাবছেন? বুলবুলের জবাব, ‘দরকার হলে আমরা সবার কাছে যাব। সহ-সভাপতি ফারুক আহমেদের কথা, আমাদের সবার লক্ষ্যই এক। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নেয়া। এখানে ক্ষুদ্র স্বার্থ গৌন।’
এআরবি/আইএইচএস
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।
এডমিন 













