সিলেট-ঢাকা ও সিলেট-কক্সবাজার রেলপথে দুটি নতুন ট্রেন চালুসহ ৮ দফা দাবিতে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া জংশন স্টেশনে রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন স্থানীয়রা।
শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। পরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে আন্দোলনকারীরা কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন।
এর আগে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি দলের বৈঠক হয়।
বৈঠকে কর্মকর্তারা জানান, সব আন্তঃনগর ট্রেনে দুটি করে অতিরিক্ত বগি সংযোজন এবং উন্নত ইঞ্জিন স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ডিসেম্বরের মধ্যে বন্ধ রেলস্টেশনগুলো চালু ও সিলেট-আখাউড়া সেকশনে দুটি লোকাল ট্রেন চালুর আশ্বাস দেন তারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ‘আট দফা দাবি বাস্তবায়ন আন্দোলন’ সংগঠনের মুখ্য সমন্বয়ক ও কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম আতিকুর রহমান।
তিনি বলেন, বৈঠকে রেলের কর্মকর্তারা সব আন্তঃনগর ট্রেনে দুটি করে অতিরিক্ত বগি সংযোজন ও ট্রেনে উন্নত ইঞ্জিন স্থাপনের কথা বলেছেন। আজমপুর স্টেশনের পর অন্য স্টেশনে আন্তঃনগর পারাবত ও কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতি বন্ধে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেবেন। ডিসেম্বর মাসের মধ্যে বন্ধ রেলস্টেশন চালু ও সিলেট-আখাউড়া সেকশনে দুটি লোকাল ট্রেন চালু করা হবে। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কুলাউড়া থেকে সিলেট রেল স্টেশন পর্যন্ত আন্তঃনগর পারাবত, উপবন ও কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনে ৪০ আসনবিশিষ্ট একটি করে বগি দেওয়া হবে।
রেল বিভাগ জানায়, সিলেট-আখাউড়া রেলপথ সংস্কারে এক হাজার ৭৩৯ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। চলতি নভেম্বর মাসে কাজের দরপত্র আহ্বান করা হবে। এ ছাড়া ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে সিলেট-ঢাকা ও সিলেট-কক্সবাজার রেলপথে দুটি নতুন ট্রেন চালু হবে।
আন্দোলনকারীদের সূত্রে জানা গেছে, কর্মসূচি সফল করতে সকাল থেকেই লোকজন লাল পতাকা হাতে নিয়ে কুলাউড়া রেলস্টেশনে জড়ো হতে থাকেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও শ্রমিক সংগঠনের ব্যানারে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে যোগ দেন তারা।
এ সময় কুলাউড়ায় আট দফা দাবি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক এম আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া উপজেলা) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী আবেদ রাজা, জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এম সাহেদ আলী প্রমুখ।
আট দফা দাবিগুলো হলো- ঢাকা-সিলেট রেলপথে অনুমোদিত টাঙ্গুয়ার এক্সপ্রেস দ্রুত চালুসহ সিলেট-ঢাকা, সিলেট-কক্সবাজার রেলপথে দুটি স্পেশাল ট্রেন চালু; আখাউড়া-সিলেট রেলপথ সংস্কার ও ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনে উন্নীতকরণ; আখাউড়া-সিলেট সেকশনে একটি লোকাল ট্রেন চালু; আখাউড়া-সিলেট সেকশনে সব বন্ধ স্টেশন চালু; কুলাউড়া জংশন ও শ্রীমঙ্গল স্টেশনে বরাদ্দকৃত আসনসংখ্যা বৃদ্ধি; সিলেট-ঢাকাগামী আন্তঃনগর কালনী ও পারাবত ট্রেনের আযমপুরের পর ঢাকা অভিমুখী সব স্টেশনের যাত্রাবিরতি প্রত্যাহার; সিলেটের সঙ্গে চলাচলকারী ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় রোধে ত্রুটিমুক্ত ইঞ্জিন যুক্ত এবং যাত্রীদের চাহিদা অনুপাতে প্রতিটি ট্রেনে অতিরিক্ত বগি সংযোজন করা।
কুলাউড়া স্টেশনের স্টেশনমাস্টার রোমান আহমদ জানান, অবরোধের কারণে ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন শায়েস্তাগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল স্টেশনে কিছু সময় আটকা পড়ে। অবরোধ শুরুর আগে সকাল সাড়ে ৭টায় সিলেট থেকে ঢাকাগামী কালনী এক্সপ্রেস ট্রেন কুলাউড়া স্টেশন ছেড়ে যায়।
ওমর ফারুক নাঈম/এনএইচআর/জেআইএম
এডমিন 












