রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে বিপুল ব্যবধানে জয় পেয়েছেন ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ প্যানেলের প্রার্থী সালাউদ্দিন আম্মার। তিনি ১১ হাজার ৪৯৭টি ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শিবির সমর্থিত প্যানেলের ফজলে রাব্বি ফাহিম রেজা পেয়েছেন পাঁচ হাজার ৭২৭ ভোট।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের শক্ত অবস্থান থাকা সত্ত্বেও বিপুল ভোটে আম্মারের জয় নিয়ে ক্যাম্পাস ও ফেসবুকে চলছে নানা আলোচনা।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, আম্মার দলমতের ঊর্ধ্বে গিয়ে ভোট পেয়েছেন। এতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও পোষ্য কোটা আন্দোলনে তার ভূমিকা ভোটে প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন তারা।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ বলছেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগ আম্মারকে নিয়ে বেশি উচ্ছ্বসিত। রাজনীতি থেকে মুক্ত এসব শিক্ষার্থী আম্মারের জন্য কাজ করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের একজন শিক্ষার্থী জাগো নিউজকে বলেন, ‘আম্মারের নিজস্ব ভোট ব্যাংক আছে। শিবিরের কিছু সমর্থক প্যানেল ধরে ভোট দিলেও জিএসব পদে তারা আম্মারকে বেছে নিয়েছেন।’
কে এই আম্মার
কোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরে রাজশাহীতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ছিলেন সালাউদ্দিন আম্মার। সরকার পতনের পরও আলোচনা-সমালোচনায় ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক এ সমন্বয়ক। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যে কোনো আন্দোলনে তার সরব উপস্থিতি দেখা গেছে।
সালাউদ্দিন আম্মার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এর আগে তিনি ঢাকার তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা থেকে আলিম পাস করেন। তার গ্রামের বাড়ি খুলনায়।
শিক্ষার্থীরা জানান, সালাউদ্দিন আম্মার বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছেন মূলত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে। বয়সে তরুণ হওয়ায় সহজে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে পরিচিতি পান তিনি।
নির্বাচনের আগে এক সাক্ষাৎকারে আম্মার জাগো নিউজকে বলেছিলেন, “আমার বাবা জামায়াতের রাজনীতি করেন। আমি তা’মীরুল মিল্লাত মাদরাসায় পড়েছি। পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে বেড়ে ওঠা। এজন্য আমি নিজেকে ‘এনভায়রনমেন্টাল (পরিবেশগত) শিবির’ মনে করি। পরিবার থেকে জামায়াত বা শিবিরের পরিবেশ পেয়েছি। যেখানে পড়ালেখা করেছি, সেই তা’মীরুল মিল্লাতে তো সবকিছুই হয় শিবিরের হাত ধরে।”
‘কিন্তু কখনো কোনো বিষয়ে বায়াসড বা ইথিক্যাল জায়গা থেকে একেবারে টোটালি শিবিরকে অ্যাকসেপ্ট করতে হবে, তা করিনি। তাদের সিলেবাসে লেখাপড়া করা হয়নি। তাদের পদ-পদবি নিয়ে শিবির হওয়ার যে বিষয়গুলো, সেটাতে যুক্ত হইনি’, যোগ করেন আম্মার।
আরএএস/এসআর/এএসএম
এডমিন 














