০৯:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাকসু তহবিলের ২২ বছরের টাকার হিসাব নেই রাবি প্রশাসনের কাছে

  • এডমিন
  • আপডেট সময়ঃ ১২:০১:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫
  • 1

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) তহবিলের গত ২২ বছরের টাকার হিসাব প্রশাসনের কাছে নেই বলে অভিযোগ করেছেন সহসভাপতি (ভিপি) মোস্তাকুর রহমান জাহিদ।

বুধবার (৫ নভেম্বর) রাকসু ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।

মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, রাকসু নবনির্বাচিত প্রতিনিধিরা দায়িত্ব গ্রহণ করলেও ফান্ডের পূর্ণাঙ্গ হিসাব পাওয়া যায়নি। ২০১৩ সালের আগের থেকে ২২ বছরের ফান্ডের হদিস নেই প্রশাসনের কাছে। অন্যদিকে কেনো হদিস নেই- এ বিষয়ে গাছাড়া প্রশাসন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাকসুর সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) সালমান সাব্বির।

তিনি বলেন, শপথ গ্রহণের পর গতকাল রাকসু প্রথম কার্যনির্বাহী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত সভায় অগ্রাধিকারভিত্তিতে কয়েকটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। সিদ্ধান্তগুলো মধ্যে অন্যতম হলো রাকসুর তহবিলকে ব্যবহার উপযোগী করা। রাকসুর মেয়াদকাল ১ বছর। আমরা দায়িত্ব পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তড়িৎ গতিতে ইশতেহারগুলো পূরণ করতে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করি। কিন্তু এগুলো বাস্তবায়নের জন্য রাকসু তহবিলে ব্যবহার উপযোগী যে অর্থ প্রয়োজন তা আমরা বুঝিয়ে পাইনি।

সালমান সাব্বির বলেন, মঙ্গলবার প্রথম অধিবেশনে আমরা আশা করেছিলাম বিগত বছরগুলোর ব্যয়ের অডিটসহ রাকসু তহবিলের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে স্পষ্ট জানতে পারবো। কিন্তু রাকসুর বর্তমান সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ আমাদের সেই তথ্য দিতে পারেননি। দীর্ঘ ৩৬ বছর রাকসু অকার্যকর থাকলেও নিয়মিতভাবে রাকসুর কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে রাকসুর সভাপতি এবং কোষাধ্যক্ষ ইচ্ছামতো রাকসু তহবিলের অর্থ অনিয়মিতভাবে বিভিন্নখাতে ব্যয় করেছেন।

এজিএস আরও বলেন, অধিবেশনে এই অর্থ কে, কোথায়, কিভাবে ব্যয় করেছেন এবং কিভাবে ফেরত আনা যায় এ সম্পর্কিত একটি কমিটি গঠিত হয়েছে। এই কমিটি ১৫ তারিখের মধ্যে তাদের কাজ সম্পন্ন করবেন। আমরা এখন পর্যন্ত এই কমিটির ওপর আস্থা রাখতে চাই।

এ বিষয়ে রাকসুর এজিএস সালমান সাব্বির বলেন, রাকসু ফান্ডের টাকা ২০১৩ সালের আগের টাকার হিসাব দিতে পারছে না প্রশাসন। ২০১৩ সালের আগে সভাপতি, কোষাধ্যক্ষ ছিলেন তারা কে কোন খাতে খরচ করেছে সেগুলো ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব চাওয়া হবে।

জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ২০১৩ সালের পর থেকে ব্যাংক স্টেটমেন্ট আছে এবং ২০২১ সাল থেকে অনলাইন হিসাব আছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ১৯৯০ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত প্রায় ২২ বছরের হিসাব নেই। মুজিব শতবর্ষ পালনে প্রশাসন ১২ লাখ টাকা রাকসু ফান্ড থেকে খরচ করেছে। এর আগে ৩ মেয়াদে তারা টাকা নিয়েছে। যার কোনো হদিস নেই। যেহেতু ফান্ডের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। খুব শিগগির সমস্যাগুলোর সমাধান হয়ে যাবে।

রাকসু ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, নির্বাচন হওয়ার পর থেকে আমরা এখনো পূর্ণভাবে কাজ শুরু করতে পারছি না-কারণ রাকসুর তহবিলের হিসাব আমাদের কাছে পরিষ্কারভাবে উপস্থাপন করা হয়নি। মঙ্গলবার আমরা রাকসু তহবিলের অডিট কমিটি পাস করাতে পেরেছি, কিন্তু এটি আরও আগেই করা উচিত ছিল। নির্বাচন যে অনুষ্ঠিত হবে, তা সবারই জানা ছিল; তাই নির্বাচনের আগেই এসব প্রস্তুতি সম্পন্ন থাকলে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দায়িত্ব নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে কার্যক্রম শুরু করতে পারতেন। কিন্তু শুধু তহবিলের হিসাব পেতেই যদি ছয় মাস লেগে যায়, তাহলে বছরে নির্ধারিত সব কার্যক্রম আমরা কীভাবে শেষ করবো এ নিয়েই এখন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ৩৫ বছর পর রাকসু নির্বাচিত হওয়ায় তহবিলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ থাকার কথা, কিন্তু সেই অর্থের কোনো অংশই আমরা পাচ্ছি না। ফলে শিক্ষার্থীদের আস্থা বজায় রেখে যে পরিকল্পনা রাকসু প্রতিনিধিরা হাতে নিয়েছে, তা বাস্তবায়নে এখন শঙ্কা দেখা দিচ্ছে।

উল্লেখ্য, ১৯৮৯-৮৯ সেশনর রাকসুর ১৪তম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ৩৫ বছর পর গত ১৬ অক্টোবর ১৫তম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

মনির হোসেন মাহিন/এনএইচআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।

ট্যাগঃ

রাকসু তহবিলের ২২ বছরের টাকার হিসাব নেই রাবি প্রশাসনের কাছে

রাকসু তহবিলের ২২ বছরের টাকার হিসাব নেই রাবি প্রশাসনের কাছে

আপডেট সময়ঃ ১২:০১:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) তহবিলের গত ২২ বছরের টাকার হিসাব প্রশাসনের কাছে নেই বলে অভিযোগ করেছেন সহসভাপতি (ভিপি) মোস্তাকুর রহমান জাহিদ।

বুধবার (৫ নভেম্বর) রাকসু ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।

মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, রাকসু নবনির্বাচিত প্রতিনিধিরা দায়িত্ব গ্রহণ করলেও ফান্ডের পূর্ণাঙ্গ হিসাব পাওয়া যায়নি। ২০১৩ সালের আগের থেকে ২২ বছরের ফান্ডের হদিস নেই প্রশাসনের কাছে। অন্যদিকে কেনো হদিস নেই- এ বিষয়ে গাছাড়া প্রশাসন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাকসুর সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) সালমান সাব্বির।

তিনি বলেন, শপথ গ্রহণের পর গতকাল রাকসু প্রথম কার্যনির্বাহী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত সভায় অগ্রাধিকারভিত্তিতে কয়েকটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। সিদ্ধান্তগুলো মধ্যে অন্যতম হলো রাকসুর তহবিলকে ব্যবহার উপযোগী করা। রাকসুর মেয়াদকাল ১ বছর। আমরা দায়িত্ব পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তড়িৎ গতিতে ইশতেহারগুলো পূরণ করতে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করি। কিন্তু এগুলো বাস্তবায়নের জন্য রাকসু তহবিলে ব্যবহার উপযোগী যে অর্থ প্রয়োজন তা আমরা বুঝিয়ে পাইনি।

সালমান সাব্বির বলেন, মঙ্গলবার প্রথম অধিবেশনে আমরা আশা করেছিলাম বিগত বছরগুলোর ব্যয়ের অডিটসহ রাকসু তহবিলের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে স্পষ্ট জানতে পারবো। কিন্তু রাকসুর বর্তমান সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ আমাদের সেই তথ্য দিতে পারেননি। দীর্ঘ ৩৬ বছর রাকসু অকার্যকর থাকলেও নিয়মিতভাবে রাকসুর কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে রাকসুর সভাপতি এবং কোষাধ্যক্ষ ইচ্ছামতো রাকসু তহবিলের অর্থ অনিয়মিতভাবে বিভিন্নখাতে ব্যয় করেছেন।

এজিএস আরও বলেন, অধিবেশনে এই অর্থ কে, কোথায়, কিভাবে ব্যয় করেছেন এবং কিভাবে ফেরত আনা যায় এ সম্পর্কিত একটি কমিটি গঠিত হয়েছে। এই কমিটি ১৫ তারিখের মধ্যে তাদের কাজ সম্পন্ন করবেন। আমরা এখন পর্যন্ত এই কমিটির ওপর আস্থা রাখতে চাই।

এ বিষয়ে রাকসুর এজিএস সালমান সাব্বির বলেন, রাকসু ফান্ডের টাকা ২০১৩ সালের আগের টাকার হিসাব দিতে পারছে না প্রশাসন। ২০১৩ সালের আগে সভাপতি, কোষাধ্যক্ষ ছিলেন তারা কে কোন খাতে খরচ করেছে সেগুলো ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব চাওয়া হবে।

জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ২০১৩ সালের পর থেকে ব্যাংক স্টেটমেন্ট আছে এবং ২০২১ সাল থেকে অনলাইন হিসাব আছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ১৯৯০ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত প্রায় ২২ বছরের হিসাব নেই। মুজিব শতবর্ষ পালনে প্রশাসন ১২ লাখ টাকা রাকসু ফান্ড থেকে খরচ করেছে। এর আগে ৩ মেয়াদে তারা টাকা নিয়েছে। যার কোনো হদিস নেই। যেহেতু ফান্ডের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। খুব শিগগির সমস্যাগুলোর সমাধান হয়ে যাবে।

রাকসু ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, নির্বাচন হওয়ার পর থেকে আমরা এখনো পূর্ণভাবে কাজ শুরু করতে পারছি না-কারণ রাকসুর তহবিলের হিসাব আমাদের কাছে পরিষ্কারভাবে উপস্থাপন করা হয়নি। মঙ্গলবার আমরা রাকসু তহবিলের অডিট কমিটি পাস করাতে পেরেছি, কিন্তু এটি আরও আগেই করা উচিত ছিল। নির্বাচন যে অনুষ্ঠিত হবে, তা সবারই জানা ছিল; তাই নির্বাচনের আগেই এসব প্রস্তুতি সম্পন্ন থাকলে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দায়িত্ব নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে কার্যক্রম শুরু করতে পারতেন। কিন্তু শুধু তহবিলের হিসাব পেতেই যদি ছয় মাস লেগে যায়, তাহলে বছরে নির্ধারিত সব কার্যক্রম আমরা কীভাবে শেষ করবো এ নিয়েই এখন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ৩৫ বছর পর রাকসু নির্বাচিত হওয়ায় তহবিলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ থাকার কথা, কিন্তু সেই অর্থের কোনো অংশই আমরা পাচ্ছি না। ফলে শিক্ষার্থীদের আস্থা বজায় রেখে যে পরিকল্পনা রাকসু প্রতিনিধিরা হাতে নিয়েছে, তা বাস্তবায়নে এখন শঙ্কা দেখা দিচ্ছে।

উল্লেখ্য, ১৯৮৯-৮৯ সেশনর রাকসুর ১৪তম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ৩৫ বছর পর গত ১৬ অক্টোবর ১৫তম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

মনির হোসেন মাহিন/এনএইচআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।