০১:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজনৈতিক ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পল্লবীতে কিবরিয়া হত্যা

  • এডমিন
  • আপডেট সময়ঃ ১২:০৩:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
  • 20

রাজধানীর পল্লবী থানা যুবদলের সদস্যসচিব গোলাম কিবরিয়া (৫০) হত্যা মামলায় দুই শীর্ষ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-৪)। গ্রেফতাররা হলেন- হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী মো. মনির হোসেন ওরফে সোহেল ওরফে পাতা সোহেল (৩০) ও মো. সুজন ওরফে বুকপোড়া সুজন (৩৫)।

র‍্যাব বলছে, পল্লবীর রাজনৈতিক কোন্দল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড। হত্যাকাণ্ডটি সুপরিকল্পিত এবং বড় অংকের অর্থের লেনদেন হয়েছে। গ্রেফতার দুজন মিরপুরকেন্দ্রিক গড়ে ওঠা ‘ফোর স্টার গ্রুপ’র সক্রিয় সদস্য।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-৪ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম।

রাজনৈতিক ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পল্লবীতে কিবরিয়া হত্যা

তিনি বলেন, গত ১৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় পল্লবী থানার বিক্রমপুর স্যানিটারি ও হার্ডওয়্যার নামের দোকানে ছয়জন অজ্ঞাতপরিচয় সন্ত্রাসী প্রকাশ্যে পিস্তল দিয়ে বুকে ও পিঠে অতর্কিত গুলি করে পল্লবী থানা যুবদলের সদস্যসচিব গোলাম কিবরিয়াকে হত্যা করেন। এরপর ওই স্থান থেকে পালানোর সময় স্থানীয় জনতার ওপর অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা গুলি করেন। এতে এক রিকশাচালক গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর জখম হন। পরবর্তীসময়ে ছাত্র-জনতা ধাওয়া করে জনি ভূইয়া নামের এক সন্ত্রাসীকে আটক করে পল্লবী থানা পুলিশে সোর্পদ করে।

ঘটনার পরপরই র‌্যাব-৪ এর এক আভিযানিক দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং আনুষঙ্গিক তথ্যাদি বিশ্লেষণ করে। এরপর ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে ছায়া তদন্ত শুরু করে র‌্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় ১৮ নভেম্বর রাতে সাভার থানার বিরুলিয়া এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী মো. মনির হোসেন ওরফে সোহেল ওরফে পাতা সোহেল এবং টঙ্গী পশ্চিম থানার মাজার বস্তি এলাকা থেকে ১৮ মামলার শীর্ষ ও পলাতক সন্ত্রাসী মো. সুজন ওরফে বুকপোড়া সুজনকে গ্রেফতার করা হয়।

আরও পড়ুন
যুবদল নেতা হত্যা, শীর্ষ সন্ত্রাসী ‘পাতা সোহেল’সহ গ্রেফতার ২
দুবাই থেকে ফিরেই কিবরিয়া হত্যার ছক কষেন ‌‌‘পাতা সোহেল’

গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, রাজনৈতিক কোন্দল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ডটি হয়েছে। এটি একটি সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, যাতে বড় অংকের অর্থের লেনদেন হয়। আসামিরা পেশাদার হত্যাকারী এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। পাতা সোহেলের নামে একাধিক হত্যা, ডাকাতি, মাদকসহ পল্লবী থানায় মোট ৮টি মামলা রয়েছে।

রাজনৈতিক ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পল্লবীতে কিবরিয়া হত্যা

গ্রেফতার দুজন মিরপুরকেন্দ্রিক গড়ে ওঠা ফোর স্টার গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। ফোর স্টার গ্রুপ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইব্রাহিম ও মামুন নিয়ন্ত্রিত যেসব এলাকা রয়েছে সেসব এলাকায় এই ফোর স্টার গ্রুপের সদস্যরা সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত ছিলেন।

এক প্রশ্নের জবাবে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব আলম বলেন, সোহেল ওরফে পাতা সোহেল অর্থ সরবরাহ করেছিলেন। তবে তিনি কীভাবে অর্থ পেয়েছেন কিংবা কার কাছ থেকে পেয়েছেন সেটা এখনো পরিষ্কার নয়।

হত্যাকাণ্ডের মোটিভ সম্পর্কে প্রশ্নে র‍্যাব-৪ এর অধিনায়ক বলেন, প্রথমত, মিরপুর এলাকাকেন্দ্রিক আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, মাদক ও অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যকলাপ। দ্বিতীয়ত, রাজনৈতিক কোন্দল। নিহত গোলাম কিবরিয়া একটি রাজনৈতিক দলের সদস্যসচিব এবং মিরপুর এলাকায় রাজনৈতিকভাবে তিনি খুব সক্রিয় ছিলেন। এর আগে গোলাম কিবরিয়ার যাদের সঙ্গে সখ্য ছিল, রাজনৈতিক মেরুকরণের পরে তাদের বিরুদ্ধে তিনি কাজ করছিলেন। বিশেষ করে এলাকায় চাঁদাবাজি ও মাদক কারবারিতে গোলাম কিবরিয়ার সাপোর্ট ছিল না। হয়তো এ কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে।

হত্যাকাণ্ডে মামুনের সম্পৃক্ততা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামুনের সরাসরি সম্পৃক্ততা আছে কি না সে বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। হত্যাকাণ্ডে আন্ডারওয়ার্ল্ডের কানেকশন থাকতে পারে, সবাইকে গ্রেফতার করলে রহস্য উন্মোচিত হবে।

টিটি/কেএসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।

ট্যাগঃ
জনপ্রিয় খবর

বগুড়ার ৭ আসনে ৩৯ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা

রাজনৈতিক ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পল্লবীতে কিবরিয়া হত্যা

আপডেট সময়ঃ ১২:০৩:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫

রাজধানীর পল্লবী থানা যুবদলের সদস্যসচিব গোলাম কিবরিয়া (৫০) হত্যা মামলায় দুই শীর্ষ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-৪)। গ্রেফতাররা হলেন- হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী মো. মনির হোসেন ওরফে সোহেল ওরফে পাতা সোহেল (৩০) ও মো. সুজন ওরফে বুকপোড়া সুজন (৩৫)।

র‍্যাব বলছে, পল্লবীর রাজনৈতিক কোন্দল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড। হত্যাকাণ্ডটি সুপরিকল্পিত এবং বড় অংকের অর্থের লেনদেন হয়েছে। গ্রেফতার দুজন মিরপুরকেন্দ্রিক গড়ে ওঠা ‘ফোর স্টার গ্রুপ’র সক্রিয় সদস্য।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-৪ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম।

রাজনৈতিক ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পল্লবীতে কিবরিয়া হত্যা

তিনি বলেন, গত ১৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় পল্লবী থানার বিক্রমপুর স্যানিটারি ও হার্ডওয়্যার নামের দোকানে ছয়জন অজ্ঞাতপরিচয় সন্ত্রাসী প্রকাশ্যে পিস্তল দিয়ে বুকে ও পিঠে অতর্কিত গুলি করে পল্লবী থানা যুবদলের সদস্যসচিব গোলাম কিবরিয়াকে হত্যা করেন। এরপর ওই স্থান থেকে পালানোর সময় স্থানীয় জনতার ওপর অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা গুলি করেন। এতে এক রিকশাচালক গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর জখম হন। পরবর্তীসময়ে ছাত্র-জনতা ধাওয়া করে জনি ভূইয়া নামের এক সন্ত্রাসীকে আটক করে পল্লবী থানা পুলিশে সোর্পদ করে।

ঘটনার পরপরই র‌্যাব-৪ এর এক আভিযানিক দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং আনুষঙ্গিক তথ্যাদি বিশ্লেষণ করে। এরপর ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে ছায়া তদন্ত শুরু করে র‌্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় ১৮ নভেম্বর রাতে সাভার থানার বিরুলিয়া এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী মো. মনির হোসেন ওরফে সোহেল ওরফে পাতা সোহেল এবং টঙ্গী পশ্চিম থানার মাজার বস্তি এলাকা থেকে ১৮ মামলার শীর্ষ ও পলাতক সন্ত্রাসী মো. সুজন ওরফে বুকপোড়া সুজনকে গ্রেফতার করা হয়।

আরও পড়ুন
যুবদল নেতা হত্যা, শীর্ষ সন্ত্রাসী ‘পাতা সোহেল’সহ গ্রেফতার ২
দুবাই থেকে ফিরেই কিবরিয়া হত্যার ছক কষেন ‌‌‘পাতা সোহেল’

গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, রাজনৈতিক কোন্দল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ডটি হয়েছে। এটি একটি সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, যাতে বড় অংকের অর্থের লেনদেন হয়। আসামিরা পেশাদার হত্যাকারী এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। পাতা সোহেলের নামে একাধিক হত্যা, ডাকাতি, মাদকসহ পল্লবী থানায় মোট ৮টি মামলা রয়েছে।

রাজনৈতিক ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পল্লবীতে কিবরিয়া হত্যা

গ্রেফতার দুজন মিরপুরকেন্দ্রিক গড়ে ওঠা ফোর স্টার গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। ফোর স্টার গ্রুপ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইব্রাহিম ও মামুন নিয়ন্ত্রিত যেসব এলাকা রয়েছে সেসব এলাকায় এই ফোর স্টার গ্রুপের সদস্যরা সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত ছিলেন।

এক প্রশ্নের জবাবে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব আলম বলেন, সোহেল ওরফে পাতা সোহেল অর্থ সরবরাহ করেছিলেন। তবে তিনি কীভাবে অর্থ পেয়েছেন কিংবা কার কাছ থেকে পেয়েছেন সেটা এখনো পরিষ্কার নয়।

হত্যাকাণ্ডের মোটিভ সম্পর্কে প্রশ্নে র‍্যাব-৪ এর অধিনায়ক বলেন, প্রথমত, মিরপুর এলাকাকেন্দ্রিক আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, মাদক ও অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যকলাপ। দ্বিতীয়ত, রাজনৈতিক কোন্দল। নিহত গোলাম কিবরিয়া একটি রাজনৈতিক দলের সদস্যসচিব এবং মিরপুর এলাকায় রাজনৈতিকভাবে তিনি খুব সক্রিয় ছিলেন। এর আগে গোলাম কিবরিয়ার যাদের সঙ্গে সখ্য ছিল, রাজনৈতিক মেরুকরণের পরে তাদের বিরুদ্ধে তিনি কাজ করছিলেন। বিশেষ করে এলাকায় চাঁদাবাজি ও মাদক কারবারিতে গোলাম কিবরিয়ার সাপোর্ট ছিল না। হয়তো এ কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে।

হত্যাকাণ্ডে মামুনের সম্পৃক্ততা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামুনের সরাসরি সম্পৃক্ততা আছে কি না সে বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। হত্যাকাণ্ডে আন্ডারওয়ার্ল্ডের কানেকশন থাকতে পারে, সবাইকে গ্রেফতার করলে রহস্য উন্মোচিত হবে।

টিটি/কেএসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।