শিক্ষা বিস্তারে অবদানের জন্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত ‘দেয়ারওয়ার্ল্ড’ এর বার্ষিক হাই-লেভেল গ্লোবাল এডুকেশন ডিনারে তাকে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কের একটি হোটেলে এই ডিনারের আয়োজন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, শিক্ষা অধিকার নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে বিশ্বের নীতি নির্ধারক ও পরিবর্তন সাধকদের এ অনুষ্ঠানে একত্রিত করা হয়।
অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘আনলক বিগ চেঞ্জ’ পুরস্কার প্রদান। গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা এবং ২০০৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী প্রফেসর ইউনূসকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং শিক্ষার প্রসারে অটল প্রতিশ্রুতির স্বীকৃতি হিসেবে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়।
‘দেয়ারওয়ার্ল্ড’ একটি বৈশ্বিক শিশু-কেন্দ্রিক দাতব্য সংস্থা, যার লক্ষ্য বিশ্বব্যাপী শিক্ষা সংকটের অবসান ঘটিয়ে নতুন প্রজন্মের সম্ভাবনাকে উন্মোচন করা।
জাতিসংঘের গ্লোবাল এডুকেশন বিষয়ক বিশেষ দূত ও যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন এবং ‘দেয়ারওয়ার্ল্ড’ এর চেয়ার ও গ্লোবাল বিজনেস কোয়ালিশন ফর এডুকেশন এর নির্বাহী চেয়ার সারা ব্রাউন অনুষ্ঠানের সহ-আয়োজক ছিলেন। তারা শিক্ষার রূপান্তরমূলক শক্তিকে উদযাপন করেন।
এ সময় অধ্যাপক ইউনূসের পাশাপাশি জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডিকেও সম্মাননা জানানো হয়। তবে ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ ও শিক্ষা অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে প্রফেসর ইউনূসের আজীবনের কাজ উপস্থিতদের কাছে বিশেষভাবে অনুরণিত হয়।
পুরস্কার প্রদানকালে গর্ডন ব্রাউন বলেন, গত ৫০ বছরে দারিদ্র্য থেকে মানুষকে মুক্ত করতে ব্যক্তিগত খাতের আর কোনো প্রকল্প অধ্যাপক ইউনূসের প্রকল্পের চেয়ে বেশি কার্যকর হয়নি।
পুরস্কার গ্রহণ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ঋণ একটি মৌলিক মানবাধিকার, যা খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার সমান গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, যদি আর্থিক ব্যবস্থার দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত করা যায়, তাহলে কেউ আর দরিদ্র থাকবে না। আমি ক্ষুদ্রঋণের সঙ্গে শিক্ষা যুক্ত করেছি, যেন নারীরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে পারেন।
অধ্যাপক ইউনূস তার বক্তব্যে আর্থিক ক্ষমতায়ন ও শিক্ষার সুযোগের আন্তঃসম্পর্ক তুলে ধরেন। তিনি বিশেষ করে নারীদের গল্প শোনান, যারা ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে পরিবারকে দারিদ্র্য থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে সক্ষম হয়েছেন।
তিনি প্রচলিত শিক্ষা মডেলের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, ছোটবেলা থেকেই সৃজনশীলতা ও উদ্যোক্তা মানসিকতা গড়ে তোলার শিক্ষা দিতে হবে। শিশুদের শেখানো উচিত কীভাবে উদ্যোক্তা হতে হয়।
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের ব্যবসাকে কল্যাণের শক্তি হিসেবে ব্যবহার করা শেখানো উচিত। বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটি জায়গা হওয়া উচিত যেখানে মানবসমস্যা সমাধান শুধু উৎসাহিতই নয়, প্রত্যাশিতও হবে।
তিনি যোগ করেন, সব মানবসমস্যার সমাধান ব্যবসার মাধ্যমেই সম্ভব।
এমইউ/ইএ/এএসএম
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।
এডমিন 










