১২:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সেতুর অভাবে ভোগান্তিতে সুনামগঞ্জের তিন উপজেলার ৫ লাখ মানুষ

  • এডমিন
  • আপডেট সময়ঃ ১২:০২:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫
  • 2

সুনামগঞ্জের মহাসিং নদীতে একটি সেতুর অভাবে ভাগ্য বদল হচ্ছে না তিন উপজেলার ৫ লাখ মানুষের। একদিকে ভোগান্তি অন্যদিকে বছরে বছরে উৎপাদিত ফসলের প্রাপ্ত মূল্য না পেয়ে গ্রাম ছাড়ছেন অনেকেই। তবে স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন সরকারের আমলে সেতু নির্মাণে আশ্বাস দিলেও ৫৪ বছরেও হয়নি এর বাস্তবায়ন।

ভাটির জেলা হিসেবে পরিচিত সুনামগঞ্জ। বিশেষ করে এই জেলার দিরাই, শান্তিগঞ্জ ও জগন্নাথপুর উপজেলার অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষের ভাগ্য বদল যেন এখন রূপকথার গল্পের মতো। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাজার মন ধান ও সবজি উৎপাদন করেও তিন উপজেলার প্রবেশমুখ চন্ডডর মহাসিং নদীর ওপর সেতু না থাকায় ফসলের ভালো দাম পাচ্ছেন না কৃষকরা। এতে এই গ্রামগুলোর অধিকাংশ মানুষ ভাগ্য বদলের আশায় গ্রাম ছেড়ে ছুটছেন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

বিশেষ করে এই তিন উপজেলার ৫ লাখ মানুষের আজন্ম দুঃখ হচ্ছে মহাসিং নদী। এই নদীর কারণে আধুনিক যোগাযোগের সুবিধা থেকে বঞ্চিত প্রান্তিক হাওর এলাকার অন্তত ৫০টি গ্রামের মানুষ। বর্ষা কিংবা হেমন্তে সরাসরি সড়কপথে যাতায়াত না করতে পারায় ১২ মাস খেয়া পারাপার ও নৌপথের ওপর নির্ভর করতে হয় স্থানীয়দের। জেলা কিংবা উপজেলা শহরে যেতেও পোহাতে হয় বিড়ম্বনা।

সেতুর কারণে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিসহ সব অর্থনৈতিক সূচকে পিছিয়ে রয়েছে বৃহৎ জনসংখ্যার এই জনপদটি। বর্ষা মৌসুমেও নদী পার হতে গিয়ে ঘটছে নানা দুর্ঘটনা।

এদিকে, মহাসিং নদীর মোহনায় সেতু নির্মাণের দাবিতে সম্প্রতি নদীর তীর এলাকায় মানববন্ধন করেছেন তিন উপজেলার শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা।

তবে স্থানীয়রা জনান, মহাসিং নদীর মোহনায় সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। বিগত সরকারের আমলে সেতু নির্মাণের নামে আশ্বাসের ফুলঝুড়ি পেলেও বাস্তবতার দেখা পাননি তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা আশিক মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, এক সেতুর অভাবে তিন উপজেলার মানুষ অনেক কষ্টে আছে। আমরা চাই দ্রুত যেন মহাসিং নদীতে সেতু নির্মাণ করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা বাবুল মিয়া বলেন, এই তিন উপজেলার মহাসিং নদীর তীরে যে গ্রামগুলো রয়েছে সেখানের উৎপাদিত কৃষিপণ্য গুলো একটি সেতুর অভাবে বিভিন্ন স্থানে পাঠানো সম্ভব হয় না। যার ফলে এই অঞ্চলের অনেক মানুষ ভাগ্য বদলের আশায় রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।

আমরু মিয়া নামে স্থানীয় আরেক বাসিন্দা জাগো নিউজকে বলেন, মহাসিং নদীর মোহনায় সেতু নির্মাণ হলে তিন উপজেলার যোগাযোগে মাইলফলক সৃষ্টির পাশাপাশি বদলে যাবে ৫০ গ্রামের প্রান্তিক পর্যায়ের অর্থনীতি।

সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, মহাসিং নদীতে সেতু নির্মাণের দাবি যেহেতু উঠেছে আমরা তাদের দাবির প্রেক্ষিতে কতৃপক্ষের কাছে পত্র পাঠাবো। এই নদীর মধ্যে সেতু নির্মিত হলে তিন উপজেলার প্রান্তিক পর্যায়ের অর্থনীতি বদলে যাবে।

লিপসন আহমেদ/এএমএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।

ট্যাগঃ

রাকসু তহবিলের ২২ বছরের টাকার হিসাব নেই রাবি প্রশাসনের কাছে

সেতুর অভাবে ভোগান্তিতে সুনামগঞ্জের তিন উপজেলার ৫ লাখ মানুষ

আপডেট সময়ঃ ১২:০২:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫

সুনামগঞ্জের মহাসিং নদীতে একটি সেতুর অভাবে ভাগ্য বদল হচ্ছে না তিন উপজেলার ৫ লাখ মানুষের। একদিকে ভোগান্তি অন্যদিকে বছরে বছরে উৎপাদিত ফসলের প্রাপ্ত মূল্য না পেয়ে গ্রাম ছাড়ছেন অনেকেই। তবে স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন সরকারের আমলে সেতু নির্মাণে আশ্বাস দিলেও ৫৪ বছরেও হয়নি এর বাস্তবায়ন।

ভাটির জেলা হিসেবে পরিচিত সুনামগঞ্জ। বিশেষ করে এই জেলার দিরাই, শান্তিগঞ্জ ও জগন্নাথপুর উপজেলার অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষের ভাগ্য বদল যেন এখন রূপকথার গল্পের মতো। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাজার মন ধান ও সবজি উৎপাদন করেও তিন উপজেলার প্রবেশমুখ চন্ডডর মহাসিং নদীর ওপর সেতু না থাকায় ফসলের ভালো দাম পাচ্ছেন না কৃষকরা। এতে এই গ্রামগুলোর অধিকাংশ মানুষ ভাগ্য বদলের আশায় গ্রাম ছেড়ে ছুটছেন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

বিশেষ করে এই তিন উপজেলার ৫ লাখ মানুষের আজন্ম দুঃখ হচ্ছে মহাসিং নদী। এই নদীর কারণে আধুনিক যোগাযোগের সুবিধা থেকে বঞ্চিত প্রান্তিক হাওর এলাকার অন্তত ৫০টি গ্রামের মানুষ। বর্ষা কিংবা হেমন্তে সরাসরি সড়কপথে যাতায়াত না করতে পারায় ১২ মাস খেয়া পারাপার ও নৌপথের ওপর নির্ভর করতে হয় স্থানীয়দের। জেলা কিংবা উপজেলা শহরে যেতেও পোহাতে হয় বিড়ম্বনা।

সেতুর কারণে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিসহ সব অর্থনৈতিক সূচকে পিছিয়ে রয়েছে বৃহৎ জনসংখ্যার এই জনপদটি। বর্ষা মৌসুমেও নদী পার হতে গিয়ে ঘটছে নানা দুর্ঘটনা।

এদিকে, মহাসিং নদীর মোহনায় সেতু নির্মাণের দাবিতে সম্প্রতি নদীর তীর এলাকায় মানববন্ধন করেছেন তিন উপজেলার শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা।

তবে স্থানীয়রা জনান, মহাসিং নদীর মোহনায় সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। বিগত সরকারের আমলে সেতু নির্মাণের নামে আশ্বাসের ফুলঝুড়ি পেলেও বাস্তবতার দেখা পাননি তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা আশিক মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, এক সেতুর অভাবে তিন উপজেলার মানুষ অনেক কষ্টে আছে। আমরা চাই দ্রুত যেন মহাসিং নদীতে সেতু নির্মাণ করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা বাবুল মিয়া বলেন, এই তিন উপজেলার মহাসিং নদীর তীরে যে গ্রামগুলো রয়েছে সেখানের উৎপাদিত কৃষিপণ্য গুলো একটি সেতুর অভাবে বিভিন্ন স্থানে পাঠানো সম্ভব হয় না। যার ফলে এই অঞ্চলের অনেক মানুষ ভাগ্য বদলের আশায় রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।

আমরু মিয়া নামে স্থানীয় আরেক বাসিন্দা জাগো নিউজকে বলেন, মহাসিং নদীর মোহনায় সেতু নির্মাণ হলে তিন উপজেলার যোগাযোগে মাইলফলক সৃষ্টির পাশাপাশি বদলে যাবে ৫০ গ্রামের প্রান্তিক পর্যায়ের অর্থনীতি।

সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, মহাসিং নদীতে সেতু নির্মাণের দাবি যেহেতু উঠেছে আমরা তাদের দাবির প্রেক্ষিতে কতৃপক্ষের কাছে পত্র পাঠাবো। এই নদীর মধ্যে সেতু নির্মিত হলে তিন উপজেলার প্রান্তিক পর্যায়ের অর্থনীতি বদলে যাবে।

লিপসন আহমেদ/এএমএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।