০৫:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১৮ জুলাই পুলিশ গুলি চালিয়ে অনেককে হত্যা-জখম করে

  • এডমিন
  • আপডেট সময়ঃ ১২:০৭:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • 25

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলায় জবানবন্দি দিচ্ছেন ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের (আপ বাংলাদেশ) আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, গত বছরের ১৮ জুলাই ছাত্র-জনতার ওপর পুলিশ গুলি চালিয়ে অনেককে হত্যা ও জখম করে। এ ছাড়া আহত ব্যক্তিদের বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সেও গুলি করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল ইন্টারনেট সেবা।

রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেলে সাক্ষী এসব কথা বলেন আলী আহসান জুনায়েদ। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই মামলার ৪৮তম সাক্ষী হিসেবে জুনায়েদ এই জবানবন্দি দেন।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের জেরা শেষে আলী আহসান জুনায়েদ জবানবন্দি দেওয়া শুরু করেন। কিছুক্ষণ জবানবন্দি নেওয়ার পর ট্রাইব্যুনাল মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে যান। এরপর আবার তার জবানবন্দি নেওয়ার কথা রয়েছে।

শেখ হাসিনার পাশাপাশি এই মামলার বাকি দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর মধ্যে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে এ মামলায় ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন। আজকে তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।

জবানবন্দিতে আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট রোডের সাদ্দাম মার্কেটের সামনে অনেক আন্দোলনকারী জড়ো হয়। আমিও তাতে যুক্ত হই। সেখান থেকে মিছিলসহকারে আমরা কাজলা ফুটওভার ব্রিজের সামনে গিয়ে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাই। এসময় স্নাইপার রাইফেল দিয়ে আন্দোলনকারীদের টার্গেট করে মাথায় গুলি করা হয়।

আলী আহসান জুনায়েদ আরও বলেন, আমি প্রায় ১৫ জনকে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় অনাবিল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে দেখেছি। ৫ আগস্ট আমরা জানতে পারি যে, বেলা ২টার সময় সেনাপ্রধান জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন। তখন আমরা আন্দোলনকারীরা বুঝতে পারি, শেখ হাসিনা সম্ভবত ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন। আমি হ্যান্ডমাইকে আন্দোলনকারীদের মাঠ ছেড়ে না যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানাই, যাতে দেশে সামরিক শাসন আসতে না পারে সেজন্য সজাগ থাকতে। বেলা আনুমানিক ৩টার সময় সেনাপ্রধান ঘোষণা দেন শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন।

জবানবন্দিতে জুনায়েদ জানান, সেদিন (৫ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত যাত্রাবাড়ী থানার আশপাশ থেকে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালায়। শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য যারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত তাদের সবার বিচার চাই।

এফএইচ/এমএমকে/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।

ট্যাগঃ

১৮ জুলাই পুলিশ গুলি চালিয়ে অনেককে হত্যা-জখম করে

আপডেট সময়ঃ ১২:০৭:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলায় জবানবন্দি দিচ্ছেন ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের (আপ বাংলাদেশ) আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, গত বছরের ১৮ জুলাই ছাত্র-জনতার ওপর পুলিশ গুলি চালিয়ে অনেককে হত্যা ও জখম করে। এ ছাড়া আহত ব্যক্তিদের বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সেও গুলি করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল ইন্টারনেট সেবা।

রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেলে সাক্ষী এসব কথা বলেন আলী আহসান জুনায়েদ। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই মামলার ৪৮তম সাক্ষী হিসেবে জুনায়েদ এই জবানবন্দি দেন।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের জেরা শেষে আলী আহসান জুনায়েদ জবানবন্দি দেওয়া শুরু করেন। কিছুক্ষণ জবানবন্দি নেওয়ার পর ট্রাইব্যুনাল মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে যান। এরপর আবার তার জবানবন্দি নেওয়ার কথা রয়েছে।

শেখ হাসিনার পাশাপাশি এই মামলার বাকি দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর মধ্যে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে এ মামলায় ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন। আজকে তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।

জবানবন্দিতে আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট রোডের সাদ্দাম মার্কেটের সামনে অনেক আন্দোলনকারী জড়ো হয়। আমিও তাতে যুক্ত হই। সেখান থেকে মিছিলসহকারে আমরা কাজলা ফুটওভার ব্রিজের সামনে গিয়ে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাই। এসময় স্নাইপার রাইফেল দিয়ে আন্দোলনকারীদের টার্গেট করে মাথায় গুলি করা হয়।

আলী আহসান জুনায়েদ আরও বলেন, আমি প্রায় ১৫ জনকে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় অনাবিল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে দেখেছি। ৫ আগস্ট আমরা জানতে পারি যে, বেলা ২টার সময় সেনাপ্রধান জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন। তখন আমরা আন্দোলনকারীরা বুঝতে পারি, শেখ হাসিনা সম্ভবত ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন। আমি হ্যান্ডমাইকে আন্দোলনকারীদের মাঠ ছেড়ে না যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানাই, যাতে দেশে সামরিক শাসন আসতে না পারে সেজন্য সজাগ থাকতে। বেলা আনুমানিক ৩টার সময় সেনাপ্রধান ঘোষণা দেন শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন।

জবানবন্দিতে জুনায়েদ জানান, সেদিন (৫ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত যাত্রাবাড়ী থানার আশপাশ থেকে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালায়। শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য যারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত তাদের সবার বিচার চাই।

এফএইচ/এমএমকে/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।