ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বুধবার (৩০ জুলাই) রাজ্যসভায় ‘অপারেশন সিন্দুর’ নিয়ে আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধীদের কড়া ভাষায় জবাব দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, ২২ এপ্রিল থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে কোনো ধরনের ফোনালাপ হয়নি।
তিনি বলেন, আমি তাদের (বিরোধীদের) বলতে চাই, কান খুলে শুনে নিন- ২২ এপ্রিল থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত ট্রাম্প ও মোদীর মধ্যে একটি ফোনকলও হয়নি। ভারত-পাকিস্তান বিষয়ে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতার কোনো সুযোগ নেই এবং এ নিয়ে ভারতের অবস্থান কঠোর ও স্পষ্ট। দুই দেশের মধ্যে যেকোনো আলোচনা হবে কেবল দ্বিপাক্ষিকভাবে ও যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব আনতে হলে সেটি পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পাঠাতে হবে।
জয়শঙ্কর বলেন, অপারেশন সিন্দুর শুরু হওয়ার পর অনেক দেশ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল পরিস্থিতির গুরুত্ব জানতে। আমরা সবাইকে একই বার্তা দিয়েছিলাম যে- ভারত মধ্যস্থতা মেনে নেয় না। পাকিস্তানের সঙ্গে কোনো কিছু হলে, তা হবে কেবল দ্বিপাক্ষিকভাবে। সেই সঙ্গে আমরা পরিষ্কার করে জানিয়েছিলাম, আমরা পাকিস্তানের হামলার জবাব দিচ্ছি ও দিতে থাকবো। যুদ্ধ বন্ধ করতে হলে পাকিস্তানকে অনুরোধ করতে হবে। সেই অনুরোধ কেবল ডিজিএমও’র (ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশনস) মাধ্যমে আসতে পারে।
বক্তব্যের অন্য এক অংশে জয়শঙ্কর কংগ্রেসের সমালোচনা করে বলেন, তারা ইতিহাস নিয়ে ‘অস্বস্তিতে’ থাকে। সিন্ধু পানি চুক্তি অনেক দিক থেকে একটি অনন্য চুক্তি। আমি বিশ্বের আর কোনো এমন চুক্তির কথা জানি না, যেখানে একটি দেশ তার প্রধান নদীগুলোর ওপর নিজের অধিকার ছাড়াই তা অন্য দেশে প্রবাহিত হতে দিয়েছে। আমি যখন এই ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দিচ্ছিলাম, তখন শুনলাম, কিছু মানুষ ইতিহাস শুনতে চায় না। হয়তো সেটি তাদের স্বার্থে আসে না, তারা কেবল কিছু নির্বাচিত ঘটনাই মনে রাখতে পছন্দ করে, বলেন জয়শঙ্কর।
তিনি ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে সিন্ধু চুক্তি নিয়ে সংসদে দেওয়া তার ১৯৬০ সালের বক্তব্যের জন্য দায়ী করেন। জয়শঙ্করের ভাষায়, ১৯৬০ সালের ৩০ নভেম্বর নেহরু বলেছিলেন, এই সংসদ কী ঠিক করবে কত জল বা কত টাকা দেওয়া হবে? কেউ আপত্তি করতেই তিনি বলেন, পাকিস্তানি পাঞ্জাবের স্বার্থে এই চুক্তি করছি- কিন্তু কাশ্মীর, পাঞ্জাব, রাজস্থান বা গুজরাটের কৃষকদের কথা তিনি বলেননি।
জয়শঙ্কর দাবি করেন, নরেন্দ্র মোদী এই ভুলগুলো সংশোধন করেছেন। শুধু সিন্ধু জলচুক্তি নয়, দেশের স্বার্থে আর্টিকেল ৩৭০ নিয়েও কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সূত্র: এনডিটিভি
এসএএইচ