উত্তরাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ হরিপুর-চিলমারী ‘মওলানা ভাসানী সেতু’র আনন্দ টিকল না দুদিনও। উদ্বোধনের দ্বিতীয় রাতেই দুর্বৃত্তের থাবায় চুরি হয়ে গেল ৩১০ মিটার বৈদ্যুতিক তার। এতে সরকারের প্রায় পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে এবং পুরো সেতু নিমজ্জিত হয়েছে অন্ধকারে।
আলোহীন সেতুতে পথচারী ও যানবাহনের চলাচল হয়ে পড়েছে ঝুঁকিপূর্ণ। দুর্ঘটনার আতঙ্কে রাতভর অন্ধকারে পেরোতে হয়েছে স্বপ্নের এই সেতু। উদ্বোধনের পরদিনই এমন ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে—কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর নিরাপত্তা কোথায়?
শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকেলে গাইবান্ধা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী নিশ্চিত করেন, উদ্বোধনের পরদিন রাতেই সেতুর ল্যাম্পপোস্টের বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে ৩১০ মিটার তার কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। এতে সেতুর আলোকসজ্জা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতেই সেতুটি অন্ধকারে ডুবে যায়। স্থানীয়রা ও যাত্রীরা ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেন। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে তার কেটে নেওয়া ল্যাম্পপোস্টগুলোর দৃশ্য।
স্থানীয়রা বলছেন, আলো না থাকায় সেতুতে প্রতিদিন হাজারো মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। দ্রুততম সময়ে ল্যাম্পপোস্টে বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের নাশকতা বা চুরি না হয়, সে জন্য কার্যকর নিরাপত্তা ব্যবস্থারও জোর দাবি উঠেছে।
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, “খোয়া যাওয়া তারের মূল্য পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ জানান, কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ২০ আগস্ট দুপুরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সেতুটি উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর থেকেই হাজারো মানুষ সেতুটি দেখতে ভিড় করছেন। কিন্তু মাত্র এক রাতের ব্যবধানেই সেতুর নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা ফাঁস হয়ে গেল।
এডমিন 












