সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গোৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা আজ রবিবার মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে।
গতকাল শনিবার মণ্ডপে-মন্দিরে পঞ্চমীতে সায়ংকালে অর্থাৎ সন্ধ্যায় বোধনের মাধ্যমেই দক্ষিণায়নের নিদ্রিত দেবী দুর্গার নিদ্রা ভাঙার জন্য বন্দনাপূজা করা হয়। আজ রবিবার মহাষষ্ঠীতে দেবী দুর্গার আমন্ত্রণ ও অধিবাস অনুষ্ঠিত হবে। ভক্তের ভক্তি, নিষ্ঠা ও পূজার আনুষ্ঠানিকতায় মাতৃরূপে দেবী দুর্গা অধিষ্ঠিত হবেন মণ্ডপে মণ্ডপে।
দেবী দুর্গার আগমনে উচ্ছ্বসিত ভক্তকুল। কাদামাটির প্রলেপের ওপর রংতুলির আঁচড়ে দশভুজা দেবী ষষ্ঠীর দিন পাবেন জীবন্ত রূপ। দেবী সেজে উঠবেন অপরূপ সাজে। শঙ্খ, উলুধ্বনি আর মঙ্গলসংগীতে দেবী দুর্গাকে বরণ করে নেবে সনাতন ধর্মাবলম্বী ভক্তরা। শরৎকালের দুর্গাপূজায় এই বোধন করার বিধান রয়েছে। বাঙালির হৃদয়ে শরৎকালের দুর্গার অধিষ্ঠান কন্যারূপে। প্রতিবছর বিভিন্ন বাহনে সপরিবারে শ্বশুরবাড়ি কৈলাস থেকে কন্যারূপে দেবী মর্ত্যলোকে আসেন বাপের বাড়ি বেড়াতে।
ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে বৈঠক হয়েছে। মণ্ডপগুলোর নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বদা দায়িত্ব পালন করবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবক টিম দেওয়ার জন্য প্রস্তাব দিয়েছে। এ বছর উৎসবমুখর পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন করতে পারবে বলে জানান জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট সুশান্ত।
জেলা প্রশাসন ও পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্যমতে, এ বছর বরগুনা জেলায় ১২৯টি মণ্ডপে পূজার আয়োজন চলছে। এরমধ্যে বরগুনা সদরে ২২টি, আমতলীতে ১২টি, তালতলীতে ১১টি, বামনায় ১৪টি, পাথরঘাটায় ৪০টি ও বেতাগীতে ৩০টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
বরগুনা জেলার পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশ বজায় রাখতে জেলা-উপজেলায় সর্বাত্মক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বরগুনা, ভোলা ও খুলনা জেলার কিছু অংশের দায়িত্বে নৌবাহিনীর এরিয়া কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল গোলাম সাদেক বলেন, নৌবাহিনী, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও আনসার বাহিনীর সমন্বয়ে জেলার দুর্গাপূজাকে সার্বজনীন ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপন করতে সকল ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মোঃ শফিউল আলম বলেন, জেলায় মোট ১২৯টি পূজা মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জেলা-উপজেলার পূজা উদযাপন কমিটির প্রতিনিধিদের সাথে পূজো অনুষ্ঠানের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা ও মতবিনিময় হয়েছে। ধর্ম ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ শ্রেণীবিন্যাস করে প্রতিমা তৈরি হওয়া থেকে শুরু করে বিসর্জন দেওয়া পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যা যা করণীয়, জেলা-উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শারদীয় দুর্গোৎসব আজ রবিবার মহাষষ্ঠীতে ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে সূচনা ঘটেছে শারদোৎসবের। পাঁচ দিনের এ আয়োজনে আগামীকাল সোমবার মহাসপ্তমী, মঙ্গলবার মহাষ্টমী, বুধবার মহানবমী ও বৃহস্পতিবার বিজয়া দশমী পূজা। দশমীর দিনে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসবের সমাপ্তি ঘটবে আগামী ২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার।
কুশল/সাএ
এডমিন 












