০৯:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ক্যাফে মনোলগ

  • এডমিন
  • আপডেট সময়ঃ ১২:০৩:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • 1

আজ
শনিবার।
বিকেলে
হাতির
পুলের
দিকে
যাব।
দশ
বছর
আগে
থাকতাম
ওই
দিকটায়।
ওই
এলাকাটার
যে
যে
গলিতে
বাসাভাড়া
করছিলাম,
সেই
গলিগুলো
ধরে
এদিক-ওদিক
ঘুরব।
কত
দিন
যাই
না!

আসলে
ছেলেমেয়েদের
স্কুল
পরিবর্তনের
সাথে
সাথে
বাসা
পরিবর্তন
করেছি
বেশি।
কখনো
কখনো
চড়া
ভাড়ার
কোনো
বাসায়
হয়তো
উঠতে
বাধ্য
হয়েছি।
এক
বছরের
মাথায়
হয়তো
সে
বাসা
ছেড়ে
কম
দামের
বাসা
খুঁজে
নিয়েছি।
কম
দামের
বাসাভাড়ার
বাড়িঅলাদের
ব্যবহার
দেখেছি
ভালো
হয়।
ভাড়াটেদের
ধরে
রাখতে
চায়।

এই
হাতিরপুল
কাঁচাবাজার
থেকে
কত
কত
সময়
তরকারিঅলার
সাথে
খাতির
থাকায়
বাকিতে
তরকারি
কিনেছি।
এই
বাজারের
কসাইরা
বুড়া
গরু
জবাই
করত।
ফলে
গোস্তের
দাম
কম
হাকত।
তাহের
গোশত
বিতান
থেকে
সস্তায়
গরুর
গোস্ত
কিনতাম।
একবারে
বেশি
গোস্ত
নিলে
দাম
কম
রাখত।
বাকিটাকিতে
কিনলে
পয়সার
জন্য
পিড়াপিড়ি
করত
না।
কখনো
কখনো
গরুর
কলিজার
দামে
অল্পস্বল্প
ছাড়
দিত।
পয়সা
দিতে
গেলে
বরং
বলত,
‘আরে
সাহেব,
নিয়া
যান,
আপনের
পয়সা
দেওন
লাগব
না!’

ডাক্তারের
প্রেসক্রিপশনটা
আমার
প্যান্টের
পকেটেই
জড়োসড়ো
হয়ে
আছে।
অ্যাজমাসলটাও
নিতে
হবে।
হাতিরপুল
বাজারের
পশ্চিম
দিকটায়
বড়
একটা
ফার্মেসি
ছিল।
হ্যাঁ,
ওই
দিকটাই
তো
যাচ্ছি।
রহিম
ফার্মেসি।

ওই
তো
আগের
মতোই
আছে।
শুধু
লোকজন
পাল্টে
গেছে।
আমার
জরুরি
ওষুধটা
নিলাম।
পাশে
একজন
কে
যেন
আমাকে
ডাকছে।

‘স্যার,
স্যার!’

‘কে?’
পেছন
ফিরে
দেখি।
চেনা
চেনা
লাগছে।

‘আমি
রফি।’

‘রফি?’

‘এইখেনে
বাদাম
বিক্রি
করি
আমি।
আসেন।
আপনি
আমারতে
বাদাম
কিনতেন।
স্যার,
এখন
কোন
এলাকায়
থাহেন?
আপনার
একটা
খবর
আছে।’

রফি,
হ্যাঁ
এর
কাছ
থেকেই
বাদাম
কিনতাম।

‘তুমি
এখনো
বাদাম
বিক্রি
করো?’

‘স্যার,
এই
কাজটা
ছাড়তি
পারলাম
কনে!
ছাড়তি
কষ্ট
হয়,
মায়া
লাগে।’

রফি
তার
বাদামের
ভ্যানের
দিকে
আমাকে
আসতে
বলে।
আমি
যাই।

সন্ধ্যার
অন্ধকার
সব
দিকে
রাতের
চেহারা
নিয়েছে।
রহিম
ফার্মেসির
পাশেই
তার
বাদামের
ভ্যানটার
কাছে
দুইটা
মেয়েলোক।
জইফ
বুড়ি।
তড়াক
করে
বসা
থেকে
দাঁড়িয়ে
পড়ল।

আমাকে
দেখেই
ওরা
যেন
আকাশের
চান
হাতে
পেল।
বুঝলাম
না।
এত
খুশি
হবার
কী
আছে!
তারা
আমার
কানের
দিকে
আর
মুখের
দিকে
তাকিয়ে
কী
যেন
নিশ্চিত
হয়ে
নিচ্ছে।

আমি
বুঝতে
পারছি
বোধ
হয়।
আমার
ডান
কানটা
জন্মগতভাবেই
বেখাপ্পা
রকমের
ছোট।
তা
ওইটা
ঢাকবার
জন্য
আমি
বড়
চুল
রাখতাম।
আপনা
কাটা
কান
ঢেকে
রাখার
মতো।
বড়
ঝাঁকড়া
চুল
দিয়ে
খুদে
কানটা
মুরগিছানার
মতো
মায়ের
পালকের
আশ্রয়ে
ঢাকা
থাকত।
কখনো
কখনো
বর্ষা
শেষের
পাপড়িখসা
কদমের
মতো
বিশ্রি
বের
হয়ে
পড়ত।
আমার
ডান
গালে
একটা
কাটা
দাগ
আছে।
ছোটবেলায়
রান্নাঘরে
বটিতে
আছাড়
খেয়ে
পড়ে
আমার
গাল
কেটে
যায়!
সে
কী
রক্তপাত!
সেলাই
ব্যান্ডেজ
কত
কী
করতে
হয়েছিল।
সেই
থেকে
ডাবা
একটা
দাগ
আমার
গালে
চির
বাসা
বেঁধেছে।

যে
কারও
পক্ষে
আমার
চেহারা
মনে
রাখা
তাই
খুব
সহজ।
আমার
বদখত
চেহারারাটা
চিনতে
কাউকে
তার
স্মৃতির
অন্ধকার
পৃষ্ঠায়
বেশি
হাতড়াতে
হয়
না।
কিন্তু
এই
দুজন
অপরিচিত
মহিলার
চাওয়া
কী
আমার
কাছে?

আমাকে
তাদের
স্মৃতির
সাথে
মিলায়ে
নিচ্ছে।
হয়তো
আমাকে
চিনত
আগে
কোনোভাবে।

তাদের
একজন
মহিলা
কাঁচুমাচু
বলল,
‘আমার
নাম
আরজুদা।
আপনে
জবান
দিছিলেন,
আমার
কাহিনি
হুনবেন।
কই,
আর
দিকে
পাও
রাখলেন
না,
আর
হুনলেনও
না।’

আমি
বললাম,
‘আজগুবি
আবদার
রাখো
তো।
কবে?
কেন
তোমার
কিসসা
শুনতে
যাব
বা
কেন?’

আরেকজন
বুড়ি
বলল,
‘স্যার
আমাগো
বাড়ি
জামালপুর।
আমরা
ঢাকা
আসি
কয়েক
মাসের
লাইগা।
কিছু
ভিক্ষাটিক্ষা
করি।
তারপর
আবার
চইলা
যাই।
আমার
নাম
তহুরা।
আপনি
আমার
জীবনের
কাহিনি
হুনছেন
একদিন।
আরজুদার
কষ্টের
কাহিনি
আপনারে
হুনাইবে।’

ট্যাগঃ
জনপ্রিয় খবর

ব্যবসায়ী আলী আসগর লবী ৫৬ কোটি টাকার সম্পদের মালিক

ক্যাফে মনোলগ

আপডেট সময়ঃ ১২:০৩:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫

আজ
শনিবার।
বিকেলে
হাতির
পুলের
দিকে
যাব।
দশ
বছর
আগে
থাকতাম
ওই
দিকটায়।
ওই
এলাকাটার
যে
যে
গলিতে
বাসাভাড়া
করছিলাম,
সেই
গলিগুলো
ধরে
এদিক-ওদিক
ঘুরব।
কত
দিন
যাই
না!

আসলে
ছেলেমেয়েদের
স্কুল
পরিবর্তনের
সাথে
সাথে
বাসা
পরিবর্তন
করেছি
বেশি।
কখনো
কখনো
চড়া
ভাড়ার
কোনো
বাসায়
হয়তো
উঠতে
বাধ্য
হয়েছি।
এক
বছরের
মাথায়
হয়তো
সে
বাসা
ছেড়ে
কম
দামের
বাসা
খুঁজে
নিয়েছি।
কম
দামের
বাসাভাড়ার
বাড়িঅলাদের
ব্যবহার
দেখেছি
ভালো
হয়।
ভাড়াটেদের
ধরে
রাখতে
চায়।

এই
হাতিরপুল
কাঁচাবাজার
থেকে
কত
কত
সময়
তরকারিঅলার
সাথে
খাতির
থাকায়
বাকিতে
তরকারি
কিনেছি।
এই
বাজারের
কসাইরা
বুড়া
গরু
জবাই
করত।
ফলে
গোস্তের
দাম
কম
হাকত।
তাহের
গোশত
বিতান
থেকে
সস্তায়
গরুর
গোস্ত
কিনতাম।
একবারে
বেশি
গোস্ত
নিলে
দাম
কম
রাখত।
বাকিটাকিতে
কিনলে
পয়সার
জন্য
পিড়াপিড়ি
করত
না।
কখনো
কখনো
গরুর
কলিজার
দামে
অল্পস্বল্প
ছাড়
দিত।
পয়সা
দিতে
গেলে
বরং
বলত,
‘আরে
সাহেব,
নিয়া
যান,
আপনের
পয়সা
দেওন
লাগব
না!’

ডাক্তারের
প্রেসক্রিপশনটা
আমার
প্যান্টের
পকেটেই
জড়োসড়ো
হয়ে
আছে।
অ্যাজমাসলটাও
নিতে
হবে।
হাতিরপুল
বাজারের
পশ্চিম
দিকটায়
বড়
একটা
ফার্মেসি
ছিল।
হ্যাঁ,
ওই
দিকটাই
তো
যাচ্ছি।
রহিম
ফার্মেসি।

ওই
তো
আগের
মতোই
আছে।
শুধু
লোকজন
পাল্টে
গেছে।
আমার
জরুরি
ওষুধটা
নিলাম।
পাশে
একজন
কে
যেন
আমাকে
ডাকছে।

‘স্যার,
স্যার!’

‘কে?’
পেছন
ফিরে
দেখি।
চেনা
চেনা
লাগছে।

‘আমি
রফি।’

‘রফি?’

‘এইখেনে
বাদাম
বিক্রি
করি
আমি।
আসেন।
আপনি
আমারতে
বাদাম
কিনতেন।
স্যার,
এখন
কোন
এলাকায়
থাহেন?
আপনার
একটা
খবর
আছে।’

রফি,
হ্যাঁ
এর
কাছ
থেকেই
বাদাম
কিনতাম।

‘তুমি
এখনো
বাদাম
বিক্রি
করো?’

‘স্যার,
এই
কাজটা
ছাড়তি
পারলাম
কনে!
ছাড়তি
কষ্ট
হয়,
মায়া
লাগে।’

রফি
তার
বাদামের
ভ্যানের
দিকে
আমাকে
আসতে
বলে।
আমি
যাই।

সন্ধ্যার
অন্ধকার
সব
দিকে
রাতের
চেহারা
নিয়েছে।
রহিম
ফার্মেসির
পাশেই
তার
বাদামের
ভ্যানটার
কাছে
দুইটা
মেয়েলোক।
জইফ
বুড়ি।
তড়াক
করে
বসা
থেকে
দাঁড়িয়ে
পড়ল।

আমাকে
দেখেই
ওরা
যেন
আকাশের
চান
হাতে
পেল।
বুঝলাম
না।
এত
খুশি
হবার
কী
আছে!
তারা
আমার
কানের
দিকে
আর
মুখের
দিকে
তাকিয়ে
কী
যেন
নিশ্চিত
হয়ে
নিচ্ছে।

আমি
বুঝতে
পারছি
বোধ
হয়।
আমার
ডান
কানটা
জন্মগতভাবেই
বেখাপ্পা
রকমের
ছোট।
তা
ওইটা
ঢাকবার
জন্য
আমি
বড়
চুল
রাখতাম।
আপনা
কাটা
কান
ঢেকে
রাখার
মতো।
বড়
ঝাঁকড়া
চুল
দিয়ে
খুদে
কানটা
মুরগিছানার
মতো
মায়ের
পালকের
আশ্রয়ে
ঢাকা
থাকত।
কখনো
কখনো
বর্ষা
শেষের
পাপড়িখসা
কদমের
মতো
বিশ্রি
বের
হয়ে
পড়ত।
আমার
ডান
গালে
একটা
কাটা
দাগ
আছে।
ছোটবেলায়
রান্নাঘরে
বটিতে
আছাড়
খেয়ে
পড়ে
আমার
গাল
কেটে
যায়!
সে
কী
রক্তপাত!
সেলাই
ব্যান্ডেজ
কত
কী
করতে
হয়েছিল।
সেই
থেকে
ডাবা
একটা
দাগ
আমার
গালে
চির
বাসা
বেঁধেছে।

যে
কারও
পক্ষে
আমার
চেহারা
মনে
রাখা
তাই
খুব
সহজ।
আমার
বদখত
চেহারারাটা
চিনতে
কাউকে
তার
স্মৃতির
অন্ধকার
পৃষ্ঠায়
বেশি
হাতড়াতে
হয়
না।
কিন্তু
এই
দুজন
অপরিচিত
মহিলার
চাওয়া
কী
আমার
কাছে?

আমাকে
তাদের
স্মৃতির
সাথে
মিলায়ে
নিচ্ছে।
হয়তো
আমাকে
চিনত
আগে
কোনোভাবে।

তাদের
একজন
মহিলা
কাঁচুমাচু
বলল,
‘আমার
নাম
আরজুদা।
আপনে
জবান
দিছিলেন,
আমার
কাহিনি
হুনবেন।
কই,
আর
দিকে
পাও
রাখলেন
না,
আর
হুনলেনও
না।’

আমি
বললাম,
‘আজগুবি
আবদার
রাখো
তো।
কবে?
কেন
তোমার
কিসসা
শুনতে
যাব
বা
কেন?’

আরেকজন
বুড়ি
বলল,
‘স্যার
আমাগো
বাড়ি
জামালপুর।
আমরা
ঢাকা
আসি
কয়েক
মাসের
লাইগা।
কিছু
ভিক্ষাটিক্ষা
করি।
তারপর
আবার
চইলা
যাই।
আমার
নাম
তহুরা।
আপনি
আমার
জীবনের
কাহিনি
হুনছেন
একদিন।
আরজুদার
কষ্টের
কাহিনি
আপনারে
হুনাইবে।’