আমদানি ও রপ্তানিতে আন্ডার ইনভয়েসিং-ওভার ইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণ করতে না পারাকে সমন্বিত ব্যর্থতা বলে অভিহিত করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত কর ব্যবস্থাপনায় সংস্কার নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে তিনি এই মন্তব্য করেন।
দুর্নীতিকে দেশের কর ব্যবস্থায় বড় বাধা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রকৃত মূল্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি না হলে কমপ্লায়েন্ট প্রতিষ্ঠান ও প্রকৃত করদাতারা ক্ষতিগ্রস্থ হন। জবাবদিহিতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই কর ব্যবস্থায় দুর্নীতি প্রতিরোধ সম্ভব।
এনবিআর চেয়ারম্যান আরও বলেন, আমদানি ও রপ্তানিতে আন্ডার ইনভয়েসিং-ওভার ইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা আমাদের সমন্বিত ব্যর্থতা। বর্তমান যুগে পণ্যের দাম পৃথিবীর কোন প্রান্তে কত তা বোতাম টিপলেই জানা যায়। ঋণপত্র খোলার সময় ব্যাংকও কাস্টমস পরীক্ষা ও যাচাইয়ের মাধ্যমে দাম সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা না থাকলে কর ব্যবস্থাপনায় সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা কঠিন। বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার কারণেই কর প্রশাসনে সুশাসন প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত সহজ হচ্ছে। কর আদায়ের চেয়ে বেশি কর অব্যাহতি দেওয়া হয়। এই আইনগুলো সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে সরকার চাইলেই আর অব্যাহতি দিতে পারবে না। শুধু জাতীয় সংসদ অর্থবিলের মাধ্যমে কর অব্যাহতি দিতে পারবে।
এছাড়া দেশের সর্বস্তরে কর শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ এ সময় বলেন, সবার প্রচেষ্টা থাকলে করনীতি ও কর ব্যবস্থাপনা দুইভাগে বিভক্ত করলে সুফল পাওয়া যাবে। তবে এই সংস্কারে প্রশাসন ক্যাডারের আধিপত্য বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন আয়কর ও কাস্টমস কর্মকর্তারা। সংস্কারের ফলে রাজস্ব খাতের কর্মকর্তারা পদোন্নতি ও পদমর্যাদায় ক্ষতিগ্রস্থ হলে বৈষম্য তৈরি হবে। রাজস্ব প্রশাসনে অতিরিক্ত শাস্তিমূলক পদক্ষেপ ও প্রশাসনিক ভয় বিভাগীয় কার্যক্রমে হতাশা তৈরি করতে পারে। এতে দায়িত্ব পালনে অনীহা বাড়বে। ফলে কর আদায় ব্যহত হয়ে রাজস্ব আদায় কমতে পারে।
রাজস্ব আদায় বাড়াতে ৭টি সুপারিশ করেছে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। এর মধ্যে রয়েছে-করজাল বাড়িয়ে আদায় সহজ করা ও পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন, প্রস্তাবিত রাজস্ব সংস্কার বিষয়ে সবাইকে স্পষ্ট ধারণা দেওয়া, আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের কর্মকর্তাদের যাতে উচ্চতর পদে যেতে বাধা তৈরি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা, কেইস টু কেইস ভিত্তিতে কর অব্যাহতির সুযোগ বন্ধ করা, শুল্কফাঁকি বন্ধে প্রকৃত মূল্যে আমদানি নিশ্চিত করা, করভীতি দূর করে করবান্ধব পরিবেশ তৈরি ও করের টাকার সঠিক ব্যবহার করা।
ছায়া সংসদে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।
এসএম/এএমএ/এমএস