ঋণ অনিয়মে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংকগুলোর মার্জার প্রক্রিয়ায় সরকার বিনিয়োগ করবে এবং সেই বিনিয়োগ লাভসহ ফেরত আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর) মুদ্রানীতি ঘোষণা অনুষ্ঠানে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
গভর্নর বলেন, প্রথম দফায় বিতর্কিত এস আলম গ্রুপের প্রভাবিত পাঁচটি দুর্বল ব্যাংক মার্জারের আওতায় আনা হবে। এ প্রক্রিয়ায় সরকারের পক্ষ থেকে বড় অঙ্কের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে, যা লাভজনক বিনিয়োগ হিসেবে প্রমাণিত হবে।
ড. আহসান এইচ মনসুর আশ্বস্ত করে বলেন, মার্জারের আওতাভুক্ত ব্যাংকগুলোর আমানত সম্পূর্ণ নিরাপদ। গ্রাহকরা তাদের অর্থ ফেরত পাবেন। মার্জারের ফলে এসব ব্যাংকের প্রতি জনগণের আস্থা বাড়বে।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, ২০০৮ সালের বৈশ্বিক আর্থিক সংকটে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে ব্যাংক ও বিমাখাতে বিনিয়োগ করে পরে তা লাভসহ ফেরত পেয়েছিল, তেমনি বাংলাদেশেও জনস্বার্থে সরকার একই ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আরও বলেন, গত এক বছরে আমরা কিছু ব্যাংককে ঘুরে দাঁড়ানোর সময় দিয়েছিলাম। কেউ কেউ ঘুরে দাঁড়ালেও যেগুলো পারেনি, সেগুলোকে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রথম দফা মার্জার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
তিনি বলেন, দুর্বল ব্যাংকিং ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্ব হলো সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে একটি সুসংগঠিত ও স্থিতিশীল ব্যাংকিং খাত গড়ে তোলা।
রপ্তানি বাজার টিকিয়ে রাখতে বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে গভর্নর বলেন, বর্তমানে ডলার সংকট আগের মতো নেই। আমদানি কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখতে ডলার সরবরাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে। বিশেষ করে গার্মেন্টস খাতের সক্ষমতা ধরে রাখতে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানির জন্য ডলার সরবরাহকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের পর বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। তাই আমরা এক্সচেঞ্জ রেট স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করছি, যেন বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ে।
ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিয়োগ ঘিরে অস্থিরতা প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, ব্যাংকের অভ্যন্তরে কোনো স্বার্থান্বেষী মহল বিশৃঙ্খলা তৈরি করলে তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজন অনুযায়ী তদন্ত শুরু করে এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেয়।
বিদেশে অর্থপাচার প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, বর্তমানে অর্থপাচারের প্রবণতা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। বিদেশ থেকে অর্থ ফেরত আনতে সময়সাপেক্ষ হলেও আমরা এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স (এমএলএ) চুক্তির মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করেছি। আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে অর্থ ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।
ইএআর/ইএ