রংপুরের গঙ্গাচড়ায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলার ঘটনায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে পরবর্তীতে দুঃখ প্রকাশ করেছেন উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি জহর লাল দত্ত।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টায় মৌলভীবাজার শহরের চৌমুহনায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, যুব ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট এবং বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের জেলা কমিটি।
সমাবেশে বক্তব্যের এক পর্যায়ে জহর লাল দত্ত ঘটনার উসকানিদাতা হিসেবে মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তার গ্রেফতারের দাবি জানান। এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ইসলামপন্থিদের মধ্যে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। রাতেই মৌলভীবাজার শহরের প্রেসক্লাব মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করে মামুনুল হককে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ জানানো হয়।
পরে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিও বার্তায় জহর লাল দত্ত বলেন, ‘আজকের সমাবেশে উদীচীর সভাপতি হিসেবে যে বক্তব্য দিয়েছি, তা অনাকাঙ্ক্ষিত। আমার মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছে। আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। এটি মন থেকে মুছে ফেলুন। ভবিষ্যতে এমন হবে না।’
ওই বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উদীচী জেলা সভাপতি জহর লাল দত্ত এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট মৌলভীবাজার জেলা সাধারণ সম্পাদক রাজীব সূত্রধর।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ মৌলভীবাজার জেলা সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট মঈনুর রহমান মগনু, উদীচীর কেন্দ্রীয় সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন, জেলা সহসভাপতি রামেন্দ্র চন্দ্র দাস, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের জেলা সংগঠক অ্যাডভোকেট আবুল হাসান, যুব ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনতোষ দাস, ছাত্র ফ্রন্টের সাবেক সভাপতি রেহনোমা রুবাইয়াৎ, জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ নন্দী এবং ছাত্র ইউনিয়নের জেলা সভাপতি জ্যোতিষী মোহন্ত প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, এক কিশোরের ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিতভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরে হামলা চালানো হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আগে থেকেই জানানো হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বরং মাইকিং করে উসকানিমূলক ভাবে জনতা জড়ো করে হামলার পথ তৈরি করা হয়েছে।
তারা অভিযোগ করেন, সরকারের ‘মব তোষণনীতি’ এবং প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার ফলেই এ ধরনের সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা বারবার ঘটছে।
বক্তারা অবিলম্বে গঙ্গাচড়ার হামলাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং পূর্ববর্তী হামলার বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।
ওমর ফারুক নাঈম/এফএ/এমএস