গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বলেছেন, আন্দোলনের সময় ৯ দফার মধ্যে একটিতে শিবির সভাপতি (তৎকালীন সেক্রেটারি) এস এম ফরহাদ ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি রাখতে চেয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে তার সঙ্গে আধাঘণ্টার বেশি সময় তর্ক-বিতর্ক হয়। অবশেষে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে গিয়ে তর্কবিতর্কের অবসান ঘটাতে হয়। আমি তখনো তাকে স্পষ্ট করে বলেছি, ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা আসল সমাধান না, আর রাজনীতি বন্ধ করলে কার লাভ, সেটাও তাকে ধরিয়ে দিয়েছি।’
শনিবার (৯ আগস্ট) বিকেলে ফেসবুক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।
আব্দুল কাদের বলেন, লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি কিংবা রাজনীতি বন্ধ করাও যেহেতু ফিজিবল না, সেজন্য ৫ আগস্ট পরবর্তীতে ভিন্ন কাঠামো ভাববার প্রয়োজন অনুভূত হয়েছে। যদিও ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা গুষ্ঠি তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন, মব ক্রিয়েট করেছেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সফল হতে পারেনি। তাদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরাও এই মবের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে সম্মুখ সারিতে যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন, তিনি পরবর্তীতে শিবিরের ঢাবি শাখার প্রকাশিত কমিটির ছাত্র আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেন! ছাত্র রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাসের আহ্বান জানানো, আন্দোলন করা মুনতাসীর পরবর্তীতে তিতুমীর কলেজ শাখা শিবিরের প্রকাশিত কমিটির সেক্রেটারি হিসেবে আবির্ভূত হলেন! শিবিরের প্রতিটা ইউনিট- ক্যাম্পাস এবং হল কমিটি প্রকাশ করলে এমন অসংখ্য চমক হয়তো আমরা দেখতে পেতাম।
কাদের আরও বলেন, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের এজেন্ডা ফেইল হওয়ার পরবর্তী স্টেপে একপ্রকার ঠিক হলো, শিক্ষার্থীদের দাবী-দাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে হলে এবং একাডেমিক এরিয়ায় রাজনৈতিক কাঠামো ফাংশন করবে না। আমি মনে করি, হলে এবং একাডেমিক এরিয়ায় রাজনীতি না চাওয়ার বিষয়টা প্রকৃতপক্ষে সাধারণ শিক্ষার্থীদেরই দাবি, শিবিরের সাধারণ শিক্ষার্থীদের না। এমন দাবির পেছনের কারণ হচ্ছে শিক্ষার্থীদের বিগত দিনের তিক্ত অভিজ্ঞতা।
শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে হল এবং একাডেমিক এরিয়ায় রাজনীতি ফাংশন না করার ব্যাপারে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যেও একটা অলিখিত সমঝোতা ছিল উল্লেখ করে ৯ দফার ঘোষক বলেন, এই দাবি উত্থাপিত হওয়ার সময়ে শিবিরের ঢাবি নেতৃত্বের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে।
আব্দুল কাদের বলেন, মাঠে যখন ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে জোরালো আন্দোলন হয়, তখন আমাদের পক্ষ থেকে এই ফরমেট প্রস্তাবিত হয় এবং ফরহাদ হোসাইনের সঙ্গে আলোচনা করে এ দাবি স্পষ্ট করা হয়। এ দাবি শিবিরও মেনে নিয়েছে, আমরাও সংগঠনের আত্মপ্রকাশের দিন শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অঙ্গীকার করেছি। অন্যান্য ছাত্রসংগঠনও নীরব সম্মতি দিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের সেন্টিমেন্টের বিরুদ্ধে সরাসরি যায়নি।
এমএইচএ/এনএইচআর/এএসএম