দক্ষিণ ইউরোপজুড়ে ভয়াবহ তাপপ্রবাহের পাশাপাশি দাবানল পরিস্থিতি আরও মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। গ্রিসে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৫২টির বেশি জায়গায় আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রায় পাঁচ হাজার দমকলকর্মী বিভিন্ন স্থানে আগুন নিয়ন্ত্রণে একযোগে কাজ করছেন।
গ্রিসের পর্যটন দ্বীপ কিয়স ও জাকিনথোস থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। পশ্চিম পেলোপোনিসে আগুন পাতরাস শহর পর্যন্ত পৌঁছে বহু ঘরবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও যানবাহন ধ্বংস করেছে। জাকিনথোসে ১৫ কিলোমিটারের বেশি এলাকাজুড়ে জ্বলছে তিনটি আলাদা দাবানল।
আরও পড়ুন>>
দমকল বাহিনীর মুখপাত্র ভাসিলিস ভাথ্রাকোগিয়ানিস জানিয়েছেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে এ পর্যন্ত অন্তত ১৩ জন দমকলকর্মী দগ্ধ বা আহত হয়েছেন। আগামী দিনগুলোতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
গ্রিসের মতো স্পেনেও পরিস্থিতি ভয়াবহ। উত্তর-পশ্চিমের লেওন প্রদেশে চার হাজারের বেশি বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আগুনে এক স্বেচ্ছাসেবক দমকলকর্মী এবং এক ঘোড়াশালার কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। প্রবল বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে স্পেন সরকার।
দেশে দেশে তাপপ্রবাহ
ফ্রান্স, ইতালি, পর্তুগাল, বালকান অঞ্চলসহ ইউরোপের বহু দেশে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। ইতালিতে তাপজনিত কারণে এক শিশু ও এক চার বছরের রোমানিয়ান শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ফ্রান্সে দ্বিতীয় দফায় তাপপ্রবাহ শুরু হওয়ায় হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
মন্টেনিগ্রো, পর্তুগাল এবং তুরস্কেও দাবানল চলছে। মন্টেনেগ্রোতে আগুন নেভানোর সময় পানিবাহী ট্যাংকার উল্টে এক সৈন্য নিহত হয়েছেন। তুরস্কে চানাক্কালে ও ইজমিরসহ কয়েকটি বড় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যেও বছরের চতুর্থ তাপপ্রবাহে তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রিতে পৌঁছেছে। লন্ডনে দুটি বড় আগুনে ১৭ একরের বেশি এলাকা পুড়ে গেছে।
বিজ্ঞানীরা সতর্ক করছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের গ্রীষ্ম আরও গরম ও শুষ্ক হয়ে উঠছে, যা দাবানলের মৌসুমকে দীর্ঘ ও তীব্র করছে।
সূত্র: বিবিসি
কেএএ/