এমনিতে ক্রিকেটে মাথার ইনজুরির ক্ষেত্রে একটা নিয়ম চালু রয়েছে। কোনো ক্রিকেটার মাথায় আঘাত পেলে তাকে কনকাসন করা যায়। তার পরিবর্তে মাঠে নামেন কনকাসন সাব। যিনি পরিবর্তিত ক্রিকেটার হিসেবে ব্যাটিং-বোলিং – দুটিই করতে পারেন।
এবার শুধু মাথায় আঘাত নয়, বড় ধরনের ইনজুরির ক্ষেত্রেও ‘পরিবর্তনের নিয়ম’ চালু করতে যাচ্ছে ভারত। দেশটির ঘরোয়া ক্রিকেটে বড় এই নিয়ম চালু করবে তারা।
আসন্ন মৌসুমে লাল বলের (প্রথম শ্রেণি) ক্রিকেটে কোনো ক্রিকেটার চোট পেয়ে আর খেলতে না পারলে তার পরিবর্তে অন্য ক্রিকেটার নামাতে পারবে দলগুলো। তিনি ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং- সবই করতে পারবেন। তবে ম্যাচ রেফারি অনুমতি দিলেই কেবল পরিবর্তিত ক্রিকেটার নামানো যাবে।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড জানিয়েছে, কোনো ক্রিকেটার যদি ম্যাচ চলাকালীন গুরুতর চোট পান, তখন ‘সিরিয়াস ইনজুরি রিপ্লেসমেন্ট’ (এসআইআর) নিয়ম অনুযায়ী নতুন ক্রিকেটার নামানো যাবে মাঠে। তবে সেই চোট পেতে হবে ম্যাচের সময় এবং ম্যাচের নির্ধারিত জায়গায়।
সম্প্রতি ভারতীয় দলের ইংল্যান্ড সফরে ম্যানচেস্টার টেস্টে পায়ে চোট পেয়েছিলেন রিশাভ পান্ত। ভাঙা পা নিয়েই দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেছিলেন তিনি। পঞ্চম টেস্টে একই কাজ করতে দেখা যায় ইংল্যান্ডের ক্রিস ওকসকেও। তিনি বাঁ-হাতে ‘স্লিং’ পরে একহাতে ব্যাট ধরে ক্রিজে নেমেছিলেন।
তখনই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পরিবর্তিত ক্রিকেটার নামানোর দাবি জোরদার হয়েছিল। ভারতের কোচ গৌতম গম্ভীর স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, তিনি এই নিয়ম চালুর পক্ষে। তবে ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস জানিয়েছিলেন, এই নিয়মে অনেক ফাঁকফোঁকর থাকতে পারে। দলগুলো বাড়তি সুবিধা নিতে পারে।
এসব দাবির প্রেক্ষিতে ভারতই ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মটা চালু করে দিচ্ছে। সম্প্রতি আহমেদাবাদে আম্পায়ারদের সেমিনারে এ নিয়ম নিয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। সৈয়দ মুস্তাক আলি বা বিজয় হাজারে ট্রফির মতো সাদা বলের ক্রিকেটে এখনই এ নিয়ম দেখা যাবে না। আগামী দিনে আইপিএলে দেখা যাবে কি না তাও নিশ্চিত নয়।
এ নিয়ম অনুযায়ী, কোনও ক্রিকেটার চোট পেয়ে বাকি ম্যাচে যদি আর না খেলার মতো অবস্থায় থাকেন, তা হলে ‘এসআইআর’-এর আবেদন করা যাবে। এ ক্ষেত্রে মাঠের আম্পায়াররা সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটারের চোট খতিয়ে দেখে প্রয়োজনে ম্যাচ রেফারি এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন। ওই ক্রিকেটারের দলের ম্যানেজারকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘এসআইআর’-এর আবেদন করতে হবে। যিনি চোট পেয়েছেন, তার সমান দক্ষতা সম্পন্ন কোনও ক্রিকেটারকেই পরিবর্তিত হিসাবে নামানো যাবে।
ম্যাচের আগে দলগুলোকে পরিবর্তিত ক্রিকেটারের একটা তালিকা দিতে হবে। তাদের মধ্যে থেকেই ‘এসআইআর’ হিসাবে কাউকে বেছে নিতে হবে। যদি কোনো দলের উইকেটরক্ষক চোট পান এবং পরিবর্তিত ক্রিকেটারের তালিকায় কোনও উইকেটকিপারের নাম না থাকে, তাহলে ম্যাচ রেফারি বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে তালিকার বাইরে থাকা কোনও উইকেটকিপার নেওয়ার অনুমতি দিতে পারেন।
আইএইচএস/