০১:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গুজবে ক্রেতা সংকটে ‘জেড’ কোম্পানির শেয়ার

  • এডমিন
  • আপডেট সময়ঃ ০৬:০৪:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫
  • 33

উৎপাদন না থাকা কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজার থেকে ডিলিস্ট (তালিকাচ্যুত) করা হচ্ছে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ায় রোববার (২৪ আগস্ট) দেশের শেয়ারবাজারে ‘জেড’ গ্রুপের কোম্পানিগুলোর শেয়ার বড় ধরনের ক্রেতা সংকটে পড়েছে। এতে বেশিরভাগ জেড গ্রুপের শেয়ারের দরপতন হয়েছে। এমনকি দুই ডজন কোম্পানির শেয়ার দিনের সর্বনিম্ন দামে বিক্রির আদেশ আসলেও ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য পড়ে থাকতে দেখা যায়।

ক্রেতা সংকটে পড়া এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আধিক্য দেখা গেছে।তবে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জেড গ্রুপে থাকলেও ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তালিকাচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা নেই। এছাড়া অন্যান্য খাতের প্রতিষ্ঠানের বিষয়েও তালিকাচ্যুত করার কোনো সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।

বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজের লেনদেন কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকা কর্মকর্তা ও বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই বাজারে গুজব ছড়িয়ে পড়ে উৎপাদন বন্ধ থাকা কোম্পানিগুলোকে তালিকাচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে অনেকেই জেড গ্রুপের শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ান। এতে লেনদেন শুরুর অল্প সময়ের মধ্যেই জেড গ্রুপের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম দিনের সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে আসে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকে।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্ত ৪৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ৫ শতাংশের বেশি কমেছে। এর মধ্যে ২৪টি কোম্পানি একদিনে যতটা কমা সম্ভব ততটা কমেছে, যার মধ্যে ২১টিই ‘জেড’ গ্রুপের কোম্পানি। এসব কোম্পানির শেয়ার দিনের সর্বনিম্ন দামে বিপুল বিক্রির আদেশ আসলেও ক্রেতা না থাকায় অনেক বিনিয়োগকারী তাদের শেয়ার বিক্রি করতে পারেননি।এছাড়া ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ‘জেড’ গ্রুপের মোট ৯৬টি কোম্পানির মধ্যে ৭৬টির শেয়ার দাম কমেছে। বিপরীতে দাম বেড়েছে ১৪টির আর ৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

ব্রোকারেজ হাউজের লেনদেন কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত এক কর্মকর্তা বলেন, আমি কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারাও জানান, এ ধরনের গুঞ্জন ছড়িয়েছে। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো- গুজবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার দাম বেশি কমেছে। কিন্তু ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এতেই বোঝা যায়, কোনো চক্র গুজব ছড়িয়ে শেয়ারের দরপতন ঘটিয়েছে।

ডিএসইর এক সদস্য বলেন, বিভিন্ন সময়ে শেয়ারবাজারে নানা ধরনের গুজব ছড়ানো হয়। অনেকদিন বাজারে গুজব ছড়ানো বন্ধ ছিলো। আজ হঠাৎ জেড গ্রুপ নিয়ে গুজব ছড়ানো হয়েছে। এর পিছনে কোনো গ্রুপ থাকলেও থাকতে পারে। বাজারে যখনই গুজব ছড়ায় তখনই বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে যায়, আজও তেমনটি ঘটেছে।

তিনি বলেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানি ডিলিস্ট করার বিষয়ে নতুন কোনো সিদ্ধান্তের তথ্য আমরা পায়নি। আজ যে গুজব ছড়িয়েছে তারও সত্যতা পায়নি। এখন নিয়ন্ত্রক সংস্থা এমন কোনো পরিকল্পনা করছে কি না তারাই ভালো বলতে পারবে। তবে সিদ্ধান্ত যাই হোক তালিকাভুক্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ডিলিস্ট হওয়ার সম্ভাব নেই বললেই চলে।

যোগাযোগ করা হলে ডিএসইর দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি ডিলিস্ট করতে হলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে নির্দেশনা আসতে হয়। বিএসইসি নির্দেশনা দিলে স্টক এক্সচেঞ্জ সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে। উৎপাদন বন্ধ থাকা কোম্পানিগুলোর ডিলিস্ট করার বিষয়ে নতুন কোনো নির্দেশনা বিএসইসি থেকে আসেনি।

শেয়ারবাজারে ছড়িয়ে পাড়া গুজবের বিষয়টি উল্লেখ করে উৎপাদন বন্ধ থাকা কোম্পানি ডিলিস্ট করার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে কি না, জানতে চাইলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি’র পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম জাগো নিউজকে বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।

এমএএস/কেএইচকে

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।

ট্যাগঃ
জনপ্রিয় খবর

গুজবে ক্রেতা সংকটে ‘জেড’ কোম্পানির শেয়ার

আপডেট সময়ঃ ০৬:০৪:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫

উৎপাদন না থাকা কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজার থেকে ডিলিস্ট (তালিকাচ্যুত) করা হচ্ছে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ায় রোববার (২৪ আগস্ট) দেশের শেয়ারবাজারে ‘জেড’ গ্রুপের কোম্পানিগুলোর শেয়ার বড় ধরনের ক্রেতা সংকটে পড়েছে। এতে বেশিরভাগ জেড গ্রুপের শেয়ারের দরপতন হয়েছে। এমনকি দুই ডজন কোম্পানির শেয়ার দিনের সর্বনিম্ন দামে বিক্রির আদেশ আসলেও ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য পড়ে থাকতে দেখা যায়।

ক্রেতা সংকটে পড়া এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আধিক্য দেখা গেছে।তবে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জেড গ্রুপে থাকলেও ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তালিকাচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা নেই। এছাড়া অন্যান্য খাতের প্রতিষ্ঠানের বিষয়েও তালিকাচ্যুত করার কোনো সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।

বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজের লেনদেন কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকা কর্মকর্তা ও বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই বাজারে গুজব ছড়িয়ে পড়ে উৎপাদন বন্ধ থাকা কোম্পানিগুলোকে তালিকাচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে অনেকেই জেড গ্রুপের শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ান। এতে লেনদেন শুরুর অল্প সময়ের মধ্যেই জেড গ্রুপের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম দিনের সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে আসে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকে।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্ত ৪৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ৫ শতাংশের বেশি কমেছে। এর মধ্যে ২৪টি কোম্পানি একদিনে যতটা কমা সম্ভব ততটা কমেছে, যার মধ্যে ২১টিই ‘জেড’ গ্রুপের কোম্পানি। এসব কোম্পানির শেয়ার দিনের সর্বনিম্ন দামে বিপুল বিক্রির আদেশ আসলেও ক্রেতা না থাকায় অনেক বিনিয়োগকারী তাদের শেয়ার বিক্রি করতে পারেননি।এছাড়া ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ‘জেড’ গ্রুপের মোট ৯৬টি কোম্পানির মধ্যে ৭৬টির শেয়ার দাম কমেছে। বিপরীতে দাম বেড়েছে ১৪টির আর ৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

ব্রোকারেজ হাউজের লেনদেন কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত এক কর্মকর্তা বলেন, আমি কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারাও জানান, এ ধরনের গুঞ্জন ছড়িয়েছে। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো- গুজবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার দাম বেশি কমেছে। কিন্তু ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এতেই বোঝা যায়, কোনো চক্র গুজব ছড়িয়ে শেয়ারের দরপতন ঘটিয়েছে।

ডিএসইর এক সদস্য বলেন, বিভিন্ন সময়ে শেয়ারবাজারে নানা ধরনের গুজব ছড়ানো হয়। অনেকদিন বাজারে গুজব ছড়ানো বন্ধ ছিলো। আজ হঠাৎ জেড গ্রুপ নিয়ে গুজব ছড়ানো হয়েছে। এর পিছনে কোনো গ্রুপ থাকলেও থাকতে পারে। বাজারে যখনই গুজব ছড়ায় তখনই বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে যায়, আজও তেমনটি ঘটেছে।

তিনি বলেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানি ডিলিস্ট করার বিষয়ে নতুন কোনো সিদ্ধান্তের তথ্য আমরা পায়নি। আজ যে গুজব ছড়িয়েছে তারও সত্যতা পায়নি। এখন নিয়ন্ত্রক সংস্থা এমন কোনো পরিকল্পনা করছে কি না তারাই ভালো বলতে পারবে। তবে সিদ্ধান্ত যাই হোক তালিকাভুক্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ডিলিস্ট হওয়ার সম্ভাব নেই বললেই চলে।

যোগাযোগ করা হলে ডিএসইর দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি ডিলিস্ট করতে হলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে নির্দেশনা আসতে হয়। বিএসইসি নির্দেশনা দিলে স্টক এক্সচেঞ্জ সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে। উৎপাদন বন্ধ থাকা কোম্পানিগুলোর ডিলিস্ট করার বিষয়ে নতুন কোনো নির্দেশনা বিএসইসি থেকে আসেনি।

শেয়ারবাজারে ছড়িয়ে পাড়া গুজবের বিষয়টি উল্লেখ করে উৎপাদন বন্ধ থাকা কোম্পানি ডিলিস্ট করার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে কি না, জানতে চাইলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি’র পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম জাগো নিউজকে বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।

এমএএস/কেএইচকে

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।