ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসে উৎসবের আমেজ। শুরু হয়েছে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা। প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্যানেল থেকে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে নির্বাচন করছেন তানভীর বারী হামিম।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীম উদদীন হল ছাত্রদলের আহ্বায়ক। ডাকসু নির্বাচন, নির্বাচনী ইশতেহার প্রভৃতি বিষয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেন হামিম। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নিজস্ব প্রতিবেদক হাসান আলী।
জাগো নিউজ: শিক্ষার্থীদের কাছে কী বার্তা নিয়ে যাচ্ছেন। তাদের সাড়া কেমন?
হামিম: আজ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা শুরু হয়েছে। আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মনোনীত প্যানেল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা শুরু করেছি বিকেল থেকে। আমি সকাল থেকেই শুরু করেছি। শিক্ষার্থীদের কাছে ভালো সাড়া পাচ্ছি। বিশেষ করে নির্বাচন নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভেতরে যে একটি অ্যাওয়ারনেস তৈরি করার সেটিও আমরা চেষ্টা করছি, যেন ভোটের দিন শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়ে। এ বিষয়ে আমরা কাজ করছি। শুধু ভোটই চাচ্ছি বিষয়টি এমন নয়।
আরও পড়ুন
জাগো নিউজ: নির্বাচন বাতিলের কোনো ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে মনে করেন?
হামিম: শিক্ষার্থীরা নানান কারণে শঙ্কিত। এর একটি অন্যতম কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বক্তব্য দিচ্ছেন। যেটা দিয়ে মনে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলে নির্বাচন হবে কী হবে না। শিক্ষার্থীদের একটি কনফিউশনও কিন্তু তৈরি হয়েছে এসব বক্তব্যের মাধ্যমে। সুতরাং, আমি চাইবো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা তাদের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে যেন এমন কোনো বক্তব্য না দেন, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভেতর মিথষ্ক্রিয়া তৈরি হয়।
জাগো নিউজ: নির্বাচিত হলে শিক্ষার্থীদের জন্য কী ধরনের কাজ করার পরিকল্পনা আছে?
হামিম: আমি জিএস হলে কাজ করার চেষ্টা করবো। এখানে আমি চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়কে অক্সফোর্ড বানাতে পারবো না। শিক্ষার্থীদের বেসিক নিডস যেটা সেটি নিয়ে কাজ করবো। ফার্স্ট ইয়ার, সেকেন্ড ইয়ারের একজন শিক্ষার্থী ভালো খাবারের সংকটে ভোগে, আবাসন সংকটে ভোগে। ভালো মানের খাবার পায় না। সুতরাং, এই যে বেসিক নিডসগুলো, সেগুলোই হবে মূল কাজের বিষয়। আমি তো এখানে বড় বড় বিল্ডিং বানানোর লাক্সারিয়াস চিন্তা করতে পারবো না। আগে আমার বেসিক নিডস পূরণ করতে হবে। সুতরাং তাদের যে বেসিক নিডস রয়েছে সেগুলো পূরণে আমি সহযোগিতা করবো।
জাগো নিউজ: শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও কর্মক্ষেত্র তৈরিতে কী ভূমিকা রাখতে চান?
হামিম: সঠিক মনিটরিংয়ের অভাবে যেখানে খাদ্যের মান খারাপ সেখানে সঠিক মনিটরিংটা যেন হয় সেজন্য কাজ করবো। এই মনিটরিং টিমে আমরা চেষ্টা করবো বিভিন্ন শিক্ষার্থীকে পার্টটাইম জবের ব্যবস্থা করতে। কেননা আমরা যদি এখানে বাইরে থেকে একটা লোক আনি তা থেকে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে বলে আমি মনে করি না।
একইভাবে ফার্স্ট ইয়ারে একজন শিক্ষার্থী যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে, সে প্রান্তিক অঞ্চল থেকে আসে। সে তখন এক ধরনের মহাসাগরে এসে পড়ে, সে জানে না তার লেখাপড়া কীভাবে করবে। তার স্লাইড বা তার প্রেজেন্টেশন কীভাবে তৈরি করবে। যারা প্রান্তিক অঞ্চল থেকে আসে তাদের কম্পিউটার লিটারেসির হারও কম। আমি চেষ্টা করবো, ফার্স্ট ইয়ারের একজন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন বিনামূল্যে কম্পিউটার লিটারেসি, মাইক্রোসফট এক্সেল, ওয়ার্ড, বেসিক এআই অথবা প্রেজেন্টেশন এবং স্লাইড মেকিংটা যেন বিনামূল্যে শেখানো হয়।
এছাড়া ফার্স্ট ইয়ারের যে অ্যাডভাইজিং টিউটোরিয়াল, যেটা বিভিন্ন প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে আছে, যে ওই ডিপার্টমেন্টের সিনিয়রদের যারা একটু মেধাবী শিক্ষার্থী তাদের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন হয়। যারা ফার্স্ট ইয়ারের দুর্বল শিক্ষার্থী তাদের গাইড করে এবং তাদের সম্মানি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে দেওয়া হয়।
জাগো নিউজ: নারী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ কোনো পরিকল্পনা আছে?
হামিম: নারী শিক্ষার্থীদের জন্য আপনারা দেখেছেন ইতোমধ্যে আমি কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে ভেন্ডিং মেশিন চালু থেকে নারীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন সময় মেডিকেল ক্যাম্প করেছি। এগুলো আমি আমার ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে করেছিলাম। যেটি আমি মনে করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা উচিত। শিক্ষার্থীরা আমাকে ডাকসুতে নির্বাচিত করলে আমি এই শিক্ষার্থীদের ম্যান্ডেট নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে ডাকসুর সার্বিক তত্ত্বাবধানে হলগুলোতে মেডিকেল সেন্টার বা মিনি মেডিকেল সেন্টার চালু করা যায় সে চেষ্টা করব। যেখানে সব সময় একজন চিকিৎসক থাকবেন। কেননা আমাদের রাত ১১টার পর কোনো নারী শিক্ষার্থী যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে, তবুও কিন্তু তাকে বের করতে এক থেকে দেড় ঘণ্টা লম্বা প্রসেস টাইম পার করতে হয়। ফলে সে অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে যায়। এই যে অসামঞ্জস্যগুলো রয়েছে এগুলো পূরণে আমি শিক্ষার্থীদের ম্যান্ডেট নিয়ে নির্বাচিত হলে কাজ করবো।
এমএইচএ/এএসএ/এমএফএ/এমএস
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।
এডমিন 












