০৬:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাত না থাকায় জসিমের জুটছে না এনআইডি কার্ড

  • এডমিন
  • আপডেট সময়ঃ ১২:০৭:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • 19

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার তামলা ইউনিয়নের কদমতলী গ্রামের হানিফ মাতুব্বরের ছেলে জসিম মাতুব্বর (২৬)। তার হাত নেই। পা দিয়ে লিখেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে জসিম এখন ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। আরও সামনে এগিয়ে যেতে চান তিনি। তবে তার চলার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা।

গত তিন বছর ধরে চেষ্টা করেও পাচ্ছেন জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)। ভোটার না হওয়ায় বিভিন্ন কাজ-কর্ম ও সরকারি-বেসরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জন্ম থেকেই জসিমের দুটি হাত নেই, পা দিয়েই চলছে লেখাপড়া ও দৈনন্দিন কাজকর্ম। নিয়মিত পড়াশোনার পাশাপাশি করছেন ব্যবসা। কখনো ফলের ব্যবসা আবার কখনো কাঁচামালের ব্যবসা।

জসিম মাতুব্বর ২০১৬ সালে একটি ভ্যানগাড়ি এবং ২০২২ সালে ৬০ হাজার পুরস্কার পান তৎকালীন জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে। যা জসিমের জীবন চলার পথকে আরও বেগবান করে তোলে। তবে জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তিনি।
বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র এবং নিজের জন্মনিবন্ধন থাকলেও দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য। কিন্তু হাত না থাকায় আঙুলের ছাপ দিতে পারছেন না জসিম।

ভুক্তভোগী জসিম মাতুব্বর অভিযোগ করে বলেন,‌ ‘আমার দুটি হাত নেই, পা দিয়ে লিখে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেছি। এখন আমি সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। অনেক সময় কলেজের কাজসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কাজে বা সেবা পেতে জাতীয় পরিচয়পত্রের দরকার হয়। জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য নির্বাচন কমিশন অফিসে অনেকবার আবেদন করেছি। কিন্তু হাত নেই বলে আঙুলের ছাপ দিতে পারছি না। এই কারণে নাকি জাতীয় পরিচয়পত্র হচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০২৩ সাল থেকে নির্বাচন অফিসে ঘুরছি কিন্তু কোনো কাজই হয়নি। তারা আমাকে অনলাইনে আবেদন করতে বলেছিলেন। একাধিকবার আবেদনও জমা দিয়েছি কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয়নি। এখন আর যাই না, হাল ছেড়ে দিয়েছি।’

জানতে চাইলে নগরকান্দা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শাওন সাগর বলেন, ‘আমি নতুন যোগদান করেছি। যেহেতু ছেলেটির শারীরিক প্রতিবন্ধকতা আছে, কাজেই তার এনআইডি কার্ডটি করে দিতে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।’

এ বিষয়ে নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দবির উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলবো।

এন কে বি নয়ন/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।

ট্যাগঃ

হাত না থাকায় জসিমের জুটছে না এনআইডি কার্ড

আপডেট সময়ঃ ১২:০৭:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার তামলা ইউনিয়নের কদমতলী গ্রামের হানিফ মাতুব্বরের ছেলে জসিম মাতুব্বর (২৬)। তার হাত নেই। পা দিয়ে লিখেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে জসিম এখন ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। আরও সামনে এগিয়ে যেতে চান তিনি। তবে তার চলার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা।

গত তিন বছর ধরে চেষ্টা করেও পাচ্ছেন জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)। ভোটার না হওয়ায় বিভিন্ন কাজ-কর্ম ও সরকারি-বেসরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জন্ম থেকেই জসিমের দুটি হাত নেই, পা দিয়েই চলছে লেখাপড়া ও দৈনন্দিন কাজকর্ম। নিয়মিত পড়াশোনার পাশাপাশি করছেন ব্যবসা। কখনো ফলের ব্যবসা আবার কখনো কাঁচামালের ব্যবসা।

জসিম মাতুব্বর ২০১৬ সালে একটি ভ্যানগাড়ি এবং ২০২২ সালে ৬০ হাজার পুরস্কার পান তৎকালীন জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে। যা জসিমের জীবন চলার পথকে আরও বেগবান করে তোলে। তবে জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তিনি।
বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র এবং নিজের জন্মনিবন্ধন থাকলেও দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য। কিন্তু হাত না থাকায় আঙুলের ছাপ দিতে পারছেন না জসিম।

ভুক্তভোগী জসিম মাতুব্বর অভিযোগ করে বলেন,‌ ‘আমার দুটি হাত নেই, পা দিয়ে লিখে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেছি। এখন আমি সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। অনেক সময় কলেজের কাজসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কাজে বা সেবা পেতে জাতীয় পরিচয়পত্রের দরকার হয়। জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য নির্বাচন কমিশন অফিসে অনেকবার আবেদন করেছি। কিন্তু হাত নেই বলে আঙুলের ছাপ দিতে পারছি না। এই কারণে নাকি জাতীয় পরিচয়পত্র হচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০২৩ সাল থেকে নির্বাচন অফিসে ঘুরছি কিন্তু কোনো কাজই হয়নি। তারা আমাকে অনলাইনে আবেদন করতে বলেছিলেন। একাধিকবার আবেদনও জমা দিয়েছি কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয়নি। এখন আর যাই না, হাল ছেড়ে দিয়েছি।’

জানতে চাইলে নগরকান্দা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শাওন সাগর বলেন, ‘আমি নতুন যোগদান করেছি। যেহেতু ছেলেটির শারীরিক প্রতিবন্ধকতা আছে, কাজেই তার এনআইডি কার্ডটি করে দিতে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।’

এ বিষয়ে নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দবির উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলবো।

এন কে বি নয়ন/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।