০৪:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চলচ্চিত্রপুরস্কার জিতেছিলেন ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর এই নাতি

  • এডমিন
  • আপডেট সময়ঃ ১২:০৬:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫
  • 12

তপন সিনহার সিনেমা ‘জতুর্গৃহ’-এর জন্য সঙ্গীত রচনা করেছিলেন প্রফেসর ধ্যানেশ খান। সেই ছবির আবহসঙ্গীতকার হিসেবে জাতীয় পুরস্কার জিতেছিলেন তিনি। ধ্যানেশ খান সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর নাতি। আজ তার প্রয়াণ দিবস। ১৯৯১ সালের ১১ অক্টোবর মাত্র ৪৯ বছর বয়সে তিনি প্রয়াত হন।

পণ্ডিত ধ্যানেশ খান কিংবদন্তী সরোদ শিল্পী ওস্তাদ আলী আকবর খানের ছেলে। শৈশব থেকেই শুরু হয় তার কঠোর তালিম। দাদা ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর তত্ত্বাবধানে ও বাবা ওস্তাদ আলী আকবর খান ও পিসি সুরবাহার শিল্পী অন্নপূর্ণা দেবীর কাছে সেনী ঘরানার সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম কলাকৌশল ও রাগদারী শিক্ষা গ্রহণ করেন। এই তিন দিকপাল গুরুর সান্নিধ্যে সরোদ বাদনে ধ্রুপদ আঙ্গিক, গায়কী অঙ্গ এবং রাগের পবিত্রতা এক অসাধারণ মিশ্রণ লাভ করেছিল। মাত্র ১৩ বছর বয়সে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে দাদার সঙ্গে যুগলবন্দী পরিবেশন করে সঙ্গীত জগতে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি।

ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতে ধ্যানেশ খানের অবদান অবিস্মরণীয়। মাইহার ঘরানার ঐতিহ্য রক্ষায় ভূমিকা রেখেছেন তিনি। শিল্পী হিসেবে আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করলেও ধ্যানেশ খানের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল শিক্ষকতা। বাবা ওস্তাদ আলী আকবর খান যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হলে আলী আকবর কলেজ অব মিউজিকের কলকাতা শাখার দায়িত্ব নেন তিনি। আমৃত্যু এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বহু আগ্রহী শিক্ষার্থীকে ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত শিক্ষায় দীক্ষিত করেছেন। শিষ্যদের মধ্যে রাগসঙ্গীতের প্রতি নিষ্ঠা তৈরি করাই ছিল তার মূল লক্ষ্য।

পণ্ডিত ধ্যানেশ খানের সরোদ বাদন ছিল বলিষ্ঠ এবং দ্রুতলয়ের কারুকার্যে সমৃদ্ধ। তার নিজস্ব একটি স্বতন্ত্র শৈলী ছিল, যেখানে দ্রুত ও শক্তিশালী ‘ঝালা’ এবং ডান হাতের বলিষ্ঠ ‘প্লাকিং’ বিশেষ প্রভাব ফেলত। শাস্ত্রীয়সঙ্গীত পরিবেশনার পাশাপাশি তিনি তার যুগের প্রখ্যাত শিল্পীদের সঙ্গে যুগলবন্দী করেছেন। চলচ্চিত্র জগতে নেপথ্য সঙ্গীতজ্ঞ হিসেবে অবদান রেখেছেন। পণ্ডিত রবিশঙ্করের সঙ্গীত পরিচালনায়ও কাজ করেছেন তিনি।

ধ্যানেশ খানের প্রবর্তিত ঘরানার নিষ্ঠা এবং শিষ্যদের মধ্যে সঞ্চারিত গভীর সুরজ্ঞান আজও তার অমূল্য উত্তরাধিকার বহন করে চলেছে। তার ছেলে সিরাজ আলী খান বর্তমানে তার সংগীতের ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

আরএমডি

ট্যাগঃ

চলচ্চিত্রপুরস্কার জিতেছিলেন ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর এই নাতি

আপডেট সময়ঃ ১২:০৬:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

তপন সিনহার সিনেমা ‘জতুর্গৃহ’-এর জন্য সঙ্গীত রচনা করেছিলেন প্রফেসর ধ্যানেশ খান। সেই ছবির আবহসঙ্গীতকার হিসেবে জাতীয় পুরস্কার জিতেছিলেন তিনি। ধ্যানেশ খান সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর নাতি। আজ তার প্রয়াণ দিবস। ১৯৯১ সালের ১১ অক্টোবর মাত্র ৪৯ বছর বয়সে তিনি প্রয়াত হন।

পণ্ডিত ধ্যানেশ খান কিংবদন্তী সরোদ শিল্পী ওস্তাদ আলী আকবর খানের ছেলে। শৈশব থেকেই শুরু হয় তার কঠোর তালিম। দাদা ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর তত্ত্বাবধানে ও বাবা ওস্তাদ আলী আকবর খান ও পিসি সুরবাহার শিল্পী অন্নপূর্ণা দেবীর কাছে সেনী ঘরানার সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম কলাকৌশল ও রাগদারী শিক্ষা গ্রহণ করেন। এই তিন দিকপাল গুরুর সান্নিধ্যে সরোদ বাদনে ধ্রুপদ আঙ্গিক, গায়কী অঙ্গ এবং রাগের পবিত্রতা এক অসাধারণ মিশ্রণ লাভ করেছিল। মাত্র ১৩ বছর বয়সে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে দাদার সঙ্গে যুগলবন্দী পরিবেশন করে সঙ্গীত জগতে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি।

ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতে ধ্যানেশ খানের অবদান অবিস্মরণীয়। মাইহার ঘরানার ঐতিহ্য রক্ষায় ভূমিকা রেখেছেন তিনি। শিল্পী হিসেবে আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করলেও ধ্যানেশ খানের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল শিক্ষকতা। বাবা ওস্তাদ আলী আকবর খান যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হলে আলী আকবর কলেজ অব মিউজিকের কলকাতা শাখার দায়িত্ব নেন তিনি। আমৃত্যু এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বহু আগ্রহী শিক্ষার্থীকে ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত শিক্ষায় দীক্ষিত করেছেন। শিষ্যদের মধ্যে রাগসঙ্গীতের প্রতি নিষ্ঠা তৈরি করাই ছিল তার মূল লক্ষ্য।

পণ্ডিত ধ্যানেশ খানের সরোদ বাদন ছিল বলিষ্ঠ এবং দ্রুতলয়ের কারুকার্যে সমৃদ্ধ। তার নিজস্ব একটি স্বতন্ত্র শৈলী ছিল, যেখানে দ্রুত ও শক্তিশালী ‘ঝালা’ এবং ডান হাতের বলিষ্ঠ ‘প্লাকিং’ বিশেষ প্রভাব ফেলত। শাস্ত্রীয়সঙ্গীত পরিবেশনার পাশাপাশি তিনি তার যুগের প্রখ্যাত শিল্পীদের সঙ্গে যুগলবন্দী করেছেন। চলচ্চিত্র জগতে নেপথ্য সঙ্গীতজ্ঞ হিসেবে অবদান রেখেছেন। পণ্ডিত রবিশঙ্করের সঙ্গীত পরিচালনায়ও কাজ করেছেন তিনি।

ধ্যানেশ খানের প্রবর্তিত ঘরানার নিষ্ঠা এবং শিষ্যদের মধ্যে সঞ্চারিত গভীর সুরজ্ঞান আজও তার অমূল্য উত্তরাধিকার বহন করে চলেছে। তার ছেলে সিরাজ আলী খান বর্তমানে তার সংগীতের ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

আরএমডি