চলতি বছর পূজার আগে ১২০০ মেট্রিক টন পদ্মার সুস্বাদু রুপালি ইলিশ ভারতে রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছিল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। গত ৫ অক্টোবর বাংলাদেশের পদ্মার সুস্বাদু রুপালি ইলিশ রপ্তানির সময়সীমা শেষ হয়েছে।
কিন্তু চলতি বছর পূজার আগে ভারতে মোট ১৪৪ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি করা হয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের পার্শ্ববর্তী রাজ্য ত্রিপুরায় গেছে ৩৯ মেট্রিক টন ইলিশ। আর বাদবাকি ইলিশ পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ার পাইকারি মাছের বাজারে এসেছে।

গত ৫ অক্টোবর ইলিশ রপ্তানির সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ায় এই মুহূর্তে আর বাংলাদেশ থেকে কোনো ইলিশ পশ্চিমবঙ্গ আসবে না। তবে বাংলাদেশ থেকে কম ইলিশ আসার কারণে কলকাতাবাসী বেশ হতাশ।
চলতি বছর বাংলাদেশে কম ইলিশ ধরা পড়েছে তাই বেশি পরিমাণে বাংলাদেশের ইলিশ ভারতে আসেনি। এমনটাই জাগো নিউজকে জানিয়েছে হাওড়ার ফিস ইমপোর্টারস এসোসিয়েশনের সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ।

জাগো নিউজকে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার ১২০০ মেট্রিক টন ইলিশ আমাদেরকে দিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশে ইলিশ মাছ কম ধরা পড়েছে। ফলে বেশি মাছ আনা সম্ভব হয়নি। এছাড়া দামও বেশি ছিল। তাই ১২০০ মেট্রিক টনের মধ্যে ১৪৪ মেট্রিক টন মাছ এসেছে। যার মধ্যে প্রায় ৩৯ মেট্রিকটন মাছ ত্রিপুরা গেছে আর বাদবাকি মাছ আমাদের কাছে এসেছে।
সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ আরও বলেন, এবার এত কম মাছ এসেছে যা আগের সব বছরের চেয়ে সবচেয়ে কম। গত বছরও পূজার আগে ৫৭৭ মেট্রিক টন মাছ এসেছে। যাইহোক চলতি বছর বাংলাদেশে মাছ কম ধরা পড়েছে সে কারনে কম মাছ এসেছে এবং দামও অনেক বেশি ছিল। কোথাও প্রতি কেজি ইলিশের দাম ১৯০০ রুপি আবার কোথাও ২০০০ থেকে ২২০০ রুপি দিয়ে মাছ বিক্রি হচ্ছে। যার কারণে অনেকেই কিনছিল না।
তিনি বলেন, মাছ যদি বাংলাদেশে বেশি পরিমাণে ধরা পড়তো, তাহলে ওরা আমাদের কাছে বেশি দাম চাইবে না। এমনিতেই দাম কম পড়বে এটা সরবরাহের চাহিদা, সরবরাহ নেই বলেই তো মাছের এত চাহিদা আছে। চাহিদা থাকলে তো মাছের দাম বেশি হবেই। তবে যেইটুকই মাছ বাংলাদেশ থেকে এখানে এসেছিল তার দাম এই রকমেরই ছিল।
সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ আরও বলেন, শুরু থেকেই বাংলাদেশের মাছের যোগান কম ছিল। ওখানকার ব্যবসায়ীরাও দেখছিল যে মাছ বেশি করে পাঠানো যায় কি যায় না। ওনারা যে মাছ দিয়েছে তাতে প্রমাণ হয় মাছ দিলেই কিন্তু মাছ আসবে না। আগে দেশের লোক খাবে তারপরে মাছ আসবে। কারণ সেখানকার সঙ্গে আপনি প্রতিযোগিতা করতে পারবেন না। ।
তার মতে, বাংলাদেশের ইলিশ দুইপারের বাঙালির মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে। এবার সেভাবে ইলিশ না মেলায় দাম বেড়েছে বাংলাদেশ এবং কলকাতাতেও। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ এসেছে সেটাই অনেক। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে,আগামী বছর সবকিছু ঠিকঠাক থাকবে এবং পদ্মার ইলিশের স্বাদ নিতে পারবে এপার বাংলার বাঙালিরা।

কলকাতার বাজারে বাংলাদেশের ইলিশ না মিললেও বাজার ছেয়ে গেছে গুজরাট এবং মিয়ানমারের ইলিশে। এই মুহূর্তে কলকাতার বাজারে গুজরাটের ইলিশ প্রতি কিলো ৮০০-৯০০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে।আর মিয়ানমারের ইলিশ প্রতি কিলো বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার রুপিতে।
তবে বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশের সঙ্গে গুজরাটের ইলিশের স্বাদ ও গন্ধের কোনো তুলনা হয় না। বাংলাদেশের ইলিশ স্বাদ ও গন্ধে অতুলনীয়। তাই প্রত্যেক বছর পূজার আগে গঙ্গাপাড়ের মানুষেরা অপেক্ষায় থাকে পদ্মার ইলিশের।
ডিডি/টিটিএন
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।
এডমিন 








