‘চুমু’ শুধু ভালোবাসার প্রকাশ নয়, এর পেছনে লুকিয়ে আছে অবাক করা স্বাস্থ্যগুণও। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত চুমু খেলে শুধু মানসিক চাপই কমে না, শরীর থেকেও ঝরে যায় অতিরিক্ত মেদ। এমনকি চুম্বনের মাধ্যমে শরীরে ‘হ্যাপি হরমোন’ নিঃসৃত হয়, যা ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। অর্থাৎ, ভালোবাসার সেই মিষ্টি মুহূর্ত এখন হতে পারে আপনার ফিটনেস ও রোগপ্রতিরোধের প্রাকৃতিক ওষুধ।
ওজন বেড়ে যাওয়া এখন অনেকের কাছেই এক অস্বস্তিকর বাস্তবতা। ডায়েট, ব্যায়াম, নানা ফিটনেস টিপস-সব কিছুই চেষ্টা করে ক্লান্ত অনেকে। কিন্তু জানেন কি? আপনার ভালোবাসার মানুষকে চুমু খাওয়াও নাকি কমাতে পারে শরীরের অতিরিক্ত মেদ! শুনে অবাক লাগলেও, বিজ্ঞান বলছে এই কথাই সত্যি।

ভালোবাসার প্রকাশ হিসেবে চুম্বনের জায়গা অনন্য, কিন্তু এর স্বাস্থ্যগত উপকারিতাও কম নয়। গবেষকরা বলছেন, নিয়মিত চুম্বনে মানসিক চাপ অনেকটা কমে, রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে এবং শরীরের ক্যালোরিও ঝরে যায়। এককথায় চুমু শুধু ভালোবাসা নয়, শরীরচর্চারও এক প্রাকৃতিক উপায়!

গবেষণায় দেখা গেছে, চুম্বনের সময় শরীরে নিঃসৃত হয় ‘হ্যাপি হরমোন’ বা অক্সিটোসিন, যা মানসিক প্রশান্তি আনে এবং খাওয়ার প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার অভ্যাস কমে যায় স্বাভাবিকভাবেই। একই সঙ্গে চুমুর সময় মুখ ও ঘাড়ের প্রায় ৩০টিরও বেশি পেশি সক্রিয় থাকে, যা ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে।

একটানা দুই মিনিট গভীর চুম্বনে ঝরতে পারে প্রায় ৬ ক্যালোরি। আবার দীর্ঘক্ষণ আন্তরিক চুমু খেলে প্রতি মিনিটে ৪–৬ ক্যালোরি পর্যন্ত কমে যেতে পারে বলছেন গবেষকরা।

শুধু ওজনই নয়, নিয়মিত চুম্বন দাঁতের যত্নেও উপকারী। এতে মুখের ভেতর লালা উৎপাদন বেড়ে মুখগহ্বর পরিষ্কার থাকে এবং দাঁতের ক্ষয় রোধ হয়। পাশাপাশি রক্তচলাচল বাড়ায় মুখের ত্বকেও আসে উজ্জ্বলতা। ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বাড়িয়ে চুমু ত্বককে রাখে তরতাজা, বয়সের ছাপ ফেলে দিতে সাহায্য করে।

লস অ্যাঞ্জেলেসের গবেষক জাইয়া কিন্সবাকসহ একাধিক গবেষক জানিয়েছেন, নিয়মিত চুমু মানসিক চাপ কমিয়ে শরীরে ভারসাম্য আনে। তাদের মতে, দিনে অন্তত ৩–৪ বার গভীর ও আন্তরিক চুম্বন করলে শরীর ও মনে আসবে দৃশ্যমান পরিবর্তন। তবে তা হতে হবে এমন ভঙ্গিতে, যাতে মুখের পেশিগুলো সক্রিয়ভাবে কাজ করে। এতে মেদ ঝরার পাশাপাশি মানসিক প্রশান্তিও পাওয়া যায়।

চুমুর এমন উপকারিতা নিয়ে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি প্রকৃতির এক ‘মিষ্টি আশীর্বাদ’। এটি যেমন সম্পর্ককে আরও গভীর করে, তেমনি শরীর ও মনে এনে দেয় ইতিবাচক শক্তি।
সুতরাং, ভালোবাসা প্রকাশের পাশাপাশি চুমুকে ভাবতে পারেন এক প্রাকৃতিক ফিটনেস টিপস হিসেবেও। কারণ যখন ভালোবাসায় মিশে থাকে বিজ্ঞান, তখন শরীরও হাসে, মনও থাকে প্রফুল্ল।

বিশেষজ্ঞরা অবশ্য মনে করিয়ে দিয়েছেন, চুমু খাওয়ার আগে মুখের পরিচ্ছন্নতা ও ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মানা জরুরি। নাহলে এই ‘মিষ্টি ফিটনেস কৌশল’ হয়ে উঠতে পারে উল্টো ক্ষতির কারণও।
তথ্যসূত্র: দ্য অ্যামেরিকান জার্নাল অফ মেডিসিন
জেএস/
এডমিন 












