১২:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ২২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা সমীচীন: শিশির মনির

  • এডমিন
  • আপডেট সময়ঃ ০৬:০০:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
  • 11

তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনর্বহাল চেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের চতুর্থ দিনের শুনানিতে তিনি এ দাবি করেন।

এদিন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এদিন সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে শুনানি শুরু করে মাঝে বিরতি দিয়ে চলে সোয়া একটা পর্যন্ত। পরবর্তী শুনানির জন্য বুধবার (২৯ অক্টোবর) দিন রাখা হয়েছে।

মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, ‘আগামী নির্বাচন যেটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, এ নির্বাচন ত্রয়োদশ সংশোধনীতে উল্লিখিত যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আছে, ওই ব্যবস্থায় হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না। এ-সংক্রান্ত সংবিধানের আগের ৫৮ অনুচ্ছেদে যে পরিস্থিতিতে পদ্ধতিটি প্রয়োগের কথা বলা হয়েছে, সে পরিস্থিতি আপাতত নেই। আগের যে বিধান ছিল সংসদ ভেঙে যাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে— এ সরকার গঠিত হবে। সংসদ ভেঙে গেছে আরও এক বছরের বেশি সময় আগে। বর্তমানে কোনো সংসদ নেই। তাই সংসদ ভাঙারও প্রশ্ন আসে না।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান পদ্ধতিতে অতীতের তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা কার্যকর করার আইনি কোনো বিধান বাংলাদেশে নেই। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্বাচন করার ম্যান্ডেট আছে। নতুন সংসদের সিদ্ধান্তে আগের তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা আগের মতো থেকে যায় অথবা জুলাই সনদে উল্লিখিত নতুন কোনো প্রক্রিয়া প্রবর্তন করা হলে সেই পদ্ধতিতে পরবর্তী সময় থেকে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা কার্যকর হবে।’

আপিল মঞ্জুর করা উচিত, তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা সমীচীন। তবে পর্যবেক্ষণ দেওয়া সমীচীন হবে না, যেহেতু বৃহত্তর সংস্কার প্রক্রিয়া চলমান। জুলাই সনদ হয়েছে, আদেশ হবে, গণভোট হবে। পরবর্তী সংসদে এটি নিয়ে আলোচনা হবে বলেও জানান মোহাম্মদ শিশির মনির।’

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার ধারণা দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি অনন্য ধারণা। এটিকে কেন্দ্র করে দেশে একটি ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল উল্লেখ করে শিশির মনির বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে পুনঃপ্রবর্তনের জন্য আজও সেই ঐকমত্য আছে। তত্ত্বাবধায়ক শাসনব্যবস্থা একটি গ্রহণযোগ্য প্রক্রিয়া, যেটি দেশে বারবার প্রমাণিত হয়েছে। আপিল মঞ্জুর করা উচিত, তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা সমীচীন। তবে পর্যবেক্ষণ দেওয়া সমীচীন হবে না, যেহেতু বৃহত্তর সংস্কার প্রক্রিয়া চলমান। জুলাই সনদ হয়েছে, আদেশ হবে, গণভোট হবে।’

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে ১৪ বছর আগে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে (৪: ৩) রায় দিয়েছিলেন। জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতার পরিবর্তনের পর ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন পৃথক আবেদন (রিভিউ) করেন।

এফএইচ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।

ট্যাগঃ

তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা সমীচীন: শিশির মনির

আপডেট সময়ঃ ০৬:০০:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনর্বহাল চেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের চতুর্থ দিনের শুনানিতে তিনি এ দাবি করেন।

এদিন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এদিন সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে শুনানি শুরু করে মাঝে বিরতি দিয়ে চলে সোয়া একটা পর্যন্ত। পরবর্তী শুনানির জন্য বুধবার (২৯ অক্টোবর) দিন রাখা হয়েছে।

মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, ‘আগামী নির্বাচন যেটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, এ নির্বাচন ত্রয়োদশ সংশোধনীতে উল্লিখিত যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আছে, ওই ব্যবস্থায় হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না। এ-সংক্রান্ত সংবিধানের আগের ৫৮ অনুচ্ছেদে যে পরিস্থিতিতে পদ্ধতিটি প্রয়োগের কথা বলা হয়েছে, সে পরিস্থিতি আপাতত নেই। আগের যে বিধান ছিল সংসদ ভেঙে যাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে— এ সরকার গঠিত হবে। সংসদ ভেঙে গেছে আরও এক বছরের বেশি সময় আগে। বর্তমানে কোনো সংসদ নেই। তাই সংসদ ভাঙারও প্রশ্ন আসে না।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান পদ্ধতিতে অতীতের তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা কার্যকর করার আইনি কোনো বিধান বাংলাদেশে নেই। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্বাচন করার ম্যান্ডেট আছে। নতুন সংসদের সিদ্ধান্তে আগের তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা আগের মতো থেকে যায় অথবা জুলাই সনদে উল্লিখিত নতুন কোনো প্রক্রিয়া প্রবর্তন করা হলে সেই পদ্ধতিতে পরবর্তী সময় থেকে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা কার্যকর হবে।’

আপিল মঞ্জুর করা উচিত, তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা সমীচীন। তবে পর্যবেক্ষণ দেওয়া সমীচীন হবে না, যেহেতু বৃহত্তর সংস্কার প্রক্রিয়া চলমান। জুলাই সনদ হয়েছে, আদেশ হবে, গণভোট হবে। পরবর্তী সংসদে এটি নিয়ে আলোচনা হবে বলেও জানান মোহাম্মদ শিশির মনির।’

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার ধারণা দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি অনন্য ধারণা। এটিকে কেন্দ্র করে দেশে একটি ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল উল্লেখ করে শিশির মনির বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে পুনঃপ্রবর্তনের জন্য আজও সেই ঐকমত্য আছে। তত্ত্বাবধায়ক শাসনব্যবস্থা একটি গ্রহণযোগ্য প্রক্রিয়া, যেটি দেশে বারবার প্রমাণিত হয়েছে। আপিল মঞ্জুর করা উচিত, তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা সমীচীন। তবে পর্যবেক্ষণ দেওয়া সমীচীন হবে না, যেহেতু বৃহত্তর সংস্কার প্রক্রিয়া চলমান। জুলাই সনদ হয়েছে, আদেশ হবে, গণভোট হবে।’

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে ১৪ বছর আগে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে (৪: ৩) রায় দিয়েছিলেন। জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতার পরিবর্তনের পর ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন পৃথক আবেদন (রিভিউ) করেন।

এফএইচ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।