আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক তফসিল ঘোষণার আগেই রাজধানীর অভিজাত এলাকা-গুলশান, বনানী, ভাষানটেক ও ক্যান্টনমেন্টজুড়ে নির্বাচনী উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। ঢাকার ১৭ নম্বর আসনে ইতোমধ্যেই মাঠে নেমে পড়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা, চলছে প্রচারণা, উঠান বৈঠক আর জনসংযোগ।

গুলশান ১ ও ২ নম্বর এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, ব্যারিস্টার আন্দালিভ রহমান পার্থের সমর্থকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন পোস্টার লাগানো ও গণসংযোগে। তরুণ ভোটারদের আকৃষ্ট করতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সক্রিয় তারা। পার্থের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ‘ঢাকা-১৭ আধুনিক নগরায়নের প্রতীক। এখানকার উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও নাগরিক সুবিধার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে জনগণের পাশে থেকে কাজ করতে চাই।’

অন্যদিকে বিএনপি থেকে দুই সম্ভাব্য প্রার্থী কামাল জামান মোল্লা ও মাহমুদুল আলম সোহাগও নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন মাঠে। কামাল জামান মোল্লা ব্যক্তিগত যোগাযোগের পাশাপাশি দরিদ্র পরিবারে সহায়তা প্রদান, শিক্ষার্থীদের নিয়ে ছোট আকারের বৈঠক এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করছেন।
অপরদিকে মাহমুদুল আলম সোহাগ তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় মুখ। তিনি বলছেন, ‘ঢাকা-১৭ শুধু উচ্চবিত্তের এলাকা নয়, এখানে শ্রমজীবী মানুষের জীবনও আছে। সবার অধিকার নিশ্চিত করাই হবে আমার অঙ্গীকার।’

এদিকে জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত প্রার্থী এসএম খালিদুজ্জামানও পিছিয়ে নেই। ক্যান্টনমেন্ট ও ভাষানটেক এলাকায় তার সমর্থকরা লিফলেট বিতরণ, মসজিদভিত্তিক প্রচারণা ও পারিবারিক বৈঠকের মাধ্যমে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণার আগেই এমন সরব প্রচারণা ইঙ্গিত দিচ্ছে, এই আসনে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। গুলশান ও বনানীর বিলাসবহুল আবাসিক এলাকা থেকে শুরু করে ভাষানটেকের মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত অঞ্চল পর্যন্ত নির্বাচনী কর্মতৎপরতা ছড়িয়ে পড়েছে সমানভাবে।

স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো দলীয় কর্মী আমাদের বাসায় এসে প্রার্থীর পরিচিতি দিচ্ছেন। নির্বাচনী হাওয়া এখনই টের পাওয়া যাচ্ছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, রাজধানীর এই আসনটি সব সময়ই মিডিয়া ও জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। একদিকে উচ্চবিত্ত, প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও প্রবাসী ভোটারের উপস্থিতি; অন্যদিকে বিশালসংখ্যক তরুণ ভোটার-সব মিলিয়ে এই আসনে ভোটের সমীকরণ সব সময়ই আলাদা।

ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের এখনো সময় আছে, কিন্তু রাজধানীর এই অভিজাত অঞ্চলে নির্বাচনের উত্তাপ আগেভাগেই ছড়িয়ে পড়েছে। গুলশান ১ ও ২-এর রাস্তায় রাস্তায় দেখা মিলছে পোস্টার, ব্যানার আর হাস্যোজ্জ্বল মুখের প্রার্থীদের। সময় যত এগোবে, ততই বাড়বে প্রচারণার তীব্রতা-এমনটাই মনে করছেন স্থানীয়রা।
জেএস/
এডমিন 













