যুক্তরাষ্ট্রে শত শত ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় যাত্রীদের চরম ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। সরকারি কার্যক্রম স্থবির বা শাটডাউনের জেরে প্লেন চলাচল নিয়ন্ত্রণকারী কর্মীদের (এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার) সংকট ও ফেডারেল নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বেতন বন্ধ থাকায় অসংখ্য ফ্লাইট বাতিল বা দেরিতে ছাড়ার ঘটনা ঘটছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, গত শুক্রবার থেকে রোববার পর্যন্ত ১ হাজার ৭০০র বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) নিরাপত্তা বজায় রাখার স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্রের ৪০টি ব্যস্ততম বিমানবন্দরে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চার শতাংশ কমানোর নির্দেশ দিয়েছে।
তবে এই সিদ্ধান্তেও যাত্রীদের দুর্ভোগ কমছে না। সময়মতো ফ্লাইট না ছাড়ায় বিমানবন্দরে আটকে পড়ছেন অনেকে। ওহাইওর কলম্বাসের মিশেল কাথবার্ট বলেন, ‘আমি চাই না আমাকে বিমানবন্দরের বেঞ্চে রাত কাটাতে হোক।’
আরও পড়ুন>>
যুক্তরাষ্ট্রে ১৫ বার শাটডাউন, ট্রাম্পের আমলেই ২ বার
যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউন: বিমানবন্দরগুলোতে ১০ শতাংশ ফ্লাইট কমানোর নির্দেশ
যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউন: ছাঁটাই-অবৈতনিক ছুটিতে বাধ্য হাজারও কর্মী
এফএএ জানিয়েছে, শাটডাউন চলতে থাকলে আগামী সপ্তাহে ফ্লাইট কমানোর পরিমাণ ধাপে ধাপে বাড়িয়ে শুক্রবারের মধ্যে ১০ শতাংশে নেওয়া হবে। তবে শাটডাউন শেষ হলেও এই কাটছাঁট পুরোপুরি উঠবে না, কারণ ফ্লাইট বাতিলের সিদ্ধান্ত আগেই নিতে হয়।
মার্কিন পরিবহনমন্ত্রী শন ডাফি বলেন, যদি কংগ্রেসের অচলাবস্থা দ্রুত না কাটে, তাহলে ফ্লাইট কমানোর হার ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। তিনি আরও সতর্ক করে বলেছেন, শাটডাউন শেষ হলেও কর্মীদের সবাই সঙ্গে সঙ্গে কাজে ফিরবেন না।
গত শুক্রবারই যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে এয়ার ট্রাফিক ব্যবস্থাগুলো ৩২ বার কর্মী সংকটে পড়েছে বলে এফএএর অপারেশন প্ল্যানে উল্লেখ করা হয়।
যেসব এয়ারলাইনে ফ্লাইট বাতিল বেশি
আমেরিকান এয়ারলাইনস শনিবারের সূচি থেকে ২২০টি ফ্লাইট বাতিল করেছে। ইউনাইটেড এয়ারলাইনস শনিবার ১৬৮, রোববার ১৫৮, সোমবার ১৯০ এবং মঙ্গলবার ২৬৯টি ফ্লাইট বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে।
সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইনসও শনিবার ১০০ ও রোববার ১৫০টি ফ্লাইট বাতিল করবে বলে জানিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, এরইমধ্যে তারা ৩৪টি বিমানবন্দরে সময়সূচি ৪ শতাংশ কমিয়েছে।
সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত বিমানবন্দর
ওয়াশিংটনের রিগান ন্যাশনাল বিমানবন্দর শুক্রবার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে ৮০টির বেশি ফ্লাইট বাতিল এবং প্রায় অর্ধেক ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে। শিকাগো ও’হেয়ার, আটলান্টার হার্টসফিল্ড-জ্যাকসন, ডেনভার ও ডালাস-ফোর্ট ওর্থ বিমানবন্দরেও একই চিত্র দেখা গেছে।
পূর্ব ও পশ্চিম উপকূলের নিউইয়র্কের জন এফ. কেনেডি, লা গার্ডিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেস, সান ফ্রান্সিসকো ও নিউয়ার্ক বিমানবন্দরেও শত শত যাত্রী আটকা পড়েছেন।
আন্তর্জাতিকভাবে আমস্টারডাম, টরন্টো ও টোকিওর হানেদা বিমানবন্দরেও ফ্লাইট বাতিলের সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি হয়েছে।
কেএএ/
এডমিন 







