১০:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফরিদপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে পাল্টাপাল্টি মামলা

  • এডমিন
  • আপডেট সময়ঃ ১২:০১:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৫
  • 5

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি দুটি মামলা হয়েছে। পৃথক দুটি মামলায় ১২৬ জনের নাম উল্লেখসহ ৮৭৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে এসব মামলায় কোনো আসামি গ্রেফতার নেই বলে জানা গেছে।

রোববার (৯ নভেম্বর) বিকেলে জাগো নিউজকে মামলার বিষয় নিশ্চিত করেছেন বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহামুদুল হাসান। এর আগে শনিবার দিবাগত রাতে মামলা দুটি রুজু করা হয়।

পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, একটি মামলার বাদী হয়েছেন মজিবুর রহমান। তিনি উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন এবং উপজেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির সহ-সভাপতি শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুর সমর্থক। তার দায়ের করা মামলায় ১৮৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০০-২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার নাসিরুল ইসলামকে।

অপর মামলার বাদী উপজেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম। তিনি খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সমর্থক। তার মামলায় ৩৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩০০-৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় প্রধান আসামি উপজেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির সহ-সভাপতি শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুকে (৬০) এবং দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনএমের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাহ মো. আবু জাফরকে(৮০)।

এছাড়া তিন নম্বরে রয়েছে সালথা উপজেলার খারদিয়া গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু (৭৫)। তাকে হুকুমদাতা হিসেবে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, আসামিদের মধ্যে খন্দকার নাসিরুল ইসলাম ও শামসুদ্দীন মিয়া ঝুনু ফরিদপুর-১ (আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী ও মধুখালী) আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তবে দলের প্রাথমিক তালিকায় দুজনের কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। এ দুই গ্রুপের মধ্যে গত এক বছর ধরে রাজনৈতিক আধিপত্য চলে আসছিল। এর জের ধরে গত শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিকালে উপজেলা সদরের ওয়াপদা মোড় এলাকায় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে কর্মসূচি থেকে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষকারীদের হাতে দেশীয় অস্ত্র চাইনিজ কুড়াল, রামদা সহ দেখা যায়। এ সংঘর্ষে শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু সমর্থিত উপজেলা বিএনপির একাংশের কার্যালয়ে ভাঙচুরসহ ১৫টি মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

এছাড়া আশপাশের অন্তত ১০টি দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অন্ততপক্ষে অর্ধশত কর্মী সমর্থকেরা আহত হন।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে একটি মামলার বাদী মজিবুর রহমানের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

ফরিদপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে পাল্টাপাল্টি মামলা

আরেকটি মামলার বাদী সিরাজুল ইসলাম বলেন,৭ নভেম্বর আমাদের বিকেলের কর্মসূচির আয়োজন করা হয় এবং ঝুনু মিয়ার কর্মসূচি ছিল সকালে। কিন্তু আমাদের কর্মসূচিকে বাঁধাগ্রস্ত করার জন্য উনারা বিকেলে আয়োজন করে পরিকল্পিতভাবে আমাদের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা করে। যার পেছনে উস্কানি দিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মো. আবু জাফর ও আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু। এ বাচ্চু সাহেবের ছেলের নেতৃত্বে খারদিয়া গ্রাম থেকে অস্ত্র নিয়ে লোকজন এসেছিল। এছাড়া তার দায়েরকৃত মামলা ভিন্ন দৃষ্টিতে নেয়ার জন্য পাল্টা মামলা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

এ বিষয়ে বোয়ালমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহামুদুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, শনিবার পৃথক দুটি অভিযোগ করা হয়। তার প্রেক্ষিতে রাতে পেনালকোড ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে মামলা দুটি রুজু হয়েছে। এখনও কোনো আসামিকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা সদরের ওয়াবদা মোড় এলাকায় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচিতে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। এসময় উপজেলা বিএনপির একাংশের কার্যালয়ে ভাঙচুরসহ আগুন দেওয়া হয়। এছাড়া ১৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। প্রায় এক ঘণ্টা সংঘর্ষের পর সেনাবাহিনী ও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

এনকে বি নয়ন/আরএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।

ট্যাগঃ

ফরিদপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে পাল্টাপাল্টি মামলা

ফরিদপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে পাল্টাপাল্টি মামলা

আপডেট সময়ঃ ১২:০১:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৫

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি দুটি মামলা হয়েছে। পৃথক দুটি মামলায় ১২৬ জনের নাম উল্লেখসহ ৮৭৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে এসব মামলায় কোনো আসামি গ্রেফতার নেই বলে জানা গেছে।

রোববার (৯ নভেম্বর) বিকেলে জাগো নিউজকে মামলার বিষয় নিশ্চিত করেছেন বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহামুদুল হাসান। এর আগে শনিবার দিবাগত রাতে মামলা দুটি রুজু করা হয়।

পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, একটি মামলার বাদী হয়েছেন মজিবুর রহমান। তিনি উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন এবং উপজেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির সহ-সভাপতি শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুর সমর্থক। তার দায়ের করা মামলায় ১৮৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০০-২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার নাসিরুল ইসলামকে।

অপর মামলার বাদী উপজেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম। তিনি খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সমর্থক। তার মামলায় ৩৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩০০-৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় প্রধান আসামি উপজেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির সহ-সভাপতি শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুকে (৬০) এবং দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনএমের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাহ মো. আবু জাফরকে(৮০)।

এছাড়া তিন নম্বরে রয়েছে সালথা উপজেলার খারদিয়া গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু (৭৫)। তাকে হুকুমদাতা হিসেবে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, আসামিদের মধ্যে খন্দকার নাসিরুল ইসলাম ও শামসুদ্দীন মিয়া ঝুনু ফরিদপুর-১ (আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী ও মধুখালী) আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তবে দলের প্রাথমিক তালিকায় দুজনের কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। এ দুই গ্রুপের মধ্যে গত এক বছর ধরে রাজনৈতিক আধিপত্য চলে আসছিল। এর জের ধরে গত শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিকালে উপজেলা সদরের ওয়াপদা মোড় এলাকায় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে কর্মসূচি থেকে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষকারীদের হাতে দেশীয় অস্ত্র চাইনিজ কুড়াল, রামদা সহ দেখা যায়। এ সংঘর্ষে শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু সমর্থিত উপজেলা বিএনপির একাংশের কার্যালয়ে ভাঙচুরসহ ১৫টি মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

এছাড়া আশপাশের অন্তত ১০টি দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অন্ততপক্ষে অর্ধশত কর্মী সমর্থকেরা আহত হন।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে একটি মামলার বাদী মজিবুর রহমানের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

ফরিদপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে পাল্টাপাল্টি মামলা

আরেকটি মামলার বাদী সিরাজুল ইসলাম বলেন,৭ নভেম্বর আমাদের বিকেলের কর্মসূচির আয়োজন করা হয় এবং ঝুনু মিয়ার কর্মসূচি ছিল সকালে। কিন্তু আমাদের কর্মসূচিকে বাঁধাগ্রস্ত করার জন্য উনারা বিকেলে আয়োজন করে পরিকল্পিতভাবে আমাদের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা করে। যার পেছনে উস্কানি দিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মো. আবু জাফর ও আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু। এ বাচ্চু সাহেবের ছেলের নেতৃত্বে খারদিয়া গ্রাম থেকে অস্ত্র নিয়ে লোকজন এসেছিল। এছাড়া তার দায়েরকৃত মামলা ভিন্ন দৃষ্টিতে নেয়ার জন্য পাল্টা মামলা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

এ বিষয়ে বোয়ালমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহামুদুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, শনিবার পৃথক দুটি অভিযোগ করা হয়। তার প্রেক্ষিতে রাতে পেনালকোড ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে মামলা দুটি রুজু হয়েছে। এখনও কোনো আসামিকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা সদরের ওয়াবদা মোড় এলাকায় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচিতে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। এসময় উপজেলা বিএনপির একাংশের কার্যালয়ে ভাঙচুরসহ আগুন দেওয়া হয়। এছাড়া ১৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। প্রায় এক ঘণ্টা সংঘর্ষের পর সেনাবাহিনী ও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

এনকে বি নয়ন/আরএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।