চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় এবার শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সন্তানদের পোষ্য কোটা থাকছে না। এছাড়াও কমেছে ভর্তির আবেদনের যোগ্যতা। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে এ পরীক্ষার আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হবে। চলবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী এবং কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল শাহীন খান জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রোববার (৯ নভেম্বর) সকাল ১০টায় ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির দ্বিতীয় সভা উপাচার্যের দপ্তরের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আবেদনের যোগ্যতা ও আসন কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত, তারিখ পরিবর্তনের পাশাপাশি পোষ্য কোটা বাতিলেরও সিদ্ধান্ত হয়।
এর আগে গত ১২ অক্টোবর ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির প্রথম সভার পর পরীক্ষার সম্ভাব্য সূচি ঘোষণা করেছিল কর্তৃপক্ষ। তবে দ্বিতীয় সভায় এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়। নতুন সিদ্ধান্তে আগামী ২ জানুয়ারি বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজ ও প্রকৌশল অনুষদভুক্ত ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে দিয়ে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে। এছাড়া সমাজবিজ্ঞান ও আইন অনুষদভুক্ত ‘ডি’ ইউনিটের পরীক্ষা হবে ৩ জানুয়ারি, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা হবে ৯ জানুয়ারি আর কলা ও মানববিদ্যা অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা হবে ১০ জানুয়ারি। অন্যদিকে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগ ভুক্ত ‘ডি-১ উপ–ইউনিটের’ পরীক্ষা হবে ৫ জানুয়ারি, ‘বি-১ উপ–ইউনিটের’ পরীক্ষা হবে ৭ জানুয়ারি এবং ‘বি-২ উপ–ইউনিটের’ পরীক্ষা হবে ৮ জানুয়ারি।
এবারের ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনের যোগ্যতার জিপিএ গত বছরের তুলনায় সব ইউনিটে শূন্য দশমিক ৫ কমছে। ‘এ’ ইউনিটে এবার আবেদনের ন্যূনতম যোগ্যতা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক (চতুর্থ বিষয়সহ) মিলিয়ে মোট জিপিএ ৭.৭৫ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই ইউনিটে আবেদন করতে আলাদাভাবে মাধ্যমিকে ন্যূনতম ৪ ও উচ্চমাধ্যমিকে জিপিএ ৩.২৫ থাকতে হবে। কলা ও মানববিদ্যা অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটে আবেদন করতে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে চতুর্থ বিষয়সহ মোট জিপিএ ৭ থাকতে হবে। এ ছাড়া বিজ্ঞান ও ব্যবসায় বিভাগের শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম জিপিএ লাগবে ৭.৫০।
অন্যদিকে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিটে আবেদনের ন্যূনতম যোগ্যতা থাকতে হবে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে (চতুর্থ বিষয়সহ) মোট জিপিএ ৭.৫০। এখানে বিভাগ রয়েছে ছয়টি। সব গ্রুপের শিক্ষার্থীরাই ‘ডি’ ইউনিটে পরীক্ষা দিতে পারবেন। এই ইউনিটে আবেদনের যোগ্যতা হিসেবে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে (চতুর্থ বিষয়সহ) মোট জিপিএ–৭ থাকতে হবে।
আসন কমানো ও আবেদনের যোগ্যতার বিষয়ে জানতে চাইলে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী জাগো নিউজকে বলেন, এ বছর ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ও আসন সংখ্যা কমানো হয়েছে। এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফলাফল খারাপ হওয়ার কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে সবাই আবেদন করতে পারে। প্রতিটা বিভাগে ১০০ আসনের বেশি থাকবে না ধীরে ধীরে এটা ৮০ টি সিটে নেওয়া হবে।
এবার ভর্তি পরীক্ষায় ৯ ধরনের কোটা রাখা হয়েছে। তবে ‘ওয়ার্ড’ কোটা বাতিল করা হয়েছে। এটি পোষ্য কোটা নামে পরিচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সন্তানেরা এই কোটা পান। বহাল থাকা ৯টি কোটা হলো মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান, বিদেশি, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, অনগ্রসর ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, অ-উপজাতি কোটা যা পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বাঙালি, শারীরিক প্রতিবন্ধী, বিকেএসপির খেলোয়াড়, পেশাদার খেলোয়াড় ও দলিত জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল শাহীন খান জাগো নিউজকে বলেন, এ বছরে ইন্টারমিডিয়েটে শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট খারাপ হওয়ার কারণে মোট জিপিএ’র পয়েন্ট ০.৫ কমানো হয়েছে। পাশাপাশি পোষ্য কোটাও বাতিল করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার এ সভায় সভাপতিত্ব করেন। এতে সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও ভর্তি কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সোহেল রানা/এমএন/জেআইএম
এডমিন 















