১০:৩০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘শত্রুতা’ ভুলে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় তৃণমূল

  • এডমিন
  • আপডেট সময়ঃ ০৫:১৫:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • 14

নেপালের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি দেখা দেওয়ায় কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস সরকার।

পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি জেলার চিকেন’স নেক এলাকায় নেপালের সঙ্গে ১০০ কিলোমিটার স্থল সীমান্ত আছে ভারতের।

গতকাল সোমবার পশ্চিমবঙ্গ সফরে গিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কলকাতায় পৌঁছানোর পর তার সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মমতা বলেন, “এটা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ইস্যু এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলোর ব্যাপারে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের কোনো দ্বন্দ্ব নেই। জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত ইস্যুগুলোতে আমরা এক।”

উল্লেখ্য, সরকারের দুর্নীতি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ৯ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রজন্ম (জেন জি) বিক্ষোভ শুরু করেন নেপালে। তাদের মাত্র দু’দিনের বিক্ষোভে ১১ সেপ্টেম্বর পতন ঘটে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির নেতৃত্বাধীন সরকারের এবং পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নেয় সেনাবাহিনী। পরের দিন সাবেক বিচারপতি সুশীলা কার্কি দেশটির অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হন।

তবে দেশটির সার্বিক পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। ফলে শিলিগুড়ি সীমান্ত দিয়ে ব্যাপকমাত্রায় অনুপ্রবেশের ঝুঁকি আছে। তাছাড়া ভারতে নকশালপন্থী মাওবাদী রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ। অন্যদিকে নেপালে কয়েকটি নকাশালপন্থি মাওবাদী রাজনৈতিক দল রয়েছে এবং সেগুলোর বেশ প্রভাবশালী। সাম্প্রতিক অভ্যুত্থানেও তাদের বেশ প্রভাব ছিল।

ফলে অনুপ্রবেশের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ নেপাল সীমান্তে নকশালপন্থি রাজনীতি ছড়িয়ে পড়ারও ঝুঁকি রয়েছে।

গতকাল মোদির সঙ্গে মমতার বৈঠকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। প্রথমটি হলো এখন থেকে শিলিগুড়ির ভারত-নেপাল সীমান্ত পাহারায় ভারতের নিয়মিত সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোসের পাশাপাশি থাকবে আধাসামরিক বাহিনী সশস্ত্র সীমা বল বা এসএসবি। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের মধ্যে ব্যাপকমাত্রায় গোয়েন্দা তথ্যের আদান প্রদানের ব্যাপারেও একমত হয়েছেন তারা।

প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতিতে তৃণমূল কংগ্রেসের সবচেয়ে বড় ‘শত্রু’ বিজেপি। বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্তবর্তী এই রাজ্যটিতে দীর্ঘদিন ধরেই নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে চাইছে বিজেপি; তবে সেই পথে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে তৃণমূল। ভারতের বিজেপিশাসিত কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে তৃণমূলের শত্রুতার প্রধান কারণ এটিই।

ট্যাগঃ

‘শত্রুতা’ ভুলে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় তৃণমূল

আপডেট সময়ঃ ০৫:১৫:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নেপালের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি দেখা দেওয়ায় কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস সরকার।

পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি জেলার চিকেন’স নেক এলাকায় নেপালের সঙ্গে ১০০ কিলোমিটার স্থল সীমান্ত আছে ভারতের।

গতকাল সোমবার পশ্চিমবঙ্গ সফরে গিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কলকাতায় পৌঁছানোর পর তার সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মমতা বলেন, “এটা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ইস্যু এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলোর ব্যাপারে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের কোনো দ্বন্দ্ব নেই। জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত ইস্যুগুলোতে আমরা এক।”

উল্লেখ্য, সরকারের দুর্নীতি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ৯ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রজন্ম (জেন জি) বিক্ষোভ শুরু করেন নেপালে। তাদের মাত্র দু’দিনের বিক্ষোভে ১১ সেপ্টেম্বর পতন ঘটে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির নেতৃত্বাধীন সরকারের এবং পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নেয় সেনাবাহিনী। পরের দিন সাবেক বিচারপতি সুশীলা কার্কি দেশটির অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হন।

তবে দেশটির সার্বিক পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। ফলে শিলিগুড়ি সীমান্ত দিয়ে ব্যাপকমাত্রায় অনুপ্রবেশের ঝুঁকি আছে। তাছাড়া ভারতে নকশালপন্থী মাওবাদী রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ। অন্যদিকে নেপালে কয়েকটি নকাশালপন্থি মাওবাদী রাজনৈতিক দল রয়েছে এবং সেগুলোর বেশ প্রভাবশালী। সাম্প্রতিক অভ্যুত্থানেও তাদের বেশ প্রভাব ছিল।

ফলে অনুপ্রবেশের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ নেপাল সীমান্তে নকশালপন্থি রাজনীতি ছড়িয়ে পড়ারও ঝুঁকি রয়েছে।

গতকাল মোদির সঙ্গে মমতার বৈঠকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। প্রথমটি হলো এখন থেকে শিলিগুড়ির ভারত-নেপাল সীমান্ত পাহারায় ভারতের নিয়মিত সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোসের পাশাপাশি থাকবে আধাসামরিক বাহিনী সশস্ত্র সীমা বল বা এসএসবি। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের মধ্যে ব্যাপকমাত্রায় গোয়েন্দা তথ্যের আদান প্রদানের ব্যাপারেও একমত হয়েছেন তারা।

প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতিতে তৃণমূল কংগ্রেসের সবচেয়ে বড় ‘শত্রু’ বিজেপি। বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্তবর্তী এই রাজ্যটিতে দীর্ঘদিন ধরেই নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে চাইছে বিজেপি; তবে সেই পথে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে তৃণমূল। ভারতের বিজেপিশাসিত কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে তৃণমূলের শত্রুতার প্রধান কারণ এটিই।