০১:০৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শেরপুর সদর হাসপাতালে রোগীকে ‘আপু’ বলায় রোগীর স্বজনকে কক্ষ থেকে বের করে দিলেন চিকিৎসক

  • এডমিন
  • আপডেট সময়ঃ ১১:২১:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • 17

শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মারজিয়া খাতুনকে এক রোগীর অভিভাবক ‘আপু’ ডাকায় তিনি উত্তেজিত হয়ে ওই রোগীর অভিভাবকসহ রোগীকে তাঁর কক্ষ থেকে বের করে দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ২৫০ শয্যার জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসকের কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।

অভিযোগকারী রোগীর অভিভাবক শহরের নয়নী বাজার মহল্লার কাজী মাসুম জানান, বেলা দুইটার দিকে তাঁর ছোট মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস মামিয়ার প্রচন্ড পেট ব্যথা নিয়ে জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসেন। এ সময় কর্তব্যরত ডাক্তার অনন্যা তাঁকে জরুরি কিছু ওষুধ লিখে দেন। ওষুধগুলো হাসপাতালে না পেয়ে তিনি হাসপাতালের বাইরে বিভিন্ন দোকানে খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে একটি ওষুধ না পেয়ে প্রায় আধা ঘণ্টা পর আবারও জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসারের কক্ষে প্রবেশ করে দেখেন আগের ডাক্তার অনন্যা ডিউটি শেষ করে চলে যাওয়ায় পরবর্তী ডিউটিতে এসেছেন ডাক্তার মারজিয়া খাতুন। এ সময় রোগীর অভিভাবক বিনয়ের সঙ্গে ডাক্তার মারজিয়াকে ‘আপু’ বলে সম্বোধন করে বলেন, আগের ডাক্তার যে ওষুধটি দিয়েছিলেন সে ওষুধটি পাওয়া যাচ্ছে না, অন্য কোনো ওষুধ দেওয়া যায় কিনা। এ সময় ডাক্তার মারজিয়া ‘আপু’ শব্দটি শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং বলেন, ‘আপু বলছেন কেন, আমি মেডিকেল অফিসার। যান, বের হয়ে যান।’ হতভম্ব ওই রোগীর অভিভাবক বলেন, ‘আপু’ ডেকে কী দোষ করেছি। কিন্তু এতেও আরও রাগান্বিত হয়ে কয়েক দফা তাঁকে ধমক দিয়ে তাঁর রুম থেকে বের করে দেন।

ঘটনাটি জানার পর বেলা তিনটার দিকে শেরপুরের কয়েকজন সংবাদকর্মী সরাসরি ওই ডাক্তারের কক্ষে যান বিস্তারিত জানার জন্য। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ছাড়া কারও সঙ্গে কোনো কথা বলবো না।’

পরে এ বিষয়ে হাসপাতালের আরএমও ডাক্তার তাহেরাতুল আশরাফির সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। হয়তো ভুলক্রমে তিনি এ কথা বলেছেন। তবে আমাদেরকে অফিসিয়ালি অভিযোগ বা সরাসরি কথা বললে শনিবার আসতে হবে। আর মিউচ্যুয়াল করতে চাইলে তাঁর সাথে সরাসরি কথা বলতে পারেন।’

এদিকে, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তারদের এমন আচরণে উপস্থিত অনেক রোগী এবং তাঁদের অভিভাবকরা একই অভিযোগ তোলেন ওই ডাক্তারের বিরুদ্ধে। তাঁরা বলেন, শুধু এই মারজিয়াই নয়, হাসপাতালে কর্তব্যরত যত ডাক্তার আছেন তাঁদের মধ্যে প্রায় সবাই এমন আচরণ করেন রোগী এবং তাঁর অভিভাবকদের সাথে।

ট্যাগঃ

শেরপুর সদর হাসপাতালে রোগীকে ‘আপু’ বলায় রোগীর স্বজনকে কক্ষ থেকে বের করে দিলেন চিকিৎসক

আপডেট সময়ঃ ১১:২১:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মারজিয়া খাতুনকে এক রোগীর অভিভাবক ‘আপু’ ডাকায় তিনি উত্তেজিত হয়ে ওই রোগীর অভিভাবকসহ রোগীকে তাঁর কক্ষ থেকে বের করে দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ২৫০ শয্যার জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসকের কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।

অভিযোগকারী রোগীর অভিভাবক শহরের নয়নী বাজার মহল্লার কাজী মাসুম জানান, বেলা দুইটার দিকে তাঁর ছোট মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস মামিয়ার প্রচন্ড পেট ব্যথা নিয়ে জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসেন। এ সময় কর্তব্যরত ডাক্তার অনন্যা তাঁকে জরুরি কিছু ওষুধ লিখে দেন। ওষুধগুলো হাসপাতালে না পেয়ে তিনি হাসপাতালের বাইরে বিভিন্ন দোকানে খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে একটি ওষুধ না পেয়ে প্রায় আধা ঘণ্টা পর আবারও জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসারের কক্ষে প্রবেশ করে দেখেন আগের ডাক্তার অনন্যা ডিউটি শেষ করে চলে যাওয়ায় পরবর্তী ডিউটিতে এসেছেন ডাক্তার মারজিয়া খাতুন। এ সময় রোগীর অভিভাবক বিনয়ের সঙ্গে ডাক্তার মারজিয়াকে ‘আপু’ বলে সম্বোধন করে বলেন, আগের ডাক্তার যে ওষুধটি দিয়েছিলেন সে ওষুধটি পাওয়া যাচ্ছে না, অন্য কোনো ওষুধ দেওয়া যায় কিনা। এ সময় ডাক্তার মারজিয়া ‘আপু’ শব্দটি শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং বলেন, ‘আপু বলছেন কেন, আমি মেডিকেল অফিসার। যান, বের হয়ে যান।’ হতভম্ব ওই রোগীর অভিভাবক বলেন, ‘আপু’ ডেকে কী দোষ করেছি। কিন্তু এতেও আরও রাগান্বিত হয়ে কয়েক দফা তাঁকে ধমক দিয়ে তাঁর রুম থেকে বের করে দেন।

ঘটনাটি জানার পর বেলা তিনটার দিকে শেরপুরের কয়েকজন সংবাদকর্মী সরাসরি ওই ডাক্তারের কক্ষে যান বিস্তারিত জানার জন্য। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ছাড়া কারও সঙ্গে কোনো কথা বলবো না।’

পরে এ বিষয়ে হাসপাতালের আরএমও ডাক্তার তাহেরাতুল আশরাফির সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। হয়তো ভুলক্রমে তিনি এ কথা বলেছেন। তবে আমাদেরকে অফিসিয়ালি অভিযোগ বা সরাসরি কথা বললে শনিবার আসতে হবে। আর মিউচ্যুয়াল করতে চাইলে তাঁর সাথে সরাসরি কথা বলতে পারেন।’

এদিকে, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তারদের এমন আচরণে উপস্থিত অনেক রোগী এবং তাঁদের অভিভাবকরা একই অভিযোগ তোলেন ওই ডাক্তারের বিরুদ্ধে। তাঁরা বলেন, শুধু এই মারজিয়াই নয়, হাসপাতালে কর্তব্যরত যত ডাক্তার আছেন তাঁদের মধ্যে প্রায় সবাই এমন আচরণ করেন রোগী এবং তাঁর অভিভাবকদের সাথে।